অণুজীববিজ্ঞান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
BellayetBot (আলোচনা | অবদান)
Typo fixing, replaced: গন্য → গণ্য, দরুণ → দরুন, ধরণ → ধরন (2) using AWB
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে, কোনো সমস্যা?
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
'''অণুজীব বিজ্ঞান''' (Microbiology)হল জীববিজ্ঞান এর একটি শাখা যেখানে অণুজীব নিয়ে আলোচনা করা হয়।
'''অণুজীব বিজ্ঞান''' (Microbiology)হল জীববিজ্ঞান এর একটি শাখা যেখানে অণুজীব নিয়ে আলোচনা করা হয়।


==অণুজীব==
== অণুজীব ==
[[চিত্র:Bacteria shape.png|right|thumb|বিভিন্ন ধরণের ব্যাক্টেরিয়া]] [[ব্যাক্টেরিয়া]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Bacteria (Bacteria)], [[ভাইরাস]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Virus (Virus)], [[ছত্রাক]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Fungi (Fungi)], [[শৈবাল]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Algae (Algae)], [[প্রটোজোয়া]][http://en.wikipedia.org/wiki/Protozoa (Protozoa)], [[আরকিয়া]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Archaea (Archaea)] ইত্যাদি এককোষী জীব অণুজীবের অন্তর্গত (যদিও বহুকোষী [[ছত্রাক]] ও [[শৈবাল]] পাওয়া যায়)।
[[চিত্র:Bacteria shape.png|right|thumb|বিভিন্ন ধরণের ব্যাক্টেরিয়া]] [[ব্যাক্টেরিয়া]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Bacteria (Bacteria)], [[ভাইরাস]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Virus (Virus)], [[ছত্রাক]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Fungi (Fungi)], [[শৈবাল]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Algae (Algae)], [[প্রটোজোয়া]][http://en.wikipedia.org/wiki/Protozoa (Protozoa)], [[আরকিয়া]] [http://en.wikipedia.org/wiki/Archaea (Archaea)] ইত্যাদি এককোষী জীব অণুজীবের অন্তর্গত (যদিও বহুকোষী [[ছত্রাক]] ও [[শৈবাল]] পাওয়া যায়)।


==অণুজীব বিজ্ঞানী==
== অণুজীব বিজ্ঞানী ==
১৬৭৬ সালে ব্রিটিশ সৌখিন বিজ্ঞানী [[অ্যান্থনি ভন লিউয়েনহুক]] ([[:en:Leeuwenhoek|Leeuwenhoek]]) সর্ব প্রথম অণুজীব আবিষ্কার করেণ। যে সকল বিজ্ঞানী অণুজীব বিজ্ঞান কে আধুনিক বিজ্ঞানের এক সম্ভাবনীয় শাখা হিসেবে গড়ে তুলেছেন তাদের মধ্যে [[লুই পাস্তুর]] ([[:en:Louis Pasteur|Louis Pasteur]]), [[রবার্ট কখ]] ([[:en:Robert_Koch|Robert Koch]]), [[অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং]] ([[:en:Alexander Fleming|Alexander Fleming]]), সারগেই উইনুগার্ডস্কি ([[:en:Sergei_winogradsky|Sergei winogradsky]]), মারটিনাস বেইজারিঙ্ক (Martinus_Beijerinck) এর অবদান অন্যতম।
১৬৭৬ সালে ব্রিটিশ সৌখিন বিজ্ঞানী [[অ্যান্থনি ভন লিউয়েনহুক]] ([[:en:Leeuwenhoek|Leeuwenhoek]]) সর্ব প্রথম অণুজীব আবিষ্কার করেণ। যে সকল বিজ্ঞানী অণুজীব বিজ্ঞান কে আধুনিক বিজ্ঞানের এক সম্ভাবনীয় শাখা হিসেবে গড়ে তুলেছেন তাদের মধ্যে [[লুই পাস্তুর]] ([[:en:Louis Pasteur|Louis Pasteur]]), [[রবার্ট কখ]] ([[:en:Robert_Koch|Robert Koch]]), [[অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং]] ([[:en:Alexander Fleming|Alexander Fleming]]), সারগেই উইনুগার্ডস্কি ([[:en:Sergei_winogradsky|Sergei winogradsky]]), মারটিনাস বেইজারিঙ্ক (Martinus_Beijerinck) এর অবদান অন্যতম।
[[চিত্র:Louis Pasteur.jpg|left|thumb|লুই পাস্তুর]]
[[চিত্র:Louis Pasteur.jpg|left|thumb|লুই পাস্তুর]]


==আলোচ্য বিষয়==
== আলোচ্য বিষয় ==
অণুজীব বিজ্ঞান অণুজীবের কোষীয় গঠন, শারীরত্বত্ত (Metabolism), বংশগতি (Genetics), বৃদ্ধি(Growth), বাস্তুসংস্থান (Ecology), বিবর্তণ (Evolution)ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। তাছাড়া যেহেতু কিছু অণুজীব ( জীবানু) ও অন্যান্যপশু পাখির বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ঘটাতে পারে, ফলে এই সব রোগ, সেই সাথে এদের প্রতিরোধ ও প্রতিকারও অণুজীব বিজ্ঞানে আলোচ্য বিষয়। সেই সাথে আমাদের শরীর কিভাবে এই সব জীবানুর সাথে লড়াই করে তা মূলত অণুজীব বিজ্ঞানেরই আর এক শাখা ইমিউনলজি(immunology) তে আলোচনা করা হয়। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotic) অণুজীব বিজ্ঞানের এক বিশাল আবিষ্কার। [[অ্যান্টিবায়োটিক]] হল এমন সব পদার্থ যা কিনা একধরনের অণুজীব তৈরি করে এবং তা অন্য অণুজীবের বিপক্ষে কাজ করে। রোগ প্রতিরোধকারী নানা ভ্যাক্সিন ও রোগ প্রতিকারকারী বিভিন্ন ঔষধের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান স্টেরয়েড অণুজীব হতে পাওয়া যায়।
অণুজীব বিজ্ঞান অণুজীবের কোষীয় গঠন, শারীরত্বত্ত (Metabolism), বংশগতি (Genetics), বৃদ্ধি(Growth), বাস্তুসংস্থান (Ecology), বিবর্তণ (Evolution)ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। তাছাড়া যেহেতু কিছু অণুজীব ( জীবানু) ও অন্যান্যপশু পাখির বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ঘটাতে পারে, ফলে এই সব রোগ, সেই সাথে এদের প্রতিরোধ ও প্রতিকারও অণুজীব বিজ্ঞানে আলোচ্য বিষয়। সেই সাথে আমাদের শরীর কিভাবে এই সব জীবানুর সাথে লড়াই করে তা মূলত অণুজীব বিজ্ঞানেরই আর এক শাখা ইমিউনলজি(immunology) তে আলোচনা করা হয়। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotic) অণুজীব বিজ্ঞানের এক বিশাল আবিষ্কার। [[অ্যান্টিবায়োটিক]] হল এমন সব পদার্থ যা কিনা একধরনের অণুজীব তৈরি করে এবং তা অন্য অণুজীবের বিপক্ষে কাজ করে। রোগ প্রতিরোধকারী নানা ভ্যাক্সিন ও রোগ প্রতিকারকারী বিভিন্ন ঔষধের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান স্টেরয়েড অণুজীব হতে পাওয়া যায়।


===অণুজীব ও স্বাস্থ্য===
=== অণুজীব ও স্বাস্থ্য ===


===পরিবেশ অণুজীব বিজ্ঞান===
=== পরিবেশ অণুজীব বিজ্ঞান ===


===ফলিত অণুজীব বিজ্ঞান===
=== ফলিত অণুজীব বিজ্ঞান ===
অনুজীব বিজ্ঞানের এই শাখায় অণুজীবে বিভিন্ন ব্যবহারিক প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
অনুজীব বিজ্ঞানের এই শাখায় অণুজীবে বিভিন্ন ব্যবহারিক প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয়।


