নিমরানা হোটেলস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তামিলনাড়ুর ট্রানকিউবারে সমুদ্র সৈকতের ধারে বাংলো, নিমরানা হোটেলস

নিমরানা হোটেলস হচ্ছে একটি ভারতীয় সংস্থা যা[১] পুরাতন বা ধ্বংসপ্রায় নির্মাণগুলোকে সংস্কার করার মাধ্যমে নতুন হেরিটেজ হোটেলে[২][৩] রূপান্তরিত করে থাকে। [৪]

প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯১ সালে আমান নাথ এবং ফ্রান্সিস ওয়াকজিয়ার্গ এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আমান নাথ দিল্লি ইউনিভার্সিটি হতে মধ্যযুগীয় ভারতীয় ইতিহাসের উপর একজন স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী ছিলেন,অপরদিকে ফ্রান্সিস ওয়াকজিয়ার্গ ফ্রান্সের একজন সাবেক কূটনীতিবিদ এবং ১৯৬৯ সাল হতে ভারতে বসবাস করে আসছিলেন, এরা দুজন দ্যা পেইন্টিং ফ্রেস্কোস অব শিখাবতী,বইটি লিখার উদ্দেশ্যে গবেষণা চালাচ্ছিলেন এবং এ উদ্দেশ্যেই তারা রাজস্থানের আরাভাল্লি পর্বতে অবস্থিত ১৫ শতকের নিমরানা দুর্গ পরিদর্শন করেন,[৫] যা স্থানীয় একজন সর্দার নিমলা মিও এর কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল [৬], এবং ৪০ বছরে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় চলে এসেছিল। তারা ১৯৮৬ সালে ৭ লক্ষ ভারতীয় রূপী দিয়ে দুর্গটি কিনে নেন এবং সংস্কার করার পর ১৯৯১ সালে এটিকে ১২ কক্ষের একটি হোটেল হিসাবে চালু করেন। সংস্কার পরবর্তীতে, হোটেলটি ২০০২ সালের ভারতীয় সাহিত্য আন্তর্জাতিক উৎসব, কুইজ অনুষ্ঠান মাস্টারমাইন্ড ইন্ডিয়া, এবং অনেক বিবাহ অনুষ্ঠানের ভেন্যু হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়া[সম্পাদনা]

নির্মাণটি সংস্কারের ক্ষেত্রে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাগুলো যুক্ত করার পরও যতটা সম্ভব স্থাপত্যশৈলী অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া কক্ষগুলোতে ১৯ শতকের ঔপনিবেশিক ধাঁচের সাজসজ্জাও প্রয়োগ করা হয়। এ ধরনের সজ্জার কারণে তারা তাদের হোটেল গুলোকে “নন-হোটেলস” বলে থাকে। ভবনটি ধাপে ধাপে সংস্কার কর হয়, ইতিমধ্যে সংস্কারকৃত হোটেলের অংশ ব্যবহারের মাধ্যমে উপা্র্জিত অর্থ দ্বারা বাকি অংশের সংস্কার কাজ চালানো হয়। স্থানীয় লোকজন এবং মালামাল ব্যবহারের মাধ্যমে তারা খরচ কমিয়ে আনতে পেরেছিল এবং তাদের হোটেল ব্যবসা হতে সত্যিকারার্থে লাভের মুখ দেখতে দুই থেকে তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়, যেখানে সাধারণভাবে এ ধরনের ব্যবসাতে অনেক ক্ষেত্রে সাত থেকে আট বছর লেগে যায়।

পাঞ্জাব রাজ্য সরকার পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ এর মাধ্যমে পাটিয়ালাতে অবস্থিত বারাডারি প্যালেস তাদের নিকট হস্তান্তর করেন, একইভাবে রাজস্থান রাজ্য সরকার তাদের নিকট তিজারি ফোর্ট লীজ দেন। ঠাকুর মঙ্গল সিং তাদের নিকট আলওয়ার এ অবস্থিত ১৪ শতকের কেসরোলি প্যালেস বিক্রি করেন। বেশির ভাগ প্রকল্পের ক্ষেত্রেই ভবনের মালিকরাই উৎসাহিত হয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে। তাদের হাতে বর্তমানে দুইটিরও বেশি সম্ভাব্য প্রকল্প রয়েছে।

উদাহরণসমূহ[সম্পাদনা]

যে সকল ধ্বংসপ্রায় নির্মাণ এবং দুর্গসমূহ তাদের দ্বারা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

  • ১৪ শতকের, হিল ফোর্ট কেসরোলি(আলওয়ার, রাজস্থান)
  • ১৫ শতকের, নিমরানা ফোর্ট প্যালেস(দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ে, শিখাবতী রাজস্থান)
  • ১৬ শতকের, লে কলোনিয়াল(কোচিন, কেরালা)
  • ১৭ শতকের, দ্যা টাওয়ার হাউস(কোচিন, কেরালা)
  • ১৭ শতকের দ্যা বাংলো অন দ্যা বিচ(থারাঙ্গামবাড়ি, তামিল নাড়ু)
  • ১৭ শতকের, দ্যা গেট হাউস(থারাঙ্গামবাড়ি, তামিল নাড়ু)[৭]
  • ১৮ শতকের, হোটেল ডি আই ওরিয়েন্ট, পুদুচেরি
  • ১৯ শতকের, দ্যা ভারেন্ডা ইন দ্যা ফরেস্ট(ব্রিটিশ)(মাথেরান, মুম্বাই এর নিকটে)
  • ১৯ শতকের, দরবারগাড প্যালেস, মরভি, গুজরাত
  • ১৯ শতকের, ভিলা পত্তিপাতি(মালেশ্বরাম, ব্যাঙ্গালুরু, কর্ণাটক)
  • ১৯ শতকের, দ্যা ওয়ালউড গার্ডেন(কন্নর, তামিল নাড়ু)
  • ১৯ শতকের, গ্রীন হিলস এস্টেট(কোডাগু, কর্ণাটক)
  • ১৯ শতকের, দ্যা বারাডারি প্যালেস(পাটিয়ালা, পাঞ্জাব)
  • ১৯ শতকের, দ্যা রামগড় বাংলো(রামগড় কুমায়ুন হিলস, উত্তরখন্ড)
  • ২০ শতকের, পিরামল হাভেলি(বাগার, শিখাবতী, রাজস্থান)
  • ২০ শতকের, পাটুয়াডি প্যালেস(পাটুয়াডি, হরিয়ানা)
  • ২১ শতকের, দ্যা গ্লাস হাউস অন দ্যা গ্যাঞ্জেস(ঋষিকেশ, উত্তরখন্ড)
  • তিজারা ফোর্ট, আলওয়ার জেলা, রাজস্থান

বইসমূহ[সম্পাদনা]

প্রকল্পটির অংশ হিসাবে প্রকাশিত বইসমূহের মধ্যে রয়েছে:

  • দ্যা পেইন্টেড ফ্রেস্কোস অব শিখাবতী
  • জয়পুর: দ্যা লাস্ট ডেস্টিনেশান
  • আর্টস এন্ড ক্রাফটস অব রাজস্থান

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Mentions (some detailed) in about 72 books and 8 papers and 43 news sources|accessdate=4 November 2016
  2. Pramila N. Phatarphekar, Accidental Hoteliers, Open Magazine, 4 November 2016
  3. "The heritage tourism specialists"। The Financial Express (India)। ৩১ অক্টোবর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৬ 
  4. "About Neemrana The Glasshouse On The Ganges"। cleartrip.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৬ 
  5. Savita Gautam, Ruins revisited ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ জুলাই ২০১১ তারিখে, The Hindu, 4 November 2016
  6. Arundhati Basu, Article in The Telegraph (Kolkata)|The Telegraph, Saturday , 4 November 2016
  7. "High on history"Financial Express। ৩ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৬