নিবাতকবচ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

নিবাতকবচগণ ভারতীয় মহাকাব্য ও পুরাণ অনুসারে ছিলেন এক ধরনের দুর্ধর্ষ অসুর। সুতলের নিচে তলাতল, তলাতলের নিচে মহাতল এবং মহাতলের নিচে রসাতল নামক স্থান। সেই রসাতলে নিবাতকবচগণ বাস করতেন। তারা জাদু, মায়া ও যুদ্ধে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন।

নিবাতকবচ নামটি সম্ভবত এইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়ঃ নিঃ+বাত+কবচ। অর্থাৎ তারা এমন একটি কবচ বা সুরক্ষা দ্বারা সুরক্ষিত, যেখানে যেতে হলে বাত বা বায়ুশূন্য ( বা অক্সিজেনহীন স্থান, যা শ্বাস নেওয়ার পক্ষে অনুকূল নয়) স্থান অতিক্রম করে যেতে হয়। সম্ভবত তারা মাটির নিচে কোনও গোপনস্থানে বসবাস করতেন।

দেবরাজ ইন্দ্র বহু চেষ্টা করেও তাদের পরাজিত করতে পারেন নি। এমনকি রামায়নে স্বয়ং রাবণ তাদের যুদ্ধে হারাতে না পেরে শেষে তাদের সঙ্গে সন্ধি করেন।

মহাভারত অনুসারে শেষ পর্যন্ত ইন্দ্রপুত্র অর্জুন তাদের নিঃশেষ করেন।

দ্রৌপদী ও অন্যান্য ভাইদের সঙ্গে বনবাসে থাকাকালীন অর্জুন কিছুদিন তার পিতা ইন্দ্রের সঙ্গে স্বর্গে কাটিয়েছিলেন। সেখানে ইন্দ্রের কাছে তিনি অস্ত্রশিক্ষা করেন এবং পরবর্তীকালে গুরুদক্ষিণা বাবদ ইন্দ্রের শত্রু তিন কোটি নিবাতকবচগণকে তাদের সমুদ্রস্থিত দুর্গ সহ ধবংস করেন। কালকেয় প্রভৃতি অসুরদেরও অর্জুন ধবংস করেছিলেন। তাই ইন্দ্র সন্তুষ্ট হয়ে তাকে দিব্যকিরীট, হিরণ্ময়ী মালা, অভেদ্য দিব্যকবচ, দেবদত্ত শঙ্খ ইত্যাদি উপহার দেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

মহাভারত সারানুবাদ,রাজশেখর বসু।