বলিপীঠ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কোলার সোমেশ্বর মন্দিরের বলিপিঠ

বলিপীঠ (সংস্কৃত: बलिपीठम्) হল হিন্দু মন্দিরের যজ্ঞের বেদী। বলিপীঠগুলো সাধারণত প্রস্ফুটিত পদ্মের আকারে নির্মিত হয়, এবং মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বারের কাছে স্থাপন করা হয়।[১] পিণ্ড হিসাবে উল্লেখ করা বলের মত চালের নৈবেদ্য সাধারণত বলিপীঠের অনুগামীরা তৈরি করে।[২][৩]

বুৎপত্তি[সম্পাদনা]

বলিপীঠ হল একটি সংস্কৃত যৌগিক শব্দ: বলি প্রদত্ত দেবতাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য করা আচারিক নৈবেদ্যকে বোঝায়,[৪] যেখানে পীঠ এর অর্থ আসন।[৫]

বিবরণ[সম্পাদনা]

পৌরানিক হিন্দুধর্মের আবির্ভাবের পর, বারান্দায় অবস্থিত ধ্বজস্তম্ভ সহ বলিপীঠ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য হিন্দু মন্দিরগুলির আকার প্রসারিত হয়।[৬] বলিপীঠ সাধারণত পাথরের মঞ্চে স্থাপন করা লটিফর্ম বেদী দিয়ে তৈরি করা হয়। লোটিফর্ম বেদীও পাথরের তৈরি। এটি বর্গাকার ভিত্তি নিয়ে গঠিত যার উপর পদ্মের চিহ্ন সহ উল্টানো কাপের মতো কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে, যার মধ্যে আটটি পাপড়ি রয়েছে যা ভিত্তির দিকে চ্যাপ্টা গোলাকার শীর্ষ সহ প্রশস্ত হয়। ব্রাহ্মণ্য ঐতিহ্য মেনে চলা মন্দিরের বলিপীঠগুলো প্রচলিতভাবে অনুগামীদের কাছ থেকে চাল ও ফুলের নৈবেদ্য গ্রহণ করে, যেখানে মন্দিরের যে উইসবগুলিতে পশু বলি জড়িত থাকে সেগুলি ছাগলের মতো পশুর মাথা গ্রহণ করে।[৭]

প্রতীকবাদ[সম্পাদনা]

বলিপীঠ রূপক আসন হিসাবে কল্পনা করা হয় যেখানে প্রদত্ত দেবতা বাস করেন,[৮] এবং কখনও কখনও প্রদত্ত দেবতার পদচিহ্ন দ্বারা অঙ্কিত হয়। আচার অনুষ্ঠানের সময় কাঠামোর উপর সিঁদুর স্থাপন করা হয়, যা অনুচর দেবতাদের আনুষ্ঠানিক খাওয়ানোর প্রতিনিধিত্ব করে।[৯] বেদীটিকে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশের আগে অনুগামীদের অহং ও আকাঙ্ক্ষার বলিদানের প্রতীক হিসাবেও বিবেচনা করা হয়।[১০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Princeton University Press, New Jersey। The Art Of Indian Asia ( Its Mythology And Transformations) Vol. 1 By Heinrich Zimmer, Edited By Joseph Campbell, Bollingen Series 39 Princeton University Press, New Jersey। পৃষ্ঠা 287–288। 
  2. Stutley, Margaret (২০১৯-০৪-০৯)। The Illustrated Dictionary of Hindu Iconography (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা 80। আইএসবিএন 978-0-429-62425-4 
  3. Keul, István (২০১৭-০২-০৬)। Consecration Rituals in South Asia (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। পৃষ্ঠা 115। আইএসবিএন 978-90-04-33718-3 
  4. Ben-Herut, Gil; Keune, Jon; Monius, Anne E. (২০১৯-০৭-১৯)। Regional Communities of Devotion in South Asia: Insiders, Outsiders, and Interlopers (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা 175। আইএসবিএন 978-1-351-02336-8 
  5. Mehta, Tarla (১৯৯৫)। Sanskrit Play Production in Ancient India (ইংরেজি ভাষায়)। Motilal Banarsidass Publ.। পৃষ্ঠা 273। আইএসবিএন 978-81-208-1057-0 
  6. Eraly, Abraham (২০১৪-০৫-০১)। The First Spring Part 2: Culture in the Golden Age of India (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin Books Limited। পৃষ্ঠা 312। আইএসবিএন 978-93-5118-646-5 
  7. Hiltebeitel, Alf (১৯৮৮)। The Cult of Draupadi, Volume 2: On Hindu Ritual and the Goddess (ইংরেজি ভাষায়)। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 135। আইএসবিএন 978-0-226-34047-0 
  8. Acri, Andrea; Sharrock, Peter (২০২২-০৪-১২)। The Creative South: Buddhist and Hindu Art in Mediaeval Maritime Asia, volume 1 (ইংরেজি ভাষায়)। ISEAS-Yusof Ishak Institute। পৃষ্ঠা 315। আইএসবিএন 978-981-4951-49-4 
  9. Bhattacharyya, Ashim Kumar (ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। Hindu Dharma: Introduction to Scriptures and Theology (ইংরেজি ভাষায়)। iUniverse। পৃষ্ঠা 200। আইএসবিএন 978-0-595-38455-6 
  10. Swahananda, Swami (২০২৩-০১-২০)। Hindu Symbols (ইংরেজি ভাষায়)। Sri Ramakrishna Math। পৃষ্ঠা 27।