নো ওয়ান কিলড জেসিকা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নো ওয়ান কিলড জেসিকা
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকরাজ কুমার গুপ্তা
প্রযোজকরনি স্ক্রুওয়ালা
রচয়িতারাজ কুমার গুপ্তা
শ্রেষ্ঠাংশেরানী মুখার্জী
বিদ্যা বালান
বর্ণনাকারীরানী মুখার্জী
সুরকারঅমিত ত্রিবেদী
চিত্রগ্রাহকঅনয় গোস্বামী
সম্পাদকআরতি বাজাজ
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশকইউটিভি মোশন পিকচার্স
মুক্তি
  • ৭ জানুয়ারি ২০১১ (2011-01-07)
স্থিতিকাল১৩৬ মিনিট[১]
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
নির্মাণব্যয়১৫ কোটি[২]
আয়প্রা. ৮৪ কোটি[৩]

নো ওয়ান কিলড জেসিকা একটি ২০১১ সালের ভারতীয় জীবনীমূলক থ্রিলার চলচ্চিত্র, এটি রচনা এবং পরিচালনা করেছিলেন রাজ কুমার গুপ্ত₹১৫ কোটি বিনিয়োগ করে এটির প্রযোজনায় ছিলেন রনি স্ক্রুওয়ালা[৩] জেসিকা লাল হত্যা মামলার উপর ভিত্তি করে রচিত নো ওয়ান কিলড জেসিকাতে অভিনয় করেছিলেন, জেসিকার বোনের চরিত্রে বিদ্যা বালান এবং এই মামলাকে অনুসরণ করা একজন সংবাদ প্রতিবেদক দ্বারা অনুপ্রাণিত একটি চরিত্রে রানী মুখার্জী। নবাগত মোহাম্মেদ জিসান আইয়ুব জেসিকার খুনি মনু শর্মার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[৪]

২০১১ সালের ৯ই জানুয়ারী, নো ওয়ান কিলড জেসিকা ভারতের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল, পরিবেশনের দায়িত্বে ছিল ইউটিভি মোশন পিকচার্স[৫] নির্দেশনা, দলগত এবং চরিত্রদের প্রদর্শনের দ্বারা প্রতিভাত নো ওয়ান কিলড জেসিকা বিশ্বব্যাপী ₹৮৪ কোটি আয় করেছিল এবং এটি ছিল স্লিপার হিট (প্রথমে খারাপ ফল করলেও সময়ের সাথে সাথে দুর্দান্ত সাফল্য)।[৬] পরের বছর নো ওয়ান কিলড জেসিকা পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল, যার মধ্যে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী প্রশংসিত পুরস্কারটি পেয়েছিলেন রানী মুখার্জী।[৭]

ঘটনা[সম্পাদনা]

ভারতের দিল্লিতে একটি অভিজাত অনুষ্ঠানে পানশালাটি সামলাচ্ছিল জেসিকা (মাইরা কর্ণ)। সময় পার হয়ে যাওয়ায় সে তিন জনকে পরিবেশন করেনি। তাদের মধ্যে একজন, এক বড় রাজনীতিবিদের পুত্র, মনীশ (মোহাম্মেদ জিসান আইয়ুব), এর জবাবে তাকে মাথায় গুলি করেছিল। সেখানে কয়েক ডজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিল, কিন্তু জেসিকার বোন সাব্রিনা লালের (বিদ্যা বালান) অভিজ্ঞতা হয়েছিল, হয় তারা সুবিধামত ভুলে যায় অথবা অর্থের বিনিময়ে তাদের সাক্ষ্য বিক্রি করে দেয়। লোভ এবং রাজনৈতিক প্রভাবের সামনে মামলাটি শুরু হয়েই শেষ হয়ে যায়।

মনীশকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু রাজনৈতিক চাপের কারণে, সমস্ত সাক্ষী একের পর এক তাদের সাক্ষ্য প্রত্যাহার করে নেয়। এর মধ্যে জেসিকার বন্ধু অভিনেতা এবং মডেল বিক্রম জয় সিং ও ছিল। ইন্সপেক্তর এন.কে. (রাজেশ শর্মা) সাব্রিনাকে জানায় যে, যাচাইয়ের জন্য যে দুটি গুলি পাঠানো হয়েছিল তার একটি পাল্টে দেওয়া হয়েছে। জেসিকার ওপরে ঘটা অপরাধের প্রমাণগুলি নিয়ে সাব্রিনার বারবারের প্রচেষ্টা একের পর এক ব্যর্থ হতে থাকে। আদালতে মামলাটি ২০০৬ সাল পর্যন্ত চলেছিল। প্রমাণ ও সাক্ষীর অভাবের কারণে, আদালত দোষীদের খালাস করে দেয়। এই খবরটির মানসিক আঘাতে সাব্রিনার মা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যায়। এই কথা শুনে সাব্রিনার বাবাও অবসন্ন হয়ে হাসপাতালে ভেঙে পড়ে। তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

এরমধ্যে, একজন প্রতিবেদক, মীরা গাইতি (রানী মুখার্জী), সংবাদপত্রের দোষীদের মুক্তি সম্বন্ধে পড়ে হতবাক হয়ে যায়, কারণ সে আশা করেছিল যে জেসিকার মামলাটিতে সাজা দেওয়ার জন্য খুব বেশি প্রমাণের দরকার পড়বেনা। মীরা বিষয়টি তার হাতে নেয় এবং জেসিকাকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেবে ঠিক করে। তার সম্পাদকের অনুমোদনক্রমে, সে লুকোনো ক্যামেরার সাহায্যে অনেক প্রমাণ সংগ্রহ করে (স্টিং অপারেশন) এবং দেশের আইন শৃঙ্খলার বেপরোয়া মনোভাব প্রকাশ করে দেয় এবং পুলিশ ও কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করে। এন.কে. সিংহ নিজের ভুল বুঝতে পেরে মীরাকে সাহায্য করার জন্য মনীশের অপরাধ স্বীকার করে রেকর্ড করা টেপটি তার কাছে পাঠিয়ে দেয়। মীরা সেগুলি ব্যবহার করে ব্যবস্থা পদ্ধতি এবং রাজনৈতিক দলের উপর চাপ তৈরি করতে শুরু করে।

টেলিভিশনে প্রচারের কারণে সব কিছু দেখে জনসাধারণ প্রতিবাদ বিক্ষভে নামে এবং জেসিকাকে ন্যায়বিচার দেবার দাবী তোলে। চ্যানেলটির মাধ্যমে জেসিকার সমর্থনে অনেক ফোন কল, এসএমএস এবং ভয়েস বার্তা প্রেরণ করা হয়। জনগণের কাছ থেকে পাওয়া এই সম্পূর্ণ সমর্থন মীরা ব্যবহার করে সরকার এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছোতে, জেসিকার পরিবারকে ন্যায়বিচার দেবার জন্য। দিল্লির লোকেরা জেসিকার পক্ষে দাঁড়াতে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে একটি মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করে। এদিকে, সাব্রিনা, যে আদালতে তার বোনের পক্ষে লড়াইয়ের সময় সমস্ত মানসিক আঘাতের সম্মুখীন হয়েছিল, সে ন্যায় বিচার পাবার আশা ছেড়ে দিয়েছিল। মীরা সাব্রিনার কাছে পৌঁছোয় এবং তাকে তার বোনের পক্ষে আবার দাঁড়াতে রাজী করে। সে তাকে আশ্বস্ত করে যে পুরো শহরের সমর্থন পাওয়ার কারণে এবার ন্যায়বিচার পাওয়া যাবেই।

মনীশের পরিবারের উপর রাজনৈতিক চাপ বেড়ে যায় এবং তার রাজনীতিবিদ পিতা পদত্যাগ করে। উচ্চ আদালত পুলিশকে তলব করে জানতে চায় তারা এই মামলায় কেন বেপরোয়াতা দেখিয়েছিল। মামলাটি পুনরায় খোলার জন্য পুলিশ উচ্চ আদালতে আবেদন করে এবং তা গৃহীত হয়। মামলাটি বিচারের জন্য ফাস্ট ট্র্যাকে (যেখানে খুব শীঘ্র মামলার নিষ্পত্তি হয়) যায়। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায় যেখানে মনীশ ভরদ্বাজ এই অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয় এবং তাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের দণ্ড দেওয়া হয়। তার সহযোগী বিশাল রাস্তোগি এবং লাকি সিংকে চার বছরের কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল।

শেষ পর্যন্ত, জানা গেল যে সাব্রিনা একটি বিজ্ঞাপন সংস্থা চালায় এবং তার কোনও প্রেমিক নেই, তার বাবার ও মৃত্যু হয়েছে। মীরা তার নিজের মতোই জীবনযাপন করছে।

চরিত্র চিত্রণ[সম্পাদনা]

প্রযোজনা[সম্পাদনা]

নতুনদিল্লির পটভূমিতে করা চলচ্চিত্রটি বিতর্কিত জেসিকা লাল হত্যা মামলার সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত। পরিচালক ব্যাখ্যা করেছিলেন যে চলচ্চিত্রের শিরোনামটি ২০০৬ সালের একটি সংবাদপত্রের খবরের শিরোনাম দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল,[৮] খবরটি সেই সময়কার যখন একটি কুখ্যাত খুনের মামলার আসামিরা নিম্ন আদালত খালাস পেয়েছিল। এই ঘটনা এবং এর পরে গণমাধ্যমে প্রচারের ফলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল, ফলস্বরূপ হত্যার মামলাটি পুনরায় শুরু করার আবেদন হয়েছিল। এর পরে হত্যাকারী সাজা পেয়েছিল।[৯][১০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. No One Killed Jessica: UK Cinema Release Date.
  2. No one killed Jessica recovers cost before release. Business Standard. Retrieved 8 January 2011.
  3. Adesara, Hetal (১৬ ডিসেম্বর ২০১১)। "No one Killed Jessica takes a slow start"। Business of Cinema। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ 
  4. "'No One Killed Jessica' now also stars Rani Mukherjee"। India Times Movies। ২২ জানুয়ারি ২০১০। ২৫ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১০ 
  5. Sharma, Garima (২০ জানুয়ারি ২০১০)। "Who's playing Jessica?"The Times of India 
  6. "Vidya Balan and Rani Mukherjee in No One Killed Jessica"Bollywood Hungama News Network। ২৩ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১০ 
  7. No One Killed Jessica rocks at the box office ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ মার্চ ২০১৪ তারিখে. Oneindia.in.
  8. "No One Killed Jessica"The Times of India। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১১ 
  9. "Aami"। indiainfo. (India Fm)। ৮ এপ্রিল ২০০৯। ৭ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১০ 
  10. "'No One Killed Jessica' not based on murder case'"The Hindu। ১১ নভেম্বর ২০০৯। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:UTV Movies