পাক্কানার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পাক্কানার হলেন মালায়লাম লোককাহিনির একটি চরিত্র।[১] বররুচির পুত্র হিসাবে পাক্কানার জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বররুচি ছিলেন বিখ্যাত জ্যোতিষী, যিনি রাজা বিক্রমাদিত্যের দরবারে অলংকৃত করেছিলেন।

জন্ম ও অবস্থান[সম্পাদনা]

পারায়ি পেট্টা পান্থিরুকুলাম (পারিয়া মহিলা থেকে জন্ম নেওয়া ১২জন সন্তান)-এর মধ্যে পাক্কানার ছিলেন দ্বিতীয়।[২] এই বারোজন পুত্র হলেন: মেজথাল অগ্নিহোত্রি (ব্রাহ্মণ), পাক্কানার (পারায়া, খুবই নিম্ন বর্ণের), রজকন (রজক), নারানাথু ভারতান (এলায়থু, একটি নিম্ন শ্রেণীর ব্রাহ্মণ), কারাক্কল মাথা (উচ্চ বর্ণের নায়ার), আকাভুর চাথান (বৈশ্যন), ভাদুথালা নায়ার (নায়ার সৈনিক), ভাল্লোন (তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুভার), উপপুকোত্তন (মুসলিম), পানানার (পানান, দেশের একটি অতি নিম্ন বর্ণের সঙ্গীতজ্ঞ), পেরুমথাচান (ছুতার), ভাইল্লাক্কুন্নিলাপ্পান (দেবতা)।[৩]

ত্রিতলায় মেজথাল অগ্নিহোত্রির বাড়ি ভেমনচেরি মানা থেকে একটু দূরে, পাক্কানারের বসতি ছিল। অন্যথায় এটি আবার ইরাত্তিঙ্কল পারায়া উপনিবেশ নামে পরিচিত যা আরিক্কুন্নু সংলগ্ন। কেরালায় ঐতিহ্যবাহী বর্ণের শ্রেণিবিন্যাসে, পারায়া জাতিকে নিম্ন বর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হত। এই উপনিবেশে ১৮টি বাড়িতে পাক্কানার বংশের পরিবার বসবাস করে। গল্প চলে আসছে যে পাক্কানারই আসলে "আজভাঞ্চেরি থামপ্রাক্কল" (নাম্বুদ্রী ব্রাহ্মণের সবচেয়ে বরিষ্ঠ পুরুষ সদস্যের উপাধি) থেকে একটি "থামপ্রাক্কল" তৈরি করেছিলেন, যাকে এই অঞ্চলের নাম্বুদ্রী ব্রাহ্মণদের প্রধান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। [৪]

পাক্কানারের গল্প[সম্পাদনা]

কোত্তারথিল শঙ্কুনি রচিত ঐতিহ্যমালায় পাক্কানারের অনেক গল্প পাওয়া যায়। একটি গল্প অনুসারে পাক্কানার মাত্র ৪টি "মুরাম" (একটি ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণ ভারতীয় কাষ্ঠফলক, যেটি ধান থেকে তুষ আলাদা করতে ব্যবহৃত) তৈরি করেছিলেন। পাক্কানার এর মধ্যে ৪টিই বিক্রি করে দেন। তিনি বলেন, "একটি জমা রাখার জন্য (তাঁর সন্তানদের জন্য, যাদের ভরণপোষণের জন্য তিনি সবকিছু প্রদান করেন), অন্যটি ঋণ পরিশোধের জন্য (তাঁর ঠাকুর্দা ঠাকুমাকে সাহায্য করার জন্য, যাঁরা তাঁকে আজকের পাক্কানার করেছেন), একটি তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর জন্য এবং শেষেরটি তিনি ফেলে দেন (এটি দাতব্যের জন্য, কিছু ফিরে পাবার আশা না করে)।" ঐতিহ্যমালার গল্পগুলি পারায়ি পেট্টা পান্থিরুকুলম (পারিয়া মহিলা থেকে জন্মগ্রহণকারী ১২জন সন্তান) -এর অলৌকিক ঘটনাগুলিকে সাধারণ গল্পের মাধ্যমে বর্ণনা করে জীবনের মূল্যবান নীতিগুলিকে শেখায়। ভুবনেশ্বরী মন্দিরে আজও "মুরাম" উৎসব হয়।

অন্য গল্পে পাক্কানারের বড় ভাই অগ্নিহোত্রী এবং তাঁর স্ত্রী পাক্কানারের বাড়িতে যান। অগ্নিহোত্রীর স্ত্রীকে একজন গোঁড়া উচ্চবর্ণের মহিলা হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। অতিথিরা আসার সাথে সাথে পাক্কানার তাঁর স্ত্রীকে ডাকলেন। স্ত্রী সেই সময় কূপ থেকে জল তুলছিলেন। মহিলা বালতির দড়ি ছেড়ে দিয়ে তাঁর স্বামীর ডাকে সাড়া দিতে দৌড়ে গেলেন, কিন্তু বালতিটি যেখানে ছিল সেখানে হাওয়ার মধ্যেই রয়ে গেল। এটাকে বলা হয় বিশুদ্ধতা ও সম্মানের শক্তি যা তিনি পাক্কানারকে দেখিয়েছিলেন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

পরায়ি পেট্টা পান্থিরুকুলম

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Four Coins"। ১৩ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  2. Krishna Chaitanya (১৯৭১)। A history of Malayalam literatureOrient Longman 
  3. "Vararuchi and Mezhathol Agnihothri"namboothiri.com। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২৪ 
  4. "Vararuchi and Mezhathol Agnihothri"