দ্য কার্টুন্স দ্যাথ শ্যুক দ্য ওয়ার্ল্ড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
The Cartoons that Shook the World
চিত্র:The Cartoons that Shook the World cover.jpg
লেখকJytte Klausen
দেশUnited States
ভাষাEnglish
ধরনCultural studies
প্রকাশকYale University Press
প্রকাশনার তারিখ
2009
পৃষ্ঠাসংখ্যা230
আইএসবিএন৯৭৮-০৩০০১২৪৭২৯
ওসিএলসি৪৮৮৬৫৬৯২৬

The Cartoons that Shook the World হল ব্র্যান্ডিস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিত্তে ক্লাউসেনের ২০০৯ সালে লেখা একটি বই, যেটি Jyllands-Posten কর্তৃক মুহাম্মদ (সা:) এর কার্টুন প্রকাশ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের ওপর আলোকপাত করে। ক্লাউসেন যুক্তি দেখান যে, এই বিতর্কটি ইচ্ছাকৃতভাবে সমস্ত পক্ষের স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের দ্বারা উসকে দেওয়া হয়েছিল। তিনি এই দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে তর্ক করেন যে, বিতর্কের ভিত্তি ছিল মুহাম্মদ (সাঃ) এর চিত্রায়ন নিয়ে সাংস্কৃতিক ভুল বোঝাবুঝি। বইটি প্রকাশের আগেই বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল যখন ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস বইটি থেকে সমস্ত চিত্র অপসারণ করেছিল, যার মধ্যে বিতর্কিত কার্টুনগুলি এবং মুহাম্মদ (সাঃ) এর আরও কিছু ছবি ছিল।

প্রকাশনা ইতিহাস[সম্পাদনা]

নিউ হ্যাভেন এবং লন্ডনে ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক নভেম্বর ২০০৯ এ বইটি প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকাশের আগেই, বিতর্কিত কার্টুন সহ মুহাম্মদ (সা.) এর সকল চিত্র বইটি থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় প্রেস কর্তৃপক্ষ। উনিশ শতকের গুস্তাভ দোরে-র আঁকা একটি এনগ্রেভিং সহ মুসলিম ও অমুসলিম উভয় উৎস থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মদ (সা.) এর ঐতিহাসিক চিত্রগুলোর মধ্যে ছিল, যেখানে দান্তের ইনফার্নো থেকে একটি দৃশ্যে মুহাম্মদ (সা.) কে যন্ত্রণা দেয়া হচ্ছে।  ইয়েল ডেইলি নিউজ অনুসারে, প্রথম এই সংবাদটি ভেঙ্গে দেয় দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে।[১]

বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কর্মকর্তাদের, জাতিসংঘে সর্বোচ্চ পদস্থ মুসলিম কর্মকর্তা, মুসলিম দেশগুলোর পররাষ্ট্র রাষ্ট্রদূত, এবং ইসলামিক স্টাডিজ পন্ডিতদের সাথে পরামর্শ করেছিল বলে প্রেস উল্লেখ করে তাদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। এর মাধ্যমে তারা আরও সহিংসতা উস্কে দেয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে।[২]

বোস্টন কলেজের ক্যাল্ডারউড ফাইন আর্টস এর অধ্যাপক শিলা ব্লেয়ার ইসলামী জগতের শিল্পকলা নিয়ে একজন বিশেষজ্ঞ। ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক তাঁর সাথেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। দ্যা গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, ছবিগুলো প্রকাশ করার জন্য তিনি প্রেসকে "জোরালোভাবে অনুরোধ" করেছেন। কারণ, "এই ধরনের ছবি তৈরি করা হয়নি - এটা অস্বীকার করা ঐতিহাসিক দলিলগুলোকে বিকৃত করা এবং কিছু আধুনিক উগ্রপন্থীদের পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কাছে নতিস্বীকার করা, যারা অন্য সময় এবং স্থানে অন্যেরা মুহাম্মদকে ভিন্নভাবে উপলব্ধি করেছিল এবং চিত্রিত করেছিল তা অস্বীকার করতে চায়।"[৩]

বোস্টন কলেজের অধ্যাপক জনাথন লরেন্স, “Integrating Islam: Political and Religious Challenges in Contemporary France” বইয়ের সহ-লেখক, জানিয়েছেন যে Jyllands-Posten এর সেই পত্রিকার পাতা যেখানে কার্টুনটি ছিল তা প্রেস কর্তৃপক্ষকে পুনঃপ্রকাশের কথা তিনিও বলেছিলেন। "চিত্রগুলো প্রকাশের সিদ্ধান্ত বিষয়ে প্রেস আমার সাথে পরামর্শ করে। আমি তাদেরকে সম্পূর্ণ সংবাদপত্রের পাতাটি আলোচ্য পর্বটির প্রামাণ্য দলিল হিসেবে প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছিলাম," তিনি দ্যা টাইমসকে বলেন। "আমি আসলে আরেক অধ্যাপককে চিনি যার সাথেও তারা যোগাযোগ করেছিল এবং উনিও তাদেরকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে সবকিছু একটি দায়িত্বশীল পদ্ধতিতে করার পক্ষে পরামর্শ দিয়েছিলেন।"[৪]

আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটি প্রফেসর্সের সভাপতি ক্যারি নেলসন চিত্রাবলী প্রকাশ না করার সিদ্ধান্তকে আগাম সংযম হিসেবে বর্ণনা করেন। “যদি ধর্মীয় মৌলবাদী বা সহিংসতার হুমকি দেয়া গোষ্ঠীকে ক্ষুব্ধ করতে পারে বলে মনে হলে প্রকাশকরা কোন লেখকের লেখাকে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকবে- এই প্রক্রিয়া রোধ করার উপায় কী?” তিনি প্রশ্ন করেন। "আমরা এই সিদ্ধান্ত এবং এর সম্ভাব্য পরিণতির নিন্দা জানাই।"  নেলসন "সন্ত্রাসীদের" "প্রত্যাশিত দাবিগুলি" মেনে নেয়ার অভিযোগ করেন প্রেসের বিরুদ্ধে।[৫]

দ্যা বুকসেলার অনুসারে, চিত্রাবলী বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য প্রেসটি "কঠোর সমালোচনা"র মুখোমুখি হয়েছে।[৬]

কার্টুনগুলি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং প্রেসের পরিচালক জন ডোনাটিচের বক্তব্য উভয়েরই সাথে ক্রিস্টোফার হিচেনস দ্বিমত করেন। ডোনাটিচ দ্যা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন যে, তিনি বিতর্কের মুখে এর আগে কখনই "পিছু হটেননি", কিন্তু "যখন বিতর্ক এবং আমার হাতে রক্তের মধ্যে চয়স করার সময় আসলো, তখন কোন প্রশ্নই ছিল না।" এই যুক্তির তুলনা হিচেনস করেন তাদের সাথে যারা "যুক্তি দেখায় যে যারা পর্দা করে না তাদের উত্ত্যক্তই করে যারা ধর্ষণ বা বিকৃতি করে ... এবং এখন ইয়েল এই 'যুক্তি 'কে নিজেদের বলে গ্রহণ করেছে।" উপসংহারে, তিনি বলেন "নাথান হেলের ক্যাম্পাস আগাম শ্বেতপতাকা ওঠাবে আর অতঃপর লজ্জাজনকভাবে সম্ভাব্য হত্যাকারী এবং স্বৈরাচারীদের রক্তের দোষ নিজের কাঁধে তুলে নেবে - কত লজ্জার ব্যাপার।"[৭]

অধ্যাপক ক্লাউসেনের মতে, "আমার বইটি পাদটীকা সম্বলিত একটি একাডেমিক বই এবং নাইজেরিয়াতে বইটি গৃহযুদ্ধ শুরু করবে ধারণা হাস্যকর", তিনি আরও যোগ করেন যে তাঁর বইটি "বাকস্বাধীনতার সীমা নিয়ে লড়াই"-এর একটি অংশ হয়ে গেছে।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Yale Press panned for nixing cartoons of Muhammad, Esther Zuckerman, Yale Daily News, August 16, 2009 "Yale Daily News - Yale Press panned for nixing cartoons of Muhammad"। ২০০৯-০৮-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-১৭ 
  2. Yale Press panned for nixing cartoons of Muhammad, Esther Zuckerman, Yale Daily News, August 16, 2009 "Yale Daily News - Yale Press panned for nixing cartoons of Muhammad"। ২০০৯-০৮-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-১৭ 
  3. Flood, Alison (আগস্ট ১৪, ২০০৯)। "Publisher Bans Images of Muhammad in New Book: Yale University Press has ditched plans to reprint the Danish cartoons and other caricatures in a study of the controversy"The Guardian। ২০১৬-০৩-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. Bone, James (আগস্ট ১৮, ২০০৯)। "Yale University Press accused of cowardice over Muhammad cartoons"The Times 
  5. Nelson, Cary (আগস্ট ১৩, ২০০৯)। "Academic Freedom Abridged at Yale Press" (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। American Association of University Professors। ২০০৯-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-১৭ 
  6. "Criticism grows over Yale Muhammad censorship"The Bookseller। আগস্ট ১৭, ২০০৯। ২০০৯-০৮-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  7. Hitchens, Christopher (আগস্ট ১৭, ২০০৯)। "Yale Surrenders; Why did Yale University Press remove images of Mohammed from a book about the Danish cartoons?"Slate 
  8. Bone, James (আগস্ট ১৮, ২০০৯)। "Yale University Press accused of cowardice over Muhammad cartoons"The Times