বিষয়বস্তুতে চলুন

গভর্নমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লেদার টেকনোলজি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গভর্নমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লেদার টেকনোলজি
প্রাক্তন নামসমূহ
ক্যালকাটা রিসার্চ ট্যানারি
বেঙ্গল ট্যানিং ইন্সটিটিউট
কলেজ অফ লেদার টেকনোলজি
ধরনসরকারি প্রকৌশল কলেজ
স্থাপিত১৯১৯
প্রতিষ্ঠাতাড. বিরাজ মোহন দাস[]
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পূর্বে ডাবলুবিইউটি নামে পরিচিত)
অধ্যক্ষডঃ সঞ্জয় চক্রবর্তী (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা)
স্নাতক৬৫০
স্নাতকোত্তর৫০
অবস্থান,
শিক্ষাঙ্গনশহরাঞ্চলীয়
অনুমোদনএআইসিটিই
ওয়েবসাইটhttp://gcelt.gov.in
মানচিত্র

গভর্নমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লেদার টেকনোলজিবা সংক্ষেপে জিসিইএলটি হলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত চামড়া প্রযুক্তির বিভিন্ন পাঠক্রমের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, তথ্য প্রযুক্তি এবং চামড়া প্রযুক্তিতে স্নাতক স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স, জুতা এবং চামড়ার পণ্য তৈরিতে ডিপ্লোমা এবং চামড়া প্রযুক্তিতে এম.টেক পাঠক্রম পড়ানো হয়। কলেজটি মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (পূর্বে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি নামে পরিচিত ছিল)[] এবং সর্ব ভারতীয় কারিগরি শিক্ষা পর্ষদ (এআইসিটিই) দ্বারা অনুমোদিত।[]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

১৯১৯ সালে ক্যালকাটা রিসার্চ ট্যানারি নাম নিয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। ১৯১৫ সালে মিউনিশন্স বোর্ডের সুপারিশে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতে দেশীয় চামড়াজাত উপাদানসমূহের সদ্ব্যবহার করে চামড়াজাত শিল্পের উন্নতির জন্যে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। যাতে দেশীয় পশুর ছাল, চামড়াজাত সামগ্রী কাজে লাগিয়ে চামড়া শিল্পের উন্নতির পথ সুগম হয়।[]      

১৯২৬ সালে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বদল করে নতুন নাম দেওয়া হয় বেঙ্গল ট্যানিং ইন্সটিটিউট। কালক্রমে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। সেইসময় এখানে চামড়া ট্যানিংয়ের একটি সার্টিফিকেট কোর্স চালু করা হয়। ১৯৫৫ সালে চামড়া প্রযুক্তি বিষয়ে স্নাতক শিক্ষাক্রম বিএসিস (টেক) শুরু হয়। ১৯৫৮ সালে আবার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বদল করে নতুন নাম রাখা হয় কলেজ অফ লেদার টেকনোলজি।[]

আগের ক্যালকাটা রিসার্চ ট্যানারি এবং বেঙ্গল ট্যানিং ইনস্টিটিউট এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস ছিল ক্যানাল সাউথ রোড, বেলেঘাটা (বর্তমানে সেই জায়গাটি আরসিসিআইআইটি প্রতিষ্ঠানের কলেজের ক্যাম্পাস)। ১৯৯৪ সালে গভর্নমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লেদার টেকনোলজির ক্যাম্পাসটি ক্যানাল সাউথ রোড থেকে সল্টলেক সিটির বর্তমান ঠিকানায় স্থানান্তরিত হয়।[]

১৯৯৯-২০০০ সালে চামড়া প্রযুক্তিতে বিটেক পাঠক্রম শুরু করার পাশাপাশি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে বিটেক পাঠক্রম শুরু হয়। ২০০০-২০০১ সালে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিটেক শিক্ষাক্রম চালু করে।

বর্তমান অবস্থা

[সম্পাদনা]

গভর্নমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লেদার টেকনোলজি আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন।[]

পাঠক্রম

[সম্পাদনা]

এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন টেকনোলজি, লেদার টেকনোলজি এবং লেদার টেকনোলজিতে এম.টেক কোর্স পড়ানো হয়। এখানে 'বুট অ্যান্ড শু ম্যানুফ্যাকচারিং' বিষয়ে একটি সার্টিফিকেট কোর্সও চালু আছে।

কার্যক্রম

[সম্পাদনা]
ইঞ্জিনার্ডস ২০১৩ কোর টিম

নবীন বরণ উৎসব

[সম্পাদনা]

নবীন বরণ উৎসবের মাধ্যমে এই কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত জানানোর জন্যে হয়ে থাকে। সাধারণত দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা বিশেষ উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে এই নবীন বরণ উৎসব সংগঠিত করে। এই বিশেষ দিনটিতে নবাগতদের জন্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে দুপুরের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই কার্যক্রম ডিজে সন্ধ্যা দিয়ে শেষ হয়। নবীন বরণ উৎসব কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

  • প্রযুক্তি জমায়েত - ইঞ্জিনার্ডস[3] - প্রকৌশল ছাত্রছাত্রীদের জন্যে জমায়েত (fest) মানে হচ্ছে সাংস্কৃতিক কর্যক্রমের চেয়ে বেশি কিছু, এবং এটা মনে রাখা দরকার যে, জিসিইএলটি ছাত্রছাত্রীরা প্রতি বছর মহা উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আনন্দের সঙ্গে এর বার্ষিক প্রযুক্তি জমায়েত - 'ইঞ্জিনার্ডস' সংগঠিত করে।

ইঞ্জিনার্ডস প্রথম বার সংগঠিত হয়েছিল ২০১০ খ্রিস্টাব্দে, এবং সেই শুরুর পর্ব থেকেই এই কার্যক্রম সারা পশ্চিমবঙ্গের উভয় ধরনের, প্রকৌশল ও সাম্মানিক মহাবিদ্যালয়গুলো থেকে, ভীষণভাবে সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। 

  • সাংস্কৃতিক জমায়েত - পুনর্মিলন[4] - পুনর্মিলন হল জিসিইএলটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, যেখানে সমস্ত প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এবং বর্তমান ছাত্রছাত্রী এক ছাদের তলায় একসঙ্গে মিলিত হয়। এই কার্যক্রমে সমস্ত প্রবীণ ছাত্রছাত্রী, নবীন ছাত্রছাত্রী এবং সহপাঠী মহা আনন্দ এবং খুশির সঙ্গে তাদের ধারণা, ভাবনা ও উপলব্ধি  আদান-প্রদান করে। এটা সকলকে কয়েকটা রঙিন সন্ধ্যা উপহার দেয়, যেখানে পুরোনোরা তাদের সুখস্মৃতিকে খুজে পায় এবং নতুনরাও তাদের সঙ্গে উপভোগ করে। 

প্রত্যেক বছর পুনর্মিলন সংগঠিত করার জন্যে একটা নতুন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে প্রত্যেক পাঠক্রম থেকে সদস্যদের নেওয়া হয় এবং বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদেরও এই কমিটিতে সামিল করা হয়। কার্যক্রমের সংগঠনের সমস্ত দায়িত্ব থাকে কমিটির সদস্যদের ওপর। কার্যক্রমে পুনর্মিলনের অঙ্গ হল: উদ্বোধন, মহাবিদ্যালয়ের প্রদর্শন, প্রাক্তনীদের প্রতি উৎসর্গ, রবীন্দ্র সংগীত, বৃন্দগান প্রদর্শন এবং অবশেষে থাকে ডিজে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Foundation Day Celebration" 
  2. "State to name WBUT after Maulana Abul Kalam Azad"kolkatatoday (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ নভেম্বর ২০১৪। ১০ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
  3. "Official Website"Govt. College of Engineering & Leather Technology (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
  4. "Government College of Engineering and Leather Technology"gcelt.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