====অণুজীব ও খাদ্য====
==== অণুজীব ও খাদ্য ====
[[চিত্র:Swiss cheese cubes.jpg|left|thumb|পনির]]অণুজীব বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে ফলিত অণুজীববিদ্যা (Applied Microbiology)। বিভিন্ন রকম খাদ্য প্রস্তুতি (Preparation)ও প্রক্রিয়াজাত (Processing)করণে অণুজীববিদ্যা অত্যন্ত প্রয়োজনিয় এক বিষয়। দুধ হতে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন খাদ্য যেমন দই, পনির, ছানা ইত্যাদি মূলত দুধের শর্করার ওপর অণুজীবের গাজন (fermentation) প্রক্রিয়ার ফসল। তাছাড়া যেহেতু অনেক খাবার অণুজীবের জৈবিক ক্রিয়ার (Metabolism) দরুন নষ্ট হতে পারে ফলে এগুলোর প্রক্রিয়াজাত করণে অণুজীব বিজ্ঞানের জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন খাদ্যমান স্বাদকারক উপাদান যেমন টেস্টিং সল্ট এই জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন দেশে (যেমন জাপান, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভারত ইত্যাদি) অনেক অণুজীবকে খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের বিসিএসআইআর এর বিজ্ঞানীরা আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সার বছর উৎপাদনক্ষম শৈবাল স্পিরুলিনা (Spirulina)আবিষ্কার করেছেন, যা খাদ্য হিসেবে শুধু সুস্বাদুই নয়, সেই সাথে পুষ্টিকরও বটে।
[[চিত্র:Swiss cheese cubes.jpg|left|thumb|পনির]]অণুজীব বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে ফলিত অণুজীববিদ্যা (Applied Microbiology)। বিভিন্ন রকম খাদ্য প্রস্তুতি (Preparation)ও প্রক্রিয়াজাত (Processing)করণে অণুজীববিদ্যা অত্যন্ত প্রয়োজনিয় এক বিষয়। দুধ হতে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন খাদ্য যেমন দই, পনির, ছানা ইত্যাদি মূলত দুধের শর্করার ওপর অণুজীবের গাজন (fermentation) প্রক্রিয়ার ফসল। তাছাড়া যেহেতু অনেক খাবার অণুজীবের জৈবিক ক্রিয়ার (Metabolism) দরুন নষ্ট হতে পারে ফলে এগুলোর প্রক্রিয়াজাত করণে অণুজীব বিজ্ঞানের জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন খাদ্যমান স্বাদকারক উপাদান যেমন টেস্টিং সল্ট এই জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন দেশে (যেমন জাপান, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভারত ইত্যাদি) অনেক অণুজীবকে খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের বিসিএসআইআর এর বিজ্ঞানীরা আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সার বছর উৎপাদনক্ষম শৈবাল স্পিরুলিনা (Spirulina)আবিষ্কার করেছেন, যা খাদ্য হিসেবে শুধু সুস্বাদুই নয়, সেই সাথে পুষ্টিকরও বটে।


==== অণুজীব ও জৈবপ্রযুক্তি====
==== অণুজীব ও জৈবপ্রযুক্তি ====
চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ, কাগজের মন্ড প্রস্তুতি, কাপড় উৎপাদন ইত্যাদি শিল্পে অণুজীবের ঊৎসেচক ([[:en:enzyme|enzyme]]) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে এই সব শিল্প-কারখানায় অণুজীব বিজ্ঞানীর উপস্থিতি অপরিহার্য। তাছাড়া বিভিন্ন বানিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ যেমন এসিটিক এসিড ([[:en:acetic acid|Acetic acid]]) , সাইট্রিক এসিড ([[:en:Citric acid|Citric acid]]), এলকোহল([[:en:Alcohol|Alcohol]]), এসিটোন ([[:en:Acetone|Acetone]]), বিউটানল ([[:en:Butanol|Butanol]]), ফিউমারিক এসিড([[:en:Fumaric acid|Fumaric acid]]), ইত্যাদি জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদন, রাসায়নিক পদ্ধতিতে উৎপাদন অপেক্ষা সাশ্রয়ী। আর এই জৈবিক কাজটি করে দেয় অণুজীব। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক ([[:en:Antibiotic|Antibiotic]])অণুজীব বিজ্ঞানের এক বিশাল আবিষ্কার। অ্যান্টিবায়োটিক হল এমন সব পদার্থ যা কিনা একধরনের অণুজীব তৈরি করে এবং তা অন্য অণুজীবের বিপক্ষে কাজ করে।
চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ, কাগজের মন্ড প্রস্তুতি, কাপড় উৎপাদন ইত্যাদি শিল্পে অণুজীবের ঊৎসেচক ([[:en:enzyme|enzyme]]) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে এই সব শিল্প-কারখানায় অণুজীব বিজ্ঞানীর উপস্থিতি অপরিহার্য। তাছাড়া বিভিন্ন বানিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ যেমন এসিটিক এসিড ([[:en:acetic acid|Acetic acid]]) , সাইট্রিক এসিড ([[:en:Citric acid|Citric acid]]), এলকোহল([[:en:Alcohol|Alcohol]]), এসিটোন ([[:en:Acetone|Acetone]]), বিউটানল ([[:en:Butanol|Butanol]]), ফিউমারিক এসিড([[:en:Fumaric acid|Fumaric acid]]), ইত্যাদি জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদন, রাসায়নিক পদ্ধতিতে উৎপাদন অপেক্ষা সাশ্রয়ী। আর এই জৈবিক কাজটি করে দেয় অণুজীব। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক ([[:en:Antibiotic|Antibiotic]])অণুজীব বিজ্ঞানের এক বিশাল আবিষ্কার। অ্যান্টিবায়োটিক হল এমন সব পদার্থ যা কিনা একধরনের অণুজীব তৈরি করে এবং তা অন্য অণুজীবের বিপক্ষে কাজ করে।


