বিশ্বনাথ মন্দির (আসাম)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিশ্বনাথ ঘাটে থাকা মূল 'বিশ্বনাথ মন্দির'

বিশ্বনাথ মন্দির শোণিতপুর জেলার বিশ্বানাথ ঘাটে অবস্থিত একটি মন্দির। সম্ভবত ৬৫০-৯৯০ খ্রিস্টাব্দে শালস্তম্ভ বংশের রাজারা প্রথমে বিশ্বনাথের নামে শৈলমন্দির স্থাপন করেছিলেন। ১৬১৫ সালে মোগল সেনাপতি সত্রাজিত এই অঞ্চল আক্রমণ করে মন্দিরের সোনা রূপার আসলার সাথে দুইজন (কোনো বুরঞ্জীর মতে তিনজন) দেবদাসীও ধরে নিয়ে যান, তখন থেকেই স্বর্গদেউদের বিশেষ দৃষ্টি বিশ্বনাথের প্রতি আকর্ষণ হয়। ১৬১৫ সাল থেকে ১৬২০ সালের মধ্যে পুরানো পাথরের মন্দিরটি ভেঙে পড়ায় ১৬২১ সালে স্বগদেউ প্রতাপ সিংহ মোমাই তামুলী বরবরুয়ার দ্বারা বিশ্বনাথ মন্দির নির্মাণ করান। আজ ব্রহ্মপুত্রের গর্ভের যেস্থানে প্রাচীন মন্দিরের ভগ্নাবশেষ দেখা যায়, তখন সেই স্থান যথেষ্ট উঁচু ও শিলাময় ছিল এবং সেখানে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল। রাজেশ্বর সিংহের সময়ে হওয়া প্রবল বন্যায় পুরানো বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এর ফলে প্রাচীন পীঠস্থান ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে ডুবে যায় এবং সেই স্থানে নতুন মন্দির নির্মাণ অসম্ভব হওয়ায় সেই স্থান থেকে ২০০মিটার পশ্চিমে বর্তমান স্থানে লক্ষ্মী সিংহ স্বর্গদেব ১৭৭৪ সালে ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির থেকে অনেক শিলা-ইট আনিয়ে নতুনভাবে সামান্য রূপে বিশ্বনাথ মন্দির তৈরি করে দেন।[১]

'বিশ্বনাথ মঠ' নামে পরিচিত বর্তমান ভেঙে যাওয়া পাথর ইট দিয়ে তৈরি ১০ মিটার উঁচু এই মন্দিরটি চারপিঠি। মন্দিরটি ছোট হলেও এসময় এটি বিবিধ চিত্রে সাজানো ছিল। উক্ত মন্দিরে থাকা ৬৩ সে:মি: উঁচু দেবতার মূর্তি এবং ১১ সে:মি: উঁচু পঞ্চানন দশভুজা শিবের মূর্তি দুটি বর্তমান তেজপুর জেলা সংগ্রহালয়ে রাখা হয়েছে।

আগে বিশ্বনাথ দেবালয় আসামের কেবল মহাপীঠই ছিল না, এটি আসামের নাটঘর হিসাবেও প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। এখানে চর্চা করা 'নট-নর্তকী' এবং ওজাপালি নৃত্য বর্তমান বিলুপ্ত। শিবরাত্রি এবং গোসাঁই ফুরোয়া উৎসবের বর্তমানেও চল আছে।[১]

সাথে দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ডঃ নিত্যানন্দ গগৈ, তুলসী ফুকন এবং শিবনাথ বরঠাকুর; বিশ্বনাথ-লহরি (স্মৃতিগ্রন্থ:বিশ্বনাথ উৎসব), প্রকাশ:২০০৬