ধেমসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ধেমসা মধ্য ভারত-দক্ষিণ ওড়িশা এবং ছত্তিশগড় ও অন্ধ্রপ্রদেশের সংলগ্ন অঞ্চলের আদিবাসীদের একটি ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য।[১] নৃত্যশিল্পীরা একে অপরের কাঁধ ও কোমর ধরে এবং ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের সুরে নাচকরে একটি শৃঙ্খল তৈরি করে। ধেমসা একটি অনন্য লোক-নৃত্য প্রকরণ যা দলবদ্ধভাবে সঞ্চালিত হয়। এর একটি নির্দিষ্ট গঠন, কৌশল, ছন্দ, আদব কায়দা, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, চুলের বিন্যাস, পায়ের ধাপ ইত্যাদি রয়েছে।

বর্ণনা[সম্পাদনা]

ধেমসা নৃত্য

সন্ধ্যা হওয়ার মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয়, এবং শিখাগুলি বাতাসে দুলতে শুরু করলে সন্ধ্যার জঙ্গলের মিষ্টি কিন্তু শক্তিশালী সুগন্ধে মাদলগুলি বাজতে শুরু করে, ধেমসায় ছন্দ তৈরি শুরু হয়। এই নৃত্যে ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী লোক বাদ্যযন্ত্রগুলি হল ঢোল, তামাক, চাঙ্গু এবং মাহুরি। ঢোল হল মূল ড্রাম, তামাক একটি বঙ্গোর মতো একটি বাদ্যযন্ত্র যা ছন্দের গতি বজায় রাখে। মোহুরি জোরুনার মতো একটি ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র। এই নৃত্যটি সাধারণত গভীর রাতে "দেশিয়া" বা "আদিবাসী" নামে পরিচিত উপজাতিরা বার্ষিক অনুষ্ঠান "চৈত পরব" এবং "পুস পুনি" বা "পুস পরব" সহ সমস্ত অনুষ্ঠানে পরিবেশন করে। মহুরি বাজানো ব্যক্তিকে "মহুরিয়া" বলা হয় যিনি সুরটি বাজাতেন এবং ড্রামাররা তাকে অনুসরণ করে।[২]

তাৎপর্য[সম্পাদনা]

ওড়িশার এই অনন্য লোকনৃত্যটি কেবল শরীরের নড়াচড়া সম্পর্কে নয়, এটি অনন্য চুলের স্টাইল, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, দল গঠন, পদবিন্যাস ধরন ইত্যাদিকে একত্রিত করে। এটির পশ্চাৎপটে একটি সাধারণ লোক সংগীত দিয়ে বাজানো হয়। এটি একটি সাধারণ নৃত্য ধরন যা সাধারণ ওড়িশার উপজাতিদের জীবনের সরলতার প্রতিফলন। ঢেমসা নৃত্যের একটি সমৃদ্ধ শিল্পকলা এবং গভীর সম্প্রদায়ের সংযোগ রয়েছে। এই নৃত্যটি মহান দার্শনিক "গণ্ডি পুনেম মুথাভা পাহান্ডি পারি কুপার লিঙ্গো" এর প্রতিকৃতি। নৃত্যশিল্পীরা একে অপরের সাথে হাত ধরে বা অন্যান্য নৃত্যশিল্পীদের সাথে তাদের কাঁধ এবং কোমরে আলিঙ্গন করে একটি শৃঙ্খল তৈরি করে। এটি মাটিতে খালি পায়ে সম্পাদিত হয় যা মাটি মায়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং তাকে প্রণাম করে।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Pattnaik, Satyanarayan (জানুয়ারি ৩০, ২০১১)। "Dhemsa continues to catch fancy of foot-tapping tribals"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৬ 
  2. Pattnaik, Satyanarayan (জানুয়ারি ৩০, ২০১১)। "Dhemsa continues to catch fancy of foot-tapping tribals"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৬ 
  3. Pattnaik, Satyanarayan (জানুয়ারি ৩০, ২০১১)। "Dhemsa continues to catch fancy of foot-tapping tribals"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৬