====অণূজীব ও পরিবেশ দুষণ====
==== অণূজীব ও পরিবেশ দুষণ ====
আমাদের এই আধুনিক দৈনদ্দিন জীবনে বিজ্ঞানের এক অভিশাপ হচ্ছে দূষণ। এটা থেকে পরিত্রাণের অন্যতম পথ হল অণূজীব। কিছু পদার্থ (যা বিগত কয়েক শতকে আমরা পৃথিবীতে আবির্ভাব ঘটিয়েছি, যেমনঃ প্লাস্টিক, ডিডিটি ইত্যাদি) ছাড়া আর সব পদার্থই কোনো না কোনো অণুজীব তার খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। অবশেষে সে যা নিসৃত করে তা হয় পরিবেশ বান্ধব (Environment friendly)অথবা সেই সাথে বানিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল অনেক দেশে বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে অণুজীব ব্যবহৃত হচ্ছে।
আমাদের এই আধুনিক দৈনদ্দিন জীবনে বিজ্ঞানের এক অভিশাপ হচ্ছে দূষণ। এটা থেকে পরিত্রাণের অন্যতম পথ হল অণূজীব। কিছু পদার্থ (যা বিগত কয়েক শতকে আমরা পৃথিবীতে আবির্ভাব ঘটিয়েছি, যেমনঃ প্লাস্টিক, ডিডিটি ইত্যাদি) ছাড়া আর সব পদার্থই কোনো না কোনো অণুজীব তার খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। অবশেষে সে যা নিসৃত করে তা হয় পরিবেশ বান্ধব (Environment friendly)অথবা সেই সাথে বানিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল অনেক দেশে বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে অণুজীব ব্যবহৃত হচ্ছে।


==== অণুজীব ও জ্বালানি====
==== অণুজীব ও জ্বালানি ====
অণুজীবের আর এক চমক হল জৈবজ্বালানী (biofuel)। কিছু কিছু অনুজীব মিথেন (Methen) গ্যাস উৎপাদন করতে পারে। বাংলাদেশে যে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায় তার প্রায় ৯৬% হল মিথেন, অন্যদিকে অণুজীব কর্তৃক উৎপাদিত জৈবগ্যাসে মিথেন এর পরিমাণ প্রায় ৬০-৭০%। জৈবডিজেল (Biodiesel) দ্বারা এখন ব্রাজিলে গাড়ি চালানো সম্ভব হয়েছে। আসলে জৈবডিজেল হল এলকোহল (মূলত মিথানল), উদ্ভিদ তেল, প্রানিজ তেলের মিশ্রণ। এলকোহল শিল্প-কারখানায় শর্করার হতে গাজন প্রক্রিয়ায় অণূজীবের সাহায্যে তৈরি করা হয়।
অণুজীবের আর এক চমক হল জৈবজ্বালানী (biofuel)। কিছু কিছু অনুজীব মিথেন (Methen) গ্যাস উৎপাদন করতে পারে। বাংলাদেশে যে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায় তার প্রায় ৯৬% হল মিথেন, অন্যদিকে অণুজীব কর্তৃক উৎপাদিত জৈবগ্যাসে মিথেন এর পরিমাণ প্রায় ৬০-৭০%। জৈবডিজেল (Biodiesel) দ্বারা এখন ব্রাজিলে গাড়ি চালানো সম্ভব হয়েছে। আসলে জৈবডিজেল হল এলকোহল (মূলত মিথানল), উদ্ভিদ তেল, প্রানিজ তেলের মিশ্রণ। এলকোহল শিল্প-কারখানায় শর্করার হতে গাজন প্রক্রিয়ায় অণূজীবের সাহায্যে তৈরি করা হয়।


