নিকল প্রিজম
নিকল প্রিজম হল একটি আলোকযন্ত্র যা সমাবর্তিত তথা পোলারাইজড আলোর উৎপাদন ও শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়।
আবিষ্কার
[সম্পাদনা]এডিনবার্গের বিজ্ঞানী উইলিয়াম নিকল (১৭৭০-১৮৫১) ১৮২৮ সালে নিকল প্রিজম আবিষ্কার করেন। [১]
গঠন
[সম্পাদনা]এটি আইসল্যান্ড স্পার (ক্যালসাইটের একটি ভাগ) রম্বোহেড্রাল ক্রিস্টাল দিয়ে গঠিত, যাকে ক্রিস্টাল অক্ষের সাথে ৬৮° কোণে কাটা হয়। এরপর এর একটি কর্ণ বরাবর কেটে পরে এই অংশদ্বয়কে কানাডা বালসাম নামক এক ধরনের আঠালো পদার্থের আস্তরণ দিয়ে যুক্ত করা হয়।[২]
যেকোনো পোলারাইজড আলোর কম্পনকে দুইটি উপাংশে ভাগ করা হয়ে থাকেঃ (১) আলোক অক্ষের সমান্তরালে, এবং (২) আলোক অক্ষের সমকোণে। নিকল প্রিজম এমনভাবে গঠন করা হয়েছে যে আলো এর ভিতর দিয়ে যাবার সময় এর যেকোনো একটি উপাংশ প্রতিফলিত হয়ে চলে যায়। সাধারণত অর্ডিনারি আর এক্সট্রা-অর্ডিনারি রশ্মিদ্বয়ের মধ্যে এক্সট্রা-অর্ডিনারি রশ্মিটিই গমন করে, আর অর্ডিনারি রশ্মিটি বাদ হয়ে যায়।
অসমবর্তিত আলো ক্রিস্টালের বাম পাশ দিয়ে প্রবেশ করে (যেমনটা ডায়াগ্রামে দেখানো হয়েছে) এবং ক্যালসাইটের বাইরেফ্রিনজেন্স গুণের কারণে দুইটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। অর্ডিনারি রশ্মি বা o রশ্মি no = ১.৬৫৮ প্রতিসরাঙ্কের মধ্য দিয়ে গমন করে ক্যালসাইট-আঠা স্তরে পতিত হয়ে পূর্ণ অভ্যন্তরীণভাবে প্রতিফলিত হয়; কারণ আঠালো স্তরে (প্রতিসরাঙ্ক n = ১.৫৫) অর্ডিনারি রশ্মির আপতন কোণ ঐ দুই মাধ্যমের সংকট কোণের চেয়ে বড় হয়। পক্ষান্তরে এক্সট্রা-অর্ডিনারি রশ্মি বা e-রশ্মি ক্যালসাইটে তথা নিম্ন প্রতিসরাঙ্কে (ne = ১.৪৮৬) আপতিত হওয়ায় সম্পূর্ণ প্রতিফলিত হয় না, বরং কিছুটা প্রতিসরিত হয়। ফলাফল হিসেবে আরেকটি ধাপের প্রতিসরণের মাধ্যমে e-রশ্মি প্রিজম থেকে বের হয়ে আসে সমবর্তিত আলো হিসেবে।
এক সময় নিকল প্রিজম মাইক্রোস্কপি এবং পোলারিমিতিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। "ইউজিং ক্রসড নিকলস" (সংক্ষেপে XN) কথাটি এখনও পোলারাইজারে কোনো নমুনাকে পরীক্ষা করার সময় ব্যবহৃত হয়। তবে বর্তমান সময়ে অধিকাংশ যন্ত্রেই নিকল প্রিজমের বদলে অন্যান্য ধরনের পোলারাইজার, যেমন পোলারয়েড শীট এবং গ্ল্যান-থম্পসন প্রিজম ব্যবহৃত হয়।
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]- নোমারস্কি প্রিজম
- গ্লান–থম্পসন প্রিজম
- গ্লান–ফোকাল্ট প্রিজম
- সেনার্মন্ট প্রিজম
- রচন প্রিজম
- উলাস্টন প্রিজম
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ N. Subramaniyam and Brijlal। Nicol Prism। S. Chand & Company LTD.। পৃষ্ঠা ৫৭৪। আইএসবিএন 978-984-90642-1-3।
- ↑ Greenslade, Thomas B., Jr.। "নিকল প্রিজম"। কেনিয়ন কলেজ। ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৪।