দর্পন স্নায়ু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

প্রতিফলক স্নায়ু হলো এমন এক স্নায়ু যা প্রাণীর কাজের সময় এবং প্রাণী যখন অন্যকে অনুরূপ কাজ করতে দেখে তখন একইভাবে উদ্দীপ্ত হয়। সুতরাং, এই স্নায়ু এমনভাবে প্রতিফলণ করে যেন প্রত্যক্ষকারী নিজেই কাজটি করছিল।

মানুষের মাঝে, প্রতিফলক স্নায়ুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মস্তিষ্কের ক্রিয়ার সন্ধান পাওয়া গেছে প্রিমোটর কর্টেক্সে, সাপলিমেন্টারি মটর এরিয়ায়, প্রাইমারি সোমাটেবসেনসরি কর্টেক্সে এবং ইনফিরিওর পেরিয়াল কর্টেক্সে। মানুষের মধ্যকার প্রতিফলক স্নায়ুর আচরণ চিন্তনীয় বিষয়। পাখিদের মাঝে অনুকরণ অনুরণের আচার এবং স্নায়ুবিক লক্ষণ এক ধরনের প্রতিফলণ প্রণালীর উপস্থিতি নির্দেশ করে।

প্রতিফলক স্নায়ুর কার্যকলাপ কীভাবে সচেতন আচরণে সহায়তা করে, তার ব্যাখ্যায় সর্বজন স্বীকৃত কোনো স্নায়ুবিক বা গাণিতিক নকশা এখন পর্যন্ত এগোনো যায়নি। প্রতিফলক স্নায়ুর বিষয়টি তীব্র বিতর্কের জন্ম দিতে থাকে। ২০১৪ সালে "ফিলোসফিক্যাল ট্রানজেকশন অব দ্যা রয়্যাল সোসাইটি বি" প্রতