শিয়ালকাঁটা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Image:Argemone.jpg|thumb|শিয়ালকাঁটা গাছ ও ফুল]]
[[Image:Argemone.jpg|thumb|শিয়ালকাঁটা গাছ ও ফুল]]
শিয়ালকাঁটা (Argemone mexicana, Mexican Poppy, Mexican Prickly Poppy or Cardosanto) একটি কাঁটাযুক্ত পপি গোত্রের গাছ যা মেক্সিকো থেকে বাকি বিশ্বে একটি আগাছা হিসাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম আর্জিমোন মেক্সিকানা। গ্রীক ভাষায় আর্জিমা মানে [[ছানি]] (ক্যাটারাক্ট)। এই গাছের রস চক্ষুরোগের চিকিৎসায় ব্যাবহার হত বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে আর্জিমোন, এবং মেক্সিকোয় পাওয়া যায় বলে মেক্সিকানা।
শিয়ালকাঁটা (Argemone mexicana, Mexican Poppy, Mexican Prickly Poppy or Cardosanto) একটি কাঁটাযুক্ত পপি গোত্রের গাছ যা মেক্সিকো থেকে বাকি বিশ্বে একটি আগাছা হিসাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম আর্জিমোন মেক্সিকানা। গ্রীক ভাষায় আর্জিমা মানে [[ছানি]] (ক্যাটারাক্ট)। এই গাছের রস চক্ষুরোগের চিকিৎসায় ব্যাবহার হত বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে আর্জিমোন, এবং মেক্সিকোয় পাওয়া যায় বলে মেক্সিকানা। এটি একাধারে বিষাক্ত আগাছা এবং ওষধি গুল্ম।


শিয়ালকাঁটার বীজ দেখতে অনেকটা [[সর্ষে|সর্ষের]] মত দেখতে এবং সেই বীজের তেল দেখতে অনেকটা [[সর্ষের তেল|সর্ষের তেলের]] মত, তাই সর্ষের তেলের মধ্যে এর [[ভেজাল]] ব্যবহার হয়। এর ভেজালের মাত্রা বেড়ে গেলে বিষক্রিয়া দেখা যেতে পারে। ১৯৭৭সালে কলকাতায় একবার এর বিষক্রিয়ার প্রাদুর্ভাব হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে উত্তর [[ভারত|ভারতে]] দিল্লীর আশেপাশে প্রায় আড়াই হাজার লোকের মধ্যে খাদ্যতেলের মধ্যে ভেজালের কারণ একবার এই বিষের ক্রিয়া দেখা দেয় এবং অন্ততঃ ৬৫ জন মারা যায়।<ref>Sharma, B D, Malhotra, Sanjay, Bhatia, Vikram, Rathee, Mandeep
শিয়ালকাঁটার বীজ দেখতে অনেকটা [[সর্ষে|সর্ষের]] মত দেখতে এবং সেই বীজের তেল দেখতে অনেকটা [[সর্ষের তেল|সর্ষের তেলের]] মত, তাই সর্ষের তেলের মধ্যে এর [[ভেজাল]] ব্যবহার হয়। এর ভেজালের মাত্রা বেড়ে গেলে বিষক্রিয়া দেখা যেতে পারে। ১৯৭৭সালে কলকাতায় একবার এর বিষক্রিয়ার প্রাদুর্ভাব হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে উত্তর [[ভারত|ভারতে]] দিল্লীর আশেপাশে প্রায় আড়াই হাজার লোকের মধ্যে খাদ্যতেলের মধ্যে ভেজালের কারণ একবার এই বিষের ক্রিয়া দেখা দেয় এবং অন্ততঃ ৬৫ জন মারা যায়।<ref>Sharma, B D, Malhotra, Sanjay, Bhatia, Vikram, Rathee, Mandeep
Classic diseases revisited: Epidemic dropsy in India
Classic diseases revisited: Epidemic dropsy in India
Postgrad Med J 1999 75: 657-661
Postgrad Med J 1999 75: 657-661
http://pmj.bmj.com/cgi/content/full/75/889/657</ref>। এই বিষক্রিয়ার লক্ষণ শরীরে জল জমে যাওয়া (ড্রপ্সি) তাই এই অবস্থার নাম "[[এপিডেমিক ড্রপ্সি]]"। শিয়াল কাঁটার তেলের মধ্যে অবস্থিত বিষাক্ত [[উপক্ষার|উপক্ষারগুলির]] মধ্যে দুটি হল স্যাঙ্গুইনারিন (Sanguinarine) ও ডাইহাইড্রোস্যাঙ্গুইনারিন (dehydrosanguinarine)। স্যাঙ্গুইনারিন সঠিক কিভাবে কাজ করে তা সম্পূর্ণ পরিষ্কার না হলেও এই উপক্ষার অনেকটা [[ডিজিটালিস]] বা [[ওউয়াবেন]]-এর মত কোষপর্দায় অবস্থিত সোডিয়াম-পটাসিয়াম-এটিপিএজ পাম্পকে বন্ধ করে দেয়। এই ক্রিয়া স্বল্প মাত্রায় হলে কোষে ক্যালসিয়াম বেড়ে যায় ফলে হৃদযন্ত্রের সংকোচন বাড়িয়া এটি দিজিটালিসের মত ড্রপ্সির ওষুধ হিসাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু এর মাত্রা বেশী হলে রক্তবাহের দেওয়ালের ছিদ্রগুলি বড় হয়ে রক্তরস বেশী পরিমাণে আন্তঃকোষীয় স্থানে বের হয়ে যায় ও এটি নিজেই ড্রপ্সির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
http://pmj.bmj.com/cgi/content/full/75/889/657</ref>। এই বিষক্রিয়ার লক্ষণ শরীরে জল জমে যাওয়া (ড্রপ্সি) তাই এই অবস্থার নাম "[[এপিডেমিক ড্রপ্সি]]"। শিয়াল কাঁটার তেলের মধ্যে অবস্থিত বিষাক্ত [[উপক্ষার|উপক্ষারগুলির]] মধ্যে দুটি হল স্যাঙ্গুইনারিন (Sanguinarine) ও ডাইহাইড্রোস্যাঙ্গুইনারিন (dehydrosanguinarine)। স্যাঙ্গুইনারিন সঠিক কিভাবে কাজ করে তা সম্পূর্ণ পরিষ্কার না হলেও এই উপক্ষার অনেকটা [[ডিজিটালিস]] বা [[ওউয়াবেন]]-এর মত কোষপর্দায় অবস্থিত সোডিয়াম-পটাসিয়াম-এটিপিএজ পাম্পকে বন্ধ করে দেয়। এই ক্রিয়া স্বল্প মাত্রায় হলে কোষে ক্যালসিয়াম বেড়ে যায় ফলে হৃদযন্ত্রের সংকোচন বাড়িয়া এটি দিজিটালিসের মত ড্রপ্সির ওষুধ হিসাবে কাজ করতে পারে। এই জন্যে এই গাছটির ওষধি গাছ হিসাবে ব্যবহার ছিল। কিন্তু এর মাত্রা বেশী হলে রক্তবাহের দেওয়ালের ছিদ্রগুলি বড় হয়ে রক্তরস বেশী পরিমাণে আন্তঃকোষীয় স্থানে বের হয়ে যায় ও এটি নিজেই ড্রপ্সির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


[[Image:Sanguinarine structure.png|thumb|স্যাঙ্গুইনারিন]]
[[Image:Sanguinarine structure.png|thumb|স্যাঙ্গুইনারিন]]

২৩:৪৪, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

শিয়ালকাঁটা গাছ ও ফুল

শিয়ালকাঁটা (Argemone mexicana, Mexican Poppy, Mexican Prickly Poppy or Cardosanto) একটি কাঁটাযুক্ত পপি গোত্রের গাছ যা মেক্সিকো থেকে বাকি বিশ্বে একটি আগাছা হিসাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম আর্জিমোন মেক্সিকানা। গ্রীক ভাষায় আর্জিমা মানে ছানি (ক্যাটারাক্ট)। এই গাছের রস চক্ষুরোগের চিকিৎসায় ব্যাবহার হত বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে আর্জিমোন, এবং মেক্সিকোয় পাওয়া যায় বলে মেক্সিকানা। এটি একাধারে বিষাক্ত আগাছা এবং ওষধি গুল্ম।

শিয়ালকাঁটার বীজ দেখতে অনেকটা সর্ষের মত দেখতে এবং সেই বীজের তেল দেখতে অনেকটা সর্ষের তেলের মত, তাই সর্ষের তেলের মধ্যে এর ভেজাল ব্যবহার হয়। এর ভেজালের মাত্রা বেড়ে গেলে বিষক্রিয়া দেখা যেতে পারে। ১৯৭৭সালে কলকাতায় একবার এর বিষক্রিয়ার প্রাদুর্ভাব হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে উত্তর ভারতে দিল্লীর আশেপাশে প্রায় আড়াই হাজার লোকের মধ্যে খাদ্যতেলের মধ্যে ভেজালের কারণ একবার এই বিষের ক্রিয়া দেখা দেয় এবং অন্ততঃ ৬৫ জন মারা যায়।[১]। এই বিষক্রিয়ার লক্ষণ শরীরে জল জমে যাওয়া (ড্রপ্সি) তাই এই অবস্থার নাম "এপিডেমিক ড্রপ্সি"। শিয়াল কাঁটার তেলের মধ্যে অবস্থিত বিষাক্ত উপক্ষারগুলির মধ্যে দুটি হল স্যাঙ্গুইনারিন (Sanguinarine) ও ডাইহাইড্রোস্যাঙ্গুইনারিন (dehydrosanguinarine)। স্যাঙ্গুইনারিন সঠিক কিভাবে কাজ করে তা সম্পূর্ণ পরিষ্কার না হলেও এই উপক্ষার অনেকটা ডিজিটালিস বা ওউয়াবেন-এর মত কোষপর্দায় অবস্থিত সোডিয়াম-পটাসিয়াম-এটিপিএজ পাম্পকে বন্ধ করে দেয়। এই ক্রিয়া স্বল্প মাত্রায় হলে কোষে ক্যালসিয়াম বেড়ে যায় ফলে হৃদযন্ত্রের সংকোচন বাড়িয়া এটি দিজিটালিসের মত ড্রপ্সির ওষুধ হিসাবে কাজ করতে পারে। এই জন্যে এই গাছটির ওষধি গাছ হিসাবে ব্যবহার ছিল। কিন্তু এর মাত্রা বেশী হলে রক্তবাহের দেওয়ালের ছিদ্রগুলি বড় হয়ে রক্তরস বেশী পরিমাণে আন্তঃকোষীয় স্থানে বের হয়ে যায় ও এটি নিজেই ড্রপ্সির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্যাঙ্গুইনারিন



তথ্যসূত্র

  1. Sharma, B D, Malhotra, Sanjay, Bhatia, Vikram, Rathee, Mandeep Classic diseases revisited: Epidemic dropsy in India Postgrad Med J 1999 75: 657-661 http://pmj.bmj.com/cgi/content/full/75/889/657