বিদেশিয়া (নাটক)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বিদেশিয়া (ভোজপুরি: 𑂥𑂱𑂠𑂵𑂮𑂱𑂨𑂰) বা বাহারা বাহার হলো ভোজপুরী নাট্যকার ভিখারি ঠাকুরের একটি ভোজপুরি নাটক।[১][২][৩][৪] এটি নারীর ক্ষমতায়ন, অভিবাসন এবং দারিদ্র্যের উপর ভিখারি ঠাকুর রচিত বেশ কয়েকটি নাটকের মধ্যে একটি। এর জনপ্রিয়তার কারণে এটি ভোজপুরি অঞ্চলের লোকনাট্য শৈলীতে পরিণত হয়, কিছু পণ্ডিত দাবি করেছেন যে এটি সেই দিনগুলিতে রামায়ণের মতোই জনপ্রিয় ছিল। নাটকটিতে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভোজপুরি সমাজে নারীদের অবস্থা, অভিবাসন ও দারিদ্র্যের সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। নাটকটি ১৯১২ সালে রচিত ও মঞ্চস্থ হয় এবং ১৯১৭ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয়।

নাম[সম্পাদনা]

এই নাটকটি কলযুগ বাহার নামে প্রকাশিত হয়, তারপর এটি বাহারা বাহার নামে প্রকাশিত হয়, এতে বিদেশিয়া নামক একটি চরিত্রের কারণে এটি বিদেশিয়া নামে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। নাটকটি মঙ্গলাচরন দিয়ে শুরু হয় যার অর্থ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা। এরপর সূত্রধর মঞ্চে এসে নাটকের চরিত্র ও গল্পের সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেন। এর পরে নাটকটি শুরু হয়। [৫]

গল্প[সম্পাদনা]

নাটকটি শুরু হয় বিদেশিয়া বা বিদেশি এবং পিয়ারি সুন্দরীর (তার স্ত্রী) মধ্যে কথোপকথন দিয়ে, যেখানে বিদেশিয়া গ্রাম ছেড়ে উপার্জনের জন্য কলকাতায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তার স্ত্রী তাকে আটকানোর চেষ্টা করে কিন্তু সে শোনে নি। কলকাতায় যাওয়ার পরে সে বছরের পর বছর বাড়ি ফেরে না এবং পিয়ারি সুন্দরী তার ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করে। একদিন একজন ভ্রমণকারী (বাতোহিয়া) সেই গ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, পিয়ারি সুন্দরী তাকে বিদেশিয়ার কাছে তার বার্তা পাঠাতে বলে। বাতোহিয়া যখন কলকাতায় পৌঁছায় তখন সে দেখতে পায় যে বিদেশিয়া সালোনি নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেছে। বাতোহি তাকে পিয়ারির অবস্থা সম্পর্কে জানায় যে সে বছরের পর বছর ধরে তার জন্য কতটা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বিদেশিয়া তার ভুল বুঝতে পারে এবং বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সালোনি তাকে না যেতে বলে, কিন্তু সে গ্রামে ফিরে আসে। সে বাড়িতে পৌঁছে দরজায় কড়া নাড়ে, তার স্ত্রী ভয় পায় এবং জিজ্ঞেস করে, "তুমি কে?" সে বলে "আমি তোমার স্বামী"। পিয়ারি ভয়ে দরজা খোলে এবং তার স্বামীকে সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়। সালোনিও বিদেশিয়ার পিছন পিছন তার গ্রামে আসে এবং বলে যে সে তাকে ছাড়া কী করবে। অবশেষে পিয়ারিও সালোনিকে তার সতীন হিসাবে গ্রহণ করে।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Brandon, James R.; Banham, Martin (১৯৯৭-০১-২৮)। The Cambridge Guide to Asian Theatre (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-58822-5 
  2. Kumar, Ashutosh (২০১৭-০৯-১৫)। Coolies of the Empire (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-1-107-14795-9 
  3. Journal of South Asian Literature (ইংরেজি ভাষায়)। Asian Studies Center, Michigan State University.। ১৯৮২। 
  4. Law, Jonathan (২০১৩-১০-২৮)। The Methuen Drama Dictionary of the Theatre (ইংরেজি ভাষায়)। A&C Black। আইএসবিএন 978-1-4081-4591-3 
  5. Singh, Dhananjay (সেপ্টেম্বর ২০১৮)। "The Image of Women in Folk-Traditions of Migration"। Journal of Migration Affairs1: 41। ডিওআই:10.36931/jma.2018.1.1.41-58অবাধে প্রবেশযোগ্য – In his play ‘Bidesiya’ he shows Pyari Sundari's suffering as the ideal chaste wife waiting for her husband in the village-এর মাধ্যমে। 
  6. Upadhyay, Krishnadev (১৯৭২)। Bhojpuri Sahitya ka Itihas। Varanasi: Bharatiya lok Sanskriti Shodh Sansthan। পৃষ্ঠা 343।