====অণুজীব ও খনিজ পদার্থ====
==== অণুজীব ও খনিজ পদার্থ ====
খনি থেকে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ উত্তোলনের নানা পর্যায়ে অণুজীবের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। মাটির নিচে খনিজ তেলের উপস্থিতি ঐ স্থানে পেট্রোলিয়াম ভক্ষণকারী ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি থেকে জানা যায়। অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন সালফার এর উত্তোলনে সালফার জারণকারী (Sulfate oxidizer) ব্যাক্টেরিয়া ব্যবহার করা হয়।
খনি থেকে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ উত্তোলনের নানা পর্যায়ে অণুজীবের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। মাটির নিচে খনিজ তেলের উপস্থিতি ঐ স্থানে পেট্রোলিয়াম ভক্ষণকারী ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি থেকে জানা যায়। অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন সালফার এর উত্তোলনে সালফার জারণকারী (Sulfate oxidizer) ব্যাক্টেরিয়া ব্যবহার করা হয়।




====অণুজীব ও কৃষি====
==== অণুজীব ও কৃষি ====
জৈবসারও আসলে অণুজীবের কার্যাবলীর ফসল। জৈবসার হিসেবে মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাক্টেরিয়া (যেমনঃ ''Rhizobium, Azorihobium, Azotobacter'') ব্যাবহার করা হয় যা মাটিতে প্রয়োজন মতো নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে। তবে আমাদের দেশে ব্যবহৃত গোবরও জৈবসার বলে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশে সার তৈরির প্রধান কাচামাল গ্যাস শেষ হয়ে গেলে, আমাদের জন্য জৈবসার ব্যবহার করা অনেক লাভজনক হবে। তাছাড়া জৈবসার পরিবেশের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।
জৈবসারও আসলে অণুজীবের কার্যাবলীর ফসল। জৈবসার হিসেবে মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাক্টেরিয়া (যেমনঃ ''Rhizobium, Azorihobium, Azotobacter'') ব্যাবহার করা হয় যা মাটিতে প্রয়োজন মতো নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে। তবে আমাদের দেশে ব্যবহৃত গোবরও জৈবসার বলে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশে সার তৈরির প্রধান কাচামাল গ্যাস শেষ হয়ে গেলে, আমাদের জন্য জৈবসার ব্যবহার করা অনেক লাভজনক হবে। তাছাড়া জৈবসার পরিবেশের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।


====অণুজীব ও ভেষজবিদ্যা(Pharmacy)====
==== অণুজীব ও ভেষজবিদ্যা(Pharmacy) ====




====অণুজীব বিজ্ঞান ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং====
==== অণুজীব বিজ্ঞান ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ====
অণুজীবের সবচাইতে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল এদের অনেক বৈশিষ্ট্য জেনেটিক রিকম্বিনেশনের (Genetic Recombination দ্বারা পরিবর্তণ, পরিবর্ধণ করা যায়। ডায়াবেটিক রুগীর এক অত্যাবশকীয় ঔষধ ইন্সুলিন (Insulin) এখন বানিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করা যাচ্ছে কারণ মানুষের ইন্সুলিন সংশ্লেষণকারী জিন (Gene) আমাদের অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া ইসচেরিচিয়া কোলাই (Escherichia coli)এর জিনে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। শিল্প ক্ষেত্রে এখন এই রিকম্বিনেন্ট ব্যাক্টেরিয়া থেকেই ব্যাপক পরিমাণে ও সস্তায় ইন্সুলিন প্রস্তুত করা হয়।
অণুজীবের সবচাইতে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল এদের অনেক বৈশিষ্ট্য জেনেটিক রিকম্বিনেশনের (Genetic Recombination দ্বারা পরিবর্তণ, পরিবর্ধণ করা যায়। ডায়াবেটিক রুগীর এক অত্যাবশকীয় ঔষধ ইন্সুলিন (Insulin) এখন বানিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করা যাচ্ছে কারণ মানুষের ইন্সুলিন সংশ্লেষণকারী জিন (Gene) আমাদের অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া ইসচেরিচিয়া কোলাই (Escherichia coli)এর জিনে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। শিল্প ক্ষেত্রে এখন এই রিকম্বিনেন্ট ব্যাক্টেরিয়া থেকেই ব্যাপক পরিমাণে ও সস্তায় ইন্সুলিন প্রস্তুত করা হয়।


==বাংলাদেশের অণুজীব বিজ্ঞানীগন==
== বাংলাদেশের অণুজীব বিজ্ঞানীগন ==
বাংলাদেশের খ্যাতিমান অণুজীব বিজ্ঞানীদের মধ্যে অধ্যাপক ডঃ মাহবুবুর রহমান খান, অধ্যাপক ডঃ কাজী মোঃ সুলতানুল আজিজ, মরহুম মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাঃ এম. আর. চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাঃ মতিউর রহমান, অধ্যাপক ডঃ এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডঃ নইম চৌধুরী, এর নাম উল্লেখ যোগ্য। বাংলাদেশের একজন প্রতিতযশা অণুজীব বিজ্ঞানী মরহুম অধ্যাপক ডঃ আনোয়ারুল আজিম চৌধুরি ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ চালু করেণ। বাংলাদেশের অণুজীব বিজ্ঞানীদের একটি সংগঠন হল [http://www.bsmbd.org বাংলাদেশ অণূজীব বিজ্ঞান সমিতি]
বাংলাদেশের খ্যাতিমান অণুজীব বিজ্ঞানীদের মধ্যে অধ্যাপক ডঃ মাহবুবুর রহমান খান, অধ্যাপক ডঃ কাজী মোঃ সুলতানুল আজিজ, মরহুম মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাঃ এম. আর. চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাঃ মতিউর রহমান, অধ্যাপক ডঃ এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডঃ নইম চৌধুরী, এর নাম উল্লেখ যোগ্য। বাংলাদেশের একজন প্রতিতযশা অণুজীব বিজ্ঞানী মরহুম অধ্যাপক ডঃ আনোয়ারুল আজিম চৌধুরি ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ চালু করেণ। বাংলাদেশের অণুজীব বিজ্ঞানীদের একটি সংগঠন হল [http://www.bsmbd.org বাংলাদেশ অণূজীব বিজ্ঞান সমিতি]


[[বিষয়শ্রেণী:অণুজীব বিজ্ঞান]]


[[Category:অণুজীব বিজ্ঞান]]


[[af:Mikrobiologie]]
[[af:Mikrobiologie]]

০৬:১৩, ২০ মে ২০১১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

অণুজীব বিজ্ঞান (Microbiology)হল জীববিজ্ঞান এর একটি শাখা যেখানে অণুজীব নিয়ে আলোচনা করা হয়।

অণুজীব

বিভিন্ন ধরণের ব্যাক্টেরিয়া

ব্যাক্টেরিয়া (Bacteria), ভাইরাস (Virus), ছত্রাক (Fungi), শৈবাল (Algae), প্রটোজোয়া(Protozoa), আরকিয়া (Archaea) ইত্যাদি এককোষী জীব অণুজীবের অন্তর্গত (যদিও বহুকোষী ছত্রাকশৈবাল পাওয়া যায়)।

অণুজীব বিজ্ঞানী

১৬৭৬ সালে ব্রিটিশ সৌখিন বিজ্ঞানী অ্যান্থনি ভন লিউয়েনহুক (Leeuwenhoek) সর্ব প্রথম অণুজীব আবিষ্কার করেণ। যে সকল বিজ্ঞানী অণুজীব বিজ্ঞান কে আধুনিক বিজ্ঞানের এক সম্ভাবনীয় শাখা হিসেবে গড়ে তুলেছেন তাদের মধ্যে লুই পাস্তুর (Louis Pasteur), রবার্ট কখ (Robert Koch), অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং (Alexander Fleming), সারগেই উইনুগার্ডস্কি (Sergei winogradsky), মারটিনাস বেইজারিঙ্ক (Martinus_Beijerinck) এর অবদান অন্যতম।

লুই পাস্তুর

আলোচ্য বিষয়

অণুজীব বিজ্ঞান অণুজীবের কোষীয় গঠন, শারীরত্বত্ত (Metabolism), বংশগতি (Genetics), বৃদ্ধি(Growth), বাস্তুসংস্থান (Ecology), বিবর্তণ (Evolution)ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। তাছাড়া যেহেতু কিছু অণুজীব ( জীবানু) ও অন্যান্যপশু পাখির বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ঘটাতে পারে, ফলে এই সব রোগ, সেই সাথে এদের প্রতিরোধ ও প্রতিকারও অণুজীব বিজ্ঞানে আলোচ্য বিষয়। সেই সাথে আমাদের শরীর কিভাবে এই সব জীবানুর সাথে লড়াই করে তা মূলত অণুজীব বিজ্ঞানেরই আর এক শাখা ইমিউনলজি(immunology) তে আলোচনা করা হয়। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotic) অণুজীব বিজ্ঞানের এক বিশাল আবিষ্কার। অ্যান্টিবায়োটিক হল এমন সব পদার্থ যা কিনা একধরনের অণুজীব তৈরি করে এবং তা অন্য অণুজীবের বিপক্ষে কাজ করে। রোগ প্রতিরোধকারী নানা ভ্যাক্সিন ও রোগ প্রতিকারকারী বিভিন্ন ঔষধের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান স্টেরয়েড অণুজীব হতে পাওয়া যায়।

অণুজীব ও স্বাস্থ্য

পরিবেশ অণুজীব বিজ্ঞান

ফলিত অণুজীব বিজ্ঞান

অনুজীব বিজ্ঞানের এই শাখায় অণুজীবে বিভিন্ন ব্যবহারিক প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

অণুজীব ও খাদ্য

পনির

অণুজীব বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে ফলিত অণুজীববিদ্যা (Applied Microbiology)। বিভিন্ন রকম খাদ্য প্রস্তুতি (Preparation)ও প্রক্রিয়াজাত (Processing)করণে অণুজীববিদ্যা অত্যন্ত প্রয়োজনিয় এক বিষয়। দুধ হতে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন খাদ্য যেমন দই, পনির, ছানা ইত্যাদি মূলত দুধের শর্করার ওপর অণুজীবের গাজন (fermentation) প্রক্রিয়ার ফসল। তাছাড়া যেহেতু অনেক খাবার অণুজীবের জৈবিক ক্রিয়ার (Metabolism) দরুন নষ্ট হতে পারে ফলে এগুলোর প্রক্রিয়াজাত করণে অণুজীব বিজ্ঞানের জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন খাদ্যমান স্বাদকারক উপাদান যেমন টেস্টিং সল্ট এই জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন দেশে (যেমন জাপান, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভারত ইত্যাদি) অনেক অণুজীবকে খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের বিসিএসআইআর এর বিজ্ঞানীরা আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সার বছর উৎপাদনক্ষম শৈবাল স্পিরুলিনা (Spirulina)আবিষ্কার করেছেন, যা খাদ্য হিসেবে শুধু সুস্বাদুই নয়, সেই সাথে পুষ্টিকরও বটে।

অণুজীব ও জৈবপ্রযুক্তি

চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ, কাগজের মন্ড প্রস্তুতি, কাপড় উৎপাদন ইত্যাদি শিল্পে অণুজীবের ঊৎসেচক (enzyme) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে এই সব শিল্প-কারখানায় অণুজীব বিজ্ঞানীর উপস্থিতি অপরিহার্য। তাছাড়া বিভিন্ন বানিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ যেমন এসিটিক এসিড (Acetic acid) , সাইট্রিক এসিড (Citric acid), এলকোহল(Alcohol), এসিটোন (Acetone), বিউটানল (Butanol), ফিউমারিক এসিড(Fumaric acid), ইত্যাদি জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদন, রাসায়নিক পদ্ধতিতে উৎপাদন অপেক্ষা সাশ্রয়ী। আর এই জৈবিক কাজটি করে দেয় অণুজীব। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotic)অণুজীব বিজ্ঞানের এক বিশাল আবিষ্কার। অ্যান্টিবায়োটিক হল এমন সব পদার্থ যা কিনা একধরনের অণুজীব তৈরি করে এবং তা অন্য অণুজীবের বিপক্ষে কাজ করে।

অণূজীব ও পরিবেশ দুষণ

আমাদের এই আধুনিক দৈনদ্দিন জীবনে বিজ্ঞানের এক অভিশাপ হচ্ছে দূষণ। এটা থেকে পরিত্রাণের অন্যতম পথ হল অণূজীব। কিছু পদার্থ (যা বিগত কয়েক শতকে আমরা পৃথিবীতে আবির্ভাব ঘটিয়েছি, যেমনঃ প্লাস্টিক, ডিডিটি ইত্যাদি) ছাড়া আর সব পদার্থই কোনো না কোনো অণুজীব তার খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। অবশেষে সে যা নিসৃত করে তা হয় পরিবেশ বান্ধব (Environment friendly)অথবা সেই সাথে বানিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল অনেক দেশে বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে অণুজীব ব্যবহৃত হচ্ছে।

অণুজীব ও জ্বালানি

অণুজীবের আর এক চমক হল জৈবজ্বালানী (biofuel)। কিছু কিছু অনুজীব মিথেন (Methen) গ্যাস উৎপাদন করতে পারে। বাংলাদেশে যে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায় তার প্রায় ৯৬% হল মিথেন, অন্যদিকে অণুজীব কর্তৃক উৎপাদিত জৈবগ্যাসে মিথেন এর পরিমাণ প্রায় ৬০-৭০%। জৈবডিজেল (Biodiesel) দ্বারা এখন ব্রাজিলে গাড়ি চালানো সম্ভব হয়েছে। আসলে জৈবডিজেল হল এলকোহল (মূলত মিথানল), উদ্ভিদ তেল, প্রানিজ তেলের মিশ্রণ। এলকোহল শিল্প-কারখানায় শর্করার হতে গাজন প্রক্রিয়ায় অণূজীবের সাহায্যে তৈরি করা হয়।

অণুজীব ও খনিজ পদার্থ

খনি থেকে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ উত্তোলনের নানা পর্যায়ে অণুজীবের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। মাটির নিচে খনিজ তেলের উপস্থিতি ঐ স্থানে পেট্রোলিয়াম ভক্ষণকারী ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি থেকে জানা যায়। অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন সালফার এর উত্তোলনে সালফার জারণকারী (Sulfate oxidizer) ব্যাক্টেরিয়া ব্যবহার করা হয়।


অণুজীব ও কৃষি

জৈবসারও আসলে অণুজীবের কার্যাবলীর ফসল। জৈবসার হিসেবে মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাক্টেরিয়া (যেমনঃ Rhizobium, Azorihobium, Azotobacter) ব্যাবহার করা হয় যা মাটিতে প্রয়োজন মতো নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে। তবে আমাদের দেশে ব্যবহৃত গোবরও জৈবসার বলে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশে সার তৈরির প্রধান কাচামাল গ্যাস শেষ হয়ে গেলে, আমাদের জন্য জৈবসার ব্যবহার করা অনেক লাভজনক হবে। তাছাড়া জৈবসার পরিবেশের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।

অণুজীব ও ভেষজবিদ্যা(Pharmacy)

অণুজীব বিজ্ঞান ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং

অণুজীবের সবচাইতে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল এদের অনেক বৈশিষ্ট্য জেনেটিক রিকম্বিনেশনের (Genetic Recombination দ্বারা পরিবর্তণ, পরিবর্ধণ করা যায়। ডায়াবেটিক রুগীর এক অত্যাবশকীয় ঔষধ ইন্সুলিন (Insulin) এখন বানিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করা যাচ্ছে কারণ মানুষের ইন্সুলিন সংশ্লেষণকারী জিন (Gene) আমাদের অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া ইসচেরিচিয়া কোলাই (Escherichia coli)এর জিনে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। শিল্প ক্ষেত্রে এখন এই রিকম্বিনেন্ট ব্যাক্টেরিয়া থেকেই ব্যাপক পরিমাণে ও সস্তায় ইন্সুলিন প্রস্তুত করা হয়।

বাংলাদেশের অণুজীব বিজ্ঞানীগন

বাংলাদেশের খ্যাতিমান অণুজীব বিজ্ঞানীদের মধ্যে অধ্যাপক ডঃ মাহবুবুর রহমান খান, অধ্যাপক ডঃ কাজী মোঃ সুলতানুল আজিজ, মরহুম মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাঃ এম. আর. চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাঃ মতিউর রহমান, অধ্যাপক ডঃ এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডঃ নইম চৌধুরী, এর নাম উল্লেখ যোগ্য। বাংলাদেশের একজন প্রতিতযশা অণুজীব বিজ্ঞানী মরহুম অধ্যাপক ডঃ আনোয়ারুল আজিম চৌধুরি ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ চালু করেণ। বাংলাদেশের অণুজীব বিজ্ঞানীদের একটি সংগঠন হল বাংলাদেশ অণূজীব বিজ্ঞান সমিতি