প্রতিরোধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

প্রতিরোধ বা সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ (ইংরেজি: resistance) বলতে অন্য দেশের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোকে বুঝায়। অর্থাৎ উন্নতপুঁজিবাদী দেশগুলো যখন অন্য দেশের উপর আধিপত্য বিস্তার করে তখন সংশ্লিষ্ট দেশ বা ঐ দেশের সংস্কৃতি যখন আধিপত্য বিস্তারকারী দেশ বা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাই প্রতিরোধ বা সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ হিসেবে প্রতিভাত হয়।

বিশ্বায়ন হচ্ছে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশ, জাতি ও অঞ্চলের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্কের একটি নেটওয়ার্ক, যেখানে জাতীয়, আঞ্চলিক বা মহাদেশীয় দূরত্বকে অতিক্রম করে বিশ্বব্যাপী পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও আন্তঃসম্পর্ক সৃষ্টি করে। বিশ্বায়নের ফলশ্রুতিতে পুঁজিবাদী উন্নত রাষ্ট্রগুলো অনুন্নত রাষ্ট্রগুলোর উপর অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও সংস্কৃতির অবাধ প্রবাহের কারণে পুঁজিবাদী দেশগুলোর সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে অনুন্নত দেশগুলোতে প্রথা, রীতি-নীতি, লোকাচার ও ধর্মীয় অনুশাসনের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে, সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় হচ্ছে এবং দেশীয় সংস্কৃতি প্রচণ্ড হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। আকাশ সংস্কৃতির বদৌলতে পশ্চিমা সংস্কৃতি অনুন্নত দেশের সংস্কৃতিকে গ্রাস করছে। খাবার-দাবার, সংগীত, নৃত্য, ভাষা, চলচ্চিত্র, পোশাক-পরিচ্ছদ তথা সামগ্রিক জীবন-যাপনে ব্যাপক পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে।

পাশ্চাত্য সংস্কৃতির এই অব্যাহত অনুপ্রবেশ ও আগ্রাসনের কবল থেকে অনুন্নত দেশগুলো তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে রক্ষা করার অব্যাহত প্রচেষ্টা থাকে এবং সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

বস্তুত পুঁজিবাদী দেশগুলোর সাংস্কৃতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে অনুন্নত দেশগুলো তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে সমুন্নত রাখার জন্য যে আন্দোলন বা বাধার সৃষ্টি করে তাই হলো প্রতিরোধ।