বিজিএম-৭৫ এআইসিবিএম
বিজিএম-৭৫ এআইসিবিএম | |
---|---|
প্রকার | আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র |
উদ্ভাবনকারী | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
ব্যবহার ইতিহাস | |
ব্যবহারকারী | ইউনাইটেড স্টেটস এয়ার ফোর্স |
উৎপাদন ইতিহাস | |
উৎপাদন সংখ্যা | ০ |
তথ্যাবলি | |
ওয়ারহেড | ১০–২০ এমআইআরভি |
ইঞ্জিন | কঠিন জ্বালানী রকেট |
নির্দেশনা পদ্ধতি |
নিষ্ক্রিয় |
লঞ্চ প্লাটফর্ম |
মিসাইল সাইলো, রেলপথ |
যেডবিজিএম-৭৫ আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, উইপন সিস্টেম ১২০এ (ডব্লিউএস-১২০এ) নামেও পরিচিত, যা একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উন্নয়ন প্রকল্প। ১৯৬০-এর দশকে ইউনাইটেড স্টেটস এয়ার ফোর্স এলজিএম-৩০ মিনিটম্যান-এর পরিবর্তে বিমানবাহিনীর জন্য এটির প্রস্তাবনা করে। প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় ১৯৬৭ সালে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়।
পটভূমি[সম্পাদনা]
প্রতিরক্ষা বিভাগ ১ নভেম্বর ১৯৬৬ সালে বিমানবাহিনীর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে একটি নতুন ব্যালিস্টিক মিসাইলের জন্য স্টারট-এক্স গবেষণা শুরু করে,[১] যেটি উন্নতমানের আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (এআইসিবিএম) উদ্ভাবন করেছিলো। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর জন্য 'এলজিএম-৩০ মিনিটম্যান' এর স্থানে আরো অত্যাধুনিক মানের ক্ষেপণাস্ত্র সংযোজন করা।[২] ১৯৬৬ সালের এপ্রিলে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় এবংন জুন মাসে প্রকল্পটি 'যেডবিজিএম-৭৫' নামধারন করে,[২] প্রকল্পের নামের পূর্বে যেড অক্ষরটি ইঙ্গিত করে যে প্রকল্পটি পরিকল্পনাধীন রয়েছে।[৩]
একটি বৃহৎ সলিড ফুয়েল শক্তিচালিত মিসাইল হিসেবে 'যেডবিজিএম'কে নিরধারন করা হয়,[৪] যেটি ১০ ও ২০ 'এমআইআরভি' তে লাগানো হবে।[৫] মিসাইলটি মূলত সাইলো উৎক্ষেপক ভিত্তিক হবে, যেটি মিনিটম্যান মিসাইলের জন্য ব্যবহৃত সাইলোর তুলনায় ১০ গুন অধিক শক্তিশালী হবে।[৬] এছাড়াও এই মিসাইলের জন্য রেলপথ ব্যবহার উপযোগী স্থাপনা (এআইসিবিএম) নির্মাণের পরিকল্পনা ছিলো।[২] প্রতিটি মিসাইলের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য বিদ্যমান মিসাইলের তুলনায় অধিক নির্ভুল নিশানা এবং অনুপ্রবেশ ক্ষমতা উন্নত করা হয়। সে সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের ব্যবহৃত এবং পরিকল্পনাধীন মিসাইলের তুলনায় অধিক কার্যকারী মিসাইল তৈরিই ছিলো এই প্রকল্পের লক্ষ্য।[৫]
বিলোপসাধন[সম্পাদনা]
পরবর্তীতে মার্কিন নৌবাহিনী ওহাইও ক্লাস ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিনের নকশা তৈরির মাধ্যমে স্টারট-এক্স প্রতিযোগিতায় জয় লাভ করে। তবুও ১৯৬৭ সালের আগস্টে ইস্যুকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যেডবিজিএম-৭৫ মিসাইল উন্নত করার সুপারিশ করা হয়।[৭] সে অনুযায়ী বাহিনী প্রধানগণ ১৯৬৯ অর্থ বছর হতে যেডবিজিএম এর জন্য অর্থ বরাদ্দ করার জন্য মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব রবার্ট ম্যাকনামারার নিকট সুপারিশ করেন, যার লক্ষ্য হবে ১৯৭৩ সালের মধ্যে মিসাইলটিকে পরিষেবায় নিজুক্ত করা।। বিমানবাহিনী মিসাইল এবং নতুন মজবুত সাইলো নিয়ে গবেষণা করার পরে এই সুপারিশ করে। এর পরিবর্তে ম্যাকনামারা মিসাইলটিকে আরো অধিক উন্নয়নের জন্য রেখে দেন, ফলে এই প্রকল্পের সকল কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শুধুমাত্র অধিক মজবুত সাইলোর উন্নয়নের জন্য অর্থবরাদ্দ করা হয়; যেটি মূলত মিনিটম্যান মিসাইলের জন্য ব্যবহার করা হবে।[৫] এর ফলে মিসাইলটির উন্নয়ন কার্যক্রম বাতিল করা হয়।[২] নতুন মিসাইলের আসন্ন প্রভাবের কথা বিবেচনা করে ম্যাকনামারা এই প্রকল্পটি বাতিল করেন, তার ধারণা ছিলো এটি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রচলিত এন্টি ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থাকে অকার্যকর করে দেবে। ম্যাকনামারা দুই পরাশক্তির মধ্যে আপেক্ষিক সমতা লক্ষ্য করেছিলেন, পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে ধ্বংসের পদ্ধতিতেই তিনি বিশ্বাসী ছিলেন, তার লক্ষ্য ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে আসা যেন তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মধ্যস্থতা করতে বাধ্য হয়।[৮]
ডব্লিউএস-১২০এ প্রকল্প বাতিল হবার পরে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বিমানবাহিনী নতুন কোন আইসিবিএম এর উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়নি। সে বছরেই এম-এক্স প্রজেক্ট চালু হয়, যার মাধ্যমে এলজিএম-১১৮ পিসকিপার এর উন্নয়ন করা হয়।[২] পিস্কিপার ১৯৮০র দশকের মাঝামাঝি সময়ে পরিষেবায় যুক্ত হয় এবং এটি ২০০৫ সাল পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলো;[৯] মিনিটম্যান ৩ এখনো সেবা প্রদান করছে, এটি পরিকল্পিত সময় অতিক্রান্ত হবার পরেও অধিক সময় সেবা প্রদান করছে।[১০]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
টিকা
গ্রন্থপঞ্জি
- Auten, Brian J. (২০০৮)। Carter's Conversion: the hardening of American defense policy। Columbia, MO: University of Missouri Press। আইএসবিএন 978-0-8262-1816-2। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-০৭।
- Edwards, Joshua S. (২০০৫-০৯-২০)। "Peacekeeper missile mission ends during ceremony"। United States Air Force। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-০৭।
- Friedman, Norman (১৯৯৪)। US Submarines Since 1945: An Illustrated Design History। Annapolis, MD: Naval Institute Press। আইএসবিএন 1557502609।
- Hartunian, Richard (২০০৩)। "Ballistic Missiles and Reentry Systems: The Critical Years"। Crosslink। Directory of U.S. Military Rockets and Missiles। El Segundo, CA: The Aerospace Company। ২০১২-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-০৭।
- Parsch, Andreas (২০০৩)। "BGM-75 AICBM"। Directory of U.S. Military Rockets and Missiles। designation-systems.net। ২০১০-১২-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-০৭।
- Parsch, Andreas (২০০৯)। "Current Designations of U.S. Unmanned Military Aerospace Vehicles"। designation-systems.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-১০।
- Tammen, Ronald L. (১৯৭৩)। MIRV and the Arms Race: An Interpretration of Defense Strategy। Westport, CT: Praeger। এএসআইএন B000JNG51G।