পিয়লি বরুয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পিয়লি বৰুৱা
গুয়াহাটির ভরলুমুখে অবস্থিত শহীদ বেদীতে বাওঁদিক থেকে চতুর্থতম ব্যক্তি পিয়লি ফুকন
জন্ম
পিয়লি বরুয়া

মৃত্যু২৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৮[১]
মৃত্যুর কারণফাঁসী
পরিচিতির কারণস্বাধীনতা সংগ্রামী
অপরাধের শাস্তিফাঁসী

পিয়লি বরুয়া (অসমীয়া: পিয়লি বৰুৱা); (ইংরেজি: Piyoli Baruah) আসামের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি। তিনি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন। ব্রিটিশ বিরোধিতা করার জন্য তাঁকে ১৮৫৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে ফাঁসী দেওয়া হয়।

স্বাধীনতা আন্দোলন[সম্পাদনা]

১৮২৬ সালে ইয়ান্ডাবু সন্ধির ফলে আসামের শাসন ব্যবস্থা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর হাতে ন্যস্ত হয়। প্রথম অবস্থায় ব্রিটিশের শাসন সকলে মেনে নিয়েছিল যদিও কিছু দিনের পর জনতার মনে ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠে। সেই সময়ে রাজনীতি বিশারদ, রাষ্ট্রজ্ঞানী মণিরাম দেওয়ান জনগণের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিটিশ কর্মকতা জর্জ অ্যানড্রেও মোফাট মিলসকে সাক্ষাৎ করে জণগণের প্রতিক্রিয়া অবগত করে দুইটি পত্র প্রদান করেন। তারপর তিনি পুনরায় মিলস্ এবং হলরইদকে সাক্ষাৎ করে দেশের শাসনভার রাজার হাতে অর্পণ করার আহ্বান জানান। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী আহ্বানটি উপেক্ষা করে তাই মণিরাম দেওয়ান গণ আন্দোলনের সূচনা করেন। উল্লেখযোগ্য যে আন্দোলনটিতে পিয়লি বরুয়া, বাহাদুর গাওঁবুড়া, ঘরফলীয়া বরুয়া, মরংগীখোয়া গোহাই, রাম সিরস্তদার বরুয়া ইত্যাদি অনেক অসমীয়া তেজস্বী আন্দোলনকারীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠায় মিলস ও হলরইদ সাহেব গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়। পর্বতীয়া নেতাদের থেকে সাহায্যের উদ্দেশ্যে মণিরাম দেওয়ান মণিপুরী কন্যা ফুলকুমারীকে প্রেরণ করেন। ফিরে আসার সময় হরনাথ দারোগার হাতে ফুলকুমারী বন্দী হয়। ব্রিটিশের কামনার বলি হওয়ার ভয়ে তিনি দুতিরাম বরুয়ার অনুগ্রহে রাজকারেংয়ে আশ্রয় নেয়। পরবর্তি সময়ে তিনি মণিরাম দেওয়ানের গণ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এদিকে মিলস সাহেব স্বদেশে ফিরে যায় ও হলরইদ সাহবের সাহায্যের জন্য ক্যাপ্টেন লুথারকে নিয়োগ করা হয়। তাঁরা আসামের সকল প্রধান কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ করে রংপুরে এক সভার আয়োজন করে। অন্যদিকে ফুলকুমারীর সাহায্যে ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সুরার নেশায় মগ্ন করিয়ে মণিরাম দেওয়ান কলকাতায় পালিয়ে গিয়ে বরলাটের সাথে সাক্ষাৎ করে। কিন্তু এই সাক্ষাৎ নিষ্ফল হওয়ায় তিনি ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহে যোগদান করেন। পিয়লি বরুয়া গণ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে এবং কলকাতার থেকে পাওয়া নির্দেশমতে কারেংয়ে অত্যন্ত গোপনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত করে। হলরইদ সাহেব বিদ্রোহ দমনের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা করেন। হরনাথ দারোগা বলেন যে রাজকেরেং আক্রমণ করলে বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব।

কারেংয়ের নিবাসী সেউতী পিয়লি বরুয়াকে প্রেম নিবেদন করেছিল কিন্তু তিনি এই প্রেম অস্বীকার করেছিলেন তাই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সেউতি কারেংয়ের গোপন পথের সন্ধান লুথারকে বলে দিয়েছিল। এই সুযোগে বৃটিশেরা দুর্গ আক্রমণ করে পিয়লি বরুয়াকে বন্দী করে।

মৃত্যুদণ্ড[সম্পাদনা]

কলকাতা থেকে পাঠানো চিঠির আধারে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং বিচারে পিয়লি বরুয়া ও মণিরাম দেওয়ানের ফাঁসীর আদেশ দেওয়া হয়। ১৮৫৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে ব্রিটিশ সরকারের আদেশে যোরহাটে মণিরাম দেওয়ান ও পিয়লি বরুয়াকে ফাঁঁসীতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়[১][২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Guptajit Pathak (২০০৮)। Assamese Women in Indian Independence Movement: With a Special Emphasis on Kanaklata Barua। Mittal Publications। পৃষ্ঠা ৭৫। আইএসবিএন 978-81-8324-233-2। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ছেপ্টেম্বৰ ২০১৯  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. DEBASHISH BEZBARUAH। "159th death anniversary of Swahid Piyali Baruah today"। The Assam Tribune। ২ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ছেপ্টেম্বৰ ২০১৯  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)