পাঞ্জাবী লোকসঙ্গীত
পাঞ্জাবী লোকসংগীত (পাঞ্জাবী:ਪੰਜਾਬੀ ਲੋਕ ਸੰਗੀਤ) পাঞ্জাবের একটি ঐতিহ্যগত সঙ্গীত।[১][২] পাঞ্জাবের উপ-অঞ্চলগুলির ব্যাপ্তীর দরূন পাঞ্জাবী লোকসঙ্গীতে খানিকটা ভাষাগত তারতম্য দেখা যায়। উপ-অঞ্চলগুলির মধে্য মালয়া, দোয়াবা, মাঝা, পোথয়ার, পুওধ এবং কিছু পাহাড়ি অঞ্চল যেখানে লোকসঙ্গীতের অনেকটাই তারতম্য দেখা যায়। ভাঙ্গরা সঙ্গীতের সাথে পাঞ্জাবী লোকসঙ্গীতের একটা দ্বন্দ্ব লক্ষ্য করা যায়।
তাল
[সম্পাদনা]পাঞ্জাবী লোকসঙ্গীতের তাল খুবই সরল [৩]। কিন্তু সাধারণত ভাঙ্গারা সঙ্গীতের তাল তুলনামূলকভাবে কিছুটা জটিল।
সুর
[সম্পাদনা]কিছু গান আছে যেমন হীরা এবং মিরজা যেগুলো সাধারণত চিরাচরিত রচনাতেই গাওয়া হয়। পাঞ্জাবী লোকসঙ্গীতে সুরকারের অভাবজনিত কারণে প্রায় একশ বছর ধরে একই সুরে গান বাধা হচ্ছে।
লোকগীতি
[সম্পাদনা]জন্ম, বিবাহ, মৃত্যু, ভালোবাসা, বিচ্ছেদ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিকাঠামো, গ্রাম্য জীবনযাত্রা, খাদ্য, প্রকৃতি, সাহসীকতা, লোকাচারবিদ্যা এবং লোককথামূলক, ঐতিহাসীক নায়ক, সংস্কৃতি, অনুষ্ঠান এবং আরো বিভিন্ন বিষয়ের উপর পাঞ্জাবী লোকসঙ্গীত রচনা হয়েছে। পাঞ্জাবের এই লোকসঙ্গীতকে অনেকেই পেশাগতভাবে গ্রহণ করে নিয়েছে. তারা নিম্নলিখিত কতোগুলি বিভাগে এটাকে বিভক্ত করেছে।
গানের অনুষ্ঠান
[সম্পাদনা]জীবনচক্রে ধর্মানুষ্ঠান
[সম্পাদনা]পাঞ্জাবী লোকগীতি পাঞ্জাবের জীবনযাত্রার এবং সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জডিয়ে রয়েছে. তুলনামূলকভাবে অন্যান্য অনুষ্ঠান ও মেলার বিষয় থেকে পাঞ্জাবী লোকসঙ্গীতের বেশীরভাগটাই মানুষের জন্ম ও মৃত্যু নিয়ে রচিত. মহিলারা সাধারণত তাদের সুখ্ম অনুভূতি, প্রকৃতি ও বিবিধ শখের উপর গান গেয়ে থাকেন এবং কিছু স্বল্প পরিসর নিম্নবিত্ত সামাজিক পরিকাঠামোর মধে্য পুরুষরা তাদের স্বাধীনতা, শক্তি, কর্মখমতা প্রকাশ করেন গানের মাধ্যমে. বিবাহের বিভিন্ন ধাপে যেমন সেহেরা, গোরিহান, সিথিনান, সুহাগ বিভিন্নরকম গান শোনা যায়. পাঞ্জাবী লোকগীতিতে মেয়েদের অনুভূতির একটা বিশেষ জায়গা আছে যে কিনা তার পিতাকে জিঞ্জাসা করছে তার জন্য একটা ভালো মানুষ ও একটা ভালো পরিবারের জন্য. ব্যাপ্তি ও মেজাজের উপর নি্রভর করে বিভিন্ন রকম গান যোগ করা হয়েছে সুহাগ,[৪] গোরহিয়ান, বোলিয়ান,[৫] Tappe,[৬] টাপ্পে,[৬] সিথনিয়া,[৭] চান্দ,[৮] হীরা, লোরিয়ান [২][৯] ইত্যাদির সাথে.
মেলা ও সামাজিক অনুষ্ঠান
[সম্পাদনা]প্রতিটি অনুষ্ঠানেই গানের ভূমিকা অনস্বীকার্য.[১০] বৈশাখ মাসের নবান্ন উতসবের সময় ঋতু পরিবতনের সাথে লহরী এবং মাঘী এই দুই ধরনের গান জডিয়ে রয়েছে. পুরুষের মধ্যে ভাঙ্গরা ও স্ত্রীলোকেদের মধ্যে গিধ্ধা নৃত্য দেখা যায়. বর্ষা ঋতুতে চাষীরা তিয়ান উতসবের পালন করেন.[১০] বিবাহিত মহিলারা তার পিত্রালয়ে আসেন তার বন্ধু ও পরিবারের লোকজনদের সাথে দেখা করতে এবং খোলা মাঠে গিধ্ধা নাচ করেন. তারা ফুলকারী জাতীয় রঙীন জামা এবং তারা তাদের হাতে কাচের চুডি ও মেহেন্দী পডেন.
পাঠগত থিম প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]রোমান্টিকতা
[সম্পাদনা]জুগনী, মাহীয়া, টাপ্পে, ঝিন্দুয়া, ঢোলা, কাফিন, ডোহরে, বোলিয়ান, সাধ্ধা এবং হীর রাঞ্ঝা, সোহনি মাহীয়াল, সাসী পুনাম এগুলি প্রধানত পাঞ্জাবী রোমান্টিক সঙ্গীতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য.[১][২][১০]. হীর এবং মীর্জা ঐতিহ্যবাহী সুরেই গাওয়া হয়ে থাকে.
বীরত্বপূর্ণ
[সম্পাদনা]নায়কত্ব এবং সাহসীকতা নিয়ে বহু পাঞ্জাবী গান রচিত ও গাওয়া হয়েছে যেমন ডুল্লা ভাট্টী,[১১][১২] রাজা রাসালু, জাগ্গা জাট্ট, এস. ভগত সিং, এস. উধাম সিং, সুচা সুরমা এবং জিওনা মরহ.[১৩] and Jiona Maurh.[৯]
ধার্মিকতা
[সম্পাদনা]পূজা, ধার্মিক অনুষ্ঠান এবং উৎসব সংক্রান্ত যেকোন রকম গানই একটা ধর্মীয় অনুভূতির সৃষ্টি করে. শিখ সম্প্রদায়ের লোকেরা গভীরভাবে সঙ্গীতের সাথে যুক্ত.[১০] ষষ্ঠ শিখগুরু হরগোবিন্দ দ্বারা প্রবর্তিত ধাধিস যাঁরা দুটি প্রধান লোক সঙ্গীতযন্ত্র ধাদ এবং সারঙ্গী বাজিয়ে গুরবানি ও ভার্স গাইতেন.[১০] আর অন্যন্য জাতি যেমন ইসলামীদের কোয়ালিস, নাট্সেদর হাম্ড, হিন্দুদের ভজন এবং পাঞ্জাবীদের পাঞ্জাবী এবং হিন্দি গান.
বাদ্যযন্ত্র
[সম্পাদনা]পাঞ্জাবী সঙ্গীত শিল্পীরা একাকী অথবা কিছু ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র যেমন ঢোল , টুম্বি, ধাদ, সারঙ্গী, ঘারহা, গাগর, চিমটা, আলগোস সহযোগে গান গেয়ে থাকেন.[১][২][১০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ Pande, Alka (১৯৯৯)। Folk music and musical instruments of Punjab। Mapin Publishers। পৃষ্ঠা 128। আইএসবিএন 18-902-0615-6।
- ↑ ক খ গ ঘ Thind, Karnail Singh (২০০২)। Punjab Da Lok Virsa (reprint সংস্করণ)। Patiala: Punjabi University। পৃষ্ঠা 231। আইএসবিএন 81-738-0223-8।
- ↑ Sharma, Manorma (২০০৯)। Musical heritage of India। পৃষ্ঠা 228।
- ↑ "Punjab heritage comes alive on concluding day"। The Tribune। Ludhiana। অক্টোবর ১, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ মে ২২, ২০১২।
- ↑ "Power failure hits show"। The Tribune। Chandigarh। মে ২১, ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ মে ২২, ২০১২।
- ↑ ক খ "Two plays staged"। The Tribune। Amritsar। ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ মে ২২, ২০১২।
- ↑ Maini, Darshan Singh (১৯৭৯)। Studies in Punjabi poetry। Vikas। পৃষ্ঠা 158। আইএসবিএন 07-069-0709-4।
- ↑ Shivnath (১৯৭৬)। History of Dogri literature। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 194।
- ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;s
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;sp
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Lahore's Crumbling Gateways"। The Tribune। জানুয়ারি ৮, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ মে ২২, ২০১২।
- ↑ "'Dulla Bhatti' traces heroic deeds of folk character"। The Tribune। Amritsar। জানুয়ারি ১৩, ২০১০। সংগ্রহের তারিখ মে ২২, ২০১২।
- ↑ "The all-pervading spirit"। The Tribune। জানুয়ারি ২০, ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ মে ২২, ২০১২।