বারাকাত আহমদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বরকত আহমদ (মৃত্যু ১৯৮৮) একজন আহমাদি পণ্ডিত এবং ভারতীয় কূটনীতিক ছিলেন। তিনি বৈরুতের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরব ইতিহাসে এবং তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্যে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। আহমদ অস্ট্রেলিয়ার ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাইকমিশনার এবং জাতিসংঘে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি জাতিসংঘের বর্ণবাদ বিশেষ কমিটির র‍্যাপোর্টার হিসেবেও কাজ করেছেন এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের একজন ফেলো ছিলেন। ১৯৮৮ সালে ব্লাডার ক্যান্সারের ফলে আহমদ মারা যান।

মুহাম্মাদ ও মদিনার ইহুদিদের সম্পর্কে প্রচলিত ধারণার পুনর্মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

আহমদ দাবি করেন, যথরীবের (মদিনার পূর্বতন নাম) ইহুদি সম্প্রদায় নিয়ে স্বাধীন গবেষণার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনিই প্রথম। তার "Muhammad and the Jews: A Re-examination" বইয়ে তিনি মুহাম্মদের নির্দেশে বনু কাইনুকা গোত্রের বহিষ্কার এবং বনু কুরাইজা গোত্রের গণহত্যার প্রচলিত বর্ণনার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

মুহাম্মদের প্রাচীনতম জীবনীগ্রন্থ হল ইবনে ইসহাকের (মৃত্যু ৭৬৮ খ্রিস্টাব্দ) দীর্ঘদিন ধরে লুপ্ত "Life of the Apostle of God" বইটির ইবনে হিশাম কর্তৃক সংকলিত সংস্করণ। আহমদ যুক্তি দেন যে, মুসলিম ইতিহাসবিদরা এবং প্রাচ্যবিদরা এটি বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছেন যে, ইবনে ইসহাকের বইটি মুহাম্মাদের মৃত্যুর ১২০ থেকে ১৩০ বছর পরে আব্বাসীয় খিলাফতের সময়কালে লেখা হয়েছিল, এবং এর বর্ণনার উপর সেই সময়কার পরিস্থিতির গভীর প্রভাব পড়েছিল। আহমদ ইবনে ইসহাককে একজন আন্তরিক ইতিহাসবিদ হিসাবে গ্রহণ করেন, তবে তিনি বলেন যে, "একজন ইতিহাসবিদ তার সময়ের অংশ। তিনি তার চারপাশের বদ্ধমূল ধারণাগুলি থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেন না।" তিনি আরও যুক্তি দেন যে, "মুহাম্মদ এবং ইহুদিদের মধ্যকার সম্পর্ক সম্পর্কে ইবনে ইসহাকের দৃষ্টিভঙ্গি আব্বাসীয়দের শাসনামলে ইহুদি জীবন নিয়ে তার নিজের প্রতিক্রিয়ার দ্বারা দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। "

আহমদ আরও যুক্তি দেখান যে ইবনে ইসহাকের বর্ণনা সঠিক হতে পারে না, কারণ উদাহরণস্বরূপ, মদিনার মতো একটি ছোট শহরের জন্য ৬০০-৯০০ লোককে শিরশ্ছেদ করা এবং তাদের কবর দেওয়া শারীরিকভাবে অসম্ভব ব্যাপার হতো। তিনি আরও লেখেন যে লাশগুলি স্বাস্থ্যের প্রতি সুস্পষ্ট হুমকি হতো।

তার থিসিসকে সমর্থন করার জন্য, আহমদ ইহুদি সূত্রের এই অভিযুক্ত নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে নীরবতার দিকেও ইঙ্গিত করেন।

হ্যারল্ড কাসিমো, ১৯৮২ সালে জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান একাডেমি অফ রিলিজিয়নের জন্য একটি পর্যালোচনাতে লিখেছেন:

ডঃ আহমদ সমস্ত প্রাথমিক ইসলামিক উৎস এবং সেই সময়ের সাথে সম্পর্কিত ইহুদি রচনাগুলি সাবধানতার সাথে বিবেচনা করেছেন ... যদিও আমি উপস্থাপিত প্রমাণগুলো দ্বারা পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলাম না, আমার পড়ার সময় কিছু মুহূর্ত ছিল যখন ডাঃ আহমদ সত্যিই আমার মনে সেই সময়ের প্রথাগত ইতিহাসের নির্ভুলতা সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করেছিলেন। আর সেটাই ছিল তার উদ্দেশ্য।