বিষয়বস্তুতে চলুন

ফোটোনিক্স

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
একটি প্রিজম দ্বারা আলোর (ফোটন) বিচ্ছুরণ।

ফোটোনিক্স হল নির্গমন, সঞ্চালন, পরিবর্তন, সংকেত প্রেরণ, সুইচিং এবং সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে আলো (আলোক কণা) সৃষ্টি, উদ্ঘাটন, এবং নিপুণরুপে ব্যবহার করবার পদার্থ বিজ্ঞান। যদিও আলোর সমস্ত প্রযুক্তিগত ব্যবহার আলোর সর্ম্পূন বর্ণালী জুড়ে ব্যাষ্টিত, সর্বাধিক ভাবে ব্যবহৃত আলো দৃশ্যমান এবং অবলোহিত পরিসরেই বর্তমান। ফোটোনিক্স শব্দটির সৃষ্টি হল ১৯৬০ সালে আবিষ্কৃত প্রথম ব্যবহারিক আলো নির্গমনকারি অর্ধপরিবাহী ও ১৯৭০ সালে আবিষ্কৃত আলক বাহী তন্তুর পরিণাম।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ফোটোনিক্স শব্দটি গ্রীক শব্দ "ফোস" বা আলো (এটি জেনেটিভ ব্যাকরণ "ফোটোস" থেকে উদ্ঘাটিত এবং যৌগিকভাবে "ফোটো" রূপে ব্যবহারিত) থেকে জাত; এটির ব্যবহার ১৯৬০ সালের শেষের দশকে একটি গবেষণামূলক ক্ষেত্রের বিবরণে প্রথম দেখা যায়, যার লক্ষ্য ছিল আলোর মাধ্যমে সেই সমস্ত কার্যসমূহ সম্পন্ন করা যা প্রথাগত ভাবে ইলেক্ট্রনিক্সে ( বৈদ্যুতিন পদার্থবিদ্যা ) যেমন টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রক্রিয়াকরণ ইতাদ্যির ক্ষেত্রে ব্যবহারিত হত।

ফোটোনিক্স একটি ক্ষেত্র হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে লেসার রশ্মি আবিষ্কৃত হওয়ার পরে। পরবর্তি সময়ের আবিষ্কার গুলির মধ্যে, ১৯৭০ সালের লেসার ডায়োড, তথ্য সঞ্চালনের জন্য আলকবাহী তন্তু, এবং আরবিয়াম-ডোপ্ড তন্তু জাতীয় সম্প্রসারক (ফাইবার আ্যম্পলিফায়ার) উল্লেখযোগ্য। এই বিবিধ উদভাবনগুলি ই বিংশ শতাব্দীতে টেলিযোগাযোগ বিপ্লবের প্রধান কান্ডারি এবং ইন্টারনেট পরিকাঠামোর ভিত্তি প্রদানকারী।

যদিও বহুবিধ প্রতিষ্ঠিত, ফোটোনিক্স শব্দটি সর্বসাধারনের ব্যবহারে ১৯৮০ এর দশকে আলোকতন্তুবাহী তথ্যাবলী সঞ্চালনে আসে টেলি্যোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। তদানিন্তন বেল্ গবেষণাগারে এই শব্দটির অতিমাত্রায় প্রচলন ছিল। এই শব্দটির আস্তিত্ত্ব নিশ্চিতরূপে স্বীকৃতি লাভ করে যখন আই ই ই ই লেসারস এবং ইলেক্ট্রো-অপটিক্স স্ংস্থা ১৯৮০ এর শেষ দশকে ফোটোনিক্স টেকনলজি লেটারস নামক একটি সংরক্ষিত পত্রিকা প্রকাশ করে।

যে কালে ডট-কম ক্র্যাশ, সিরকা ২০০১ ঘটনার আত্মপ্রকাশ, তদকালিন ফোটোনিক্স একটি বিষয় বা ক্ষেত্র রূপে গড়ে উঠেছিল আলকবাহী টেলিযোগাযোগ কে কেন্দ্র করে। কিন্তু ফোটোনিক্সের ব্যবহার বৃহৎ আকারে বেষ্টিত নানাবিধ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন লেসার উৎপাদন, জৈবিক ও রাসায়নিক সনাক্তকরণ, চিকিৎশাস্ত্র, ডিসপ্লে প্রযুক্তি এবং অপটইকাল কম্পিউটিং কে ঘিরে। ভবিষ্যতে ফোটোনিক্সের ক্রমবিকাশ সম্ভব যদি আধুনিক সিলিকন ফোটোনিক্সের অগ্রগতি সফলতা লাভ করে।

চিরায়িত আলোকবিজ্ঞান

[সম্পাদনা]

ফোটোনিক্স এবং চিরায়িত আলকবিজ্ঞান বা অপটিক্স পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। চিরায়িত আলকবিজ্ঞান, আলো যে কোয়ান্টাইসড এই তত্তের বহু আগে আবিষ্কৃত হয়, যখন আলবার্ট আইন্স্টাইন বিখ্যাত আলকতরিৎ ক্রিয়া বা ফোটোইলেকট্রিক এফেক্ট কে বিবৃত করেন ১৯০৫ সালে। অপটিক্স সরঞ্জাম গুলির মধ্যে, প্রতিসারক লেন্স, প্রতিফলক আয়না, এবং আরও অপটিকাল উপাদান এবং যন্ত্রাংশ গুলির সৃষ্টি ১৫ শতক থেকে ১৯ শতকে। চিরায়িত আলকবিজ্ঞানের কিছু প্রধান মতবাদ যেমন ১৭ শতকে উদভাবিত হাইগেনের নীতি, ১৯ শতক এ আবিষ্কৃত ম্যাক্সওয়েল এর সূত্র এবং ওয়েভ নীতি আলোর কোয়ান্টাম বৈশিষ্ট গুলির উপর নির্ভর করেনা।

আধুনিক আলোকবিজ্ঞান

[সম্পাদনা]

ফোটোনিক্স, কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান, আলোক সম্পর্কিত বলবিদ্যা (অপ্টোমেকানিক্স), ইলেকট্রো-অপ্টিক্স, অপ্টোইলেক্ট্রনিক্স, কোয়ান্টাম ইলেক্ট্রনিক্স এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। যদিও, প্রতিটি শব্দ সূক্ষ কিন্তু ভিন্ন অর্থ বহন করে, বৈজ্ঞানিক ও সরকারি সম্প্রদায় এবং শিল্পসভায়। বহুসময় কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান ( কোয়ান্টাম অপ্টিক্স) মৌলিক গবেষণাকে নির্দেশ করে, অপরপক্ষে ফোটোনিক্স ব্যবহারিক গবেষণা ও উন্নয়ন এর প্রতি আনত।

ফোটনের কণাতত্ত্ব

ফোটোনিক্স শব্দটি নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করেঃ

  • আলোর কণা প্রকৃতি
  • ফোটোন দ্বারা সিগনাল প্রসেসিং যন্ত্র সম্পর্কিত প্রযুক্তির সম্ভাব্য বিকাশ
  • অপ্টিক্সের কার্যকারিতা, এবং
  • ইলেকট্রনিক্সের সাথে সাদৃশ্য

অপ্টোইলেক্ট্রনিক্স শব্দটির অন্তর্নিহিত অর্থ হল যন্ত্র ও সার্কিট যা বৈদ্যুতিক বা ইলেক্ট্রিকাল এবং অপটিকাল দুধরনের কার্যই সম্পন্ন করতে সক্ষম যেমন একটি থিন-ফিল্ম অর্ধপরিবাহী যন্ত্র। ইলেক্ট্র-অপটিক্স শব্দটি পুর্বপ্রচলিত এবং নির্দিষ্টভাবে অরৈখিক ইলেক্ট্রিকাল-অপটিকাল পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া যেমন বাল্ক ক্রিস্টাল মডুলেটরসের পকেল কোষকে পরিবেষ্টন করে, অপরপক্ষে উন্নত চিত্র সনাক্তকরণ (বা ইমেজ সেন্সিং) , সাধারণত সরকারি সংস্থা দ্বারা নজরদারির জন্য প্রয়জনীয়, বিষয়সমুহকেও ধারণ করে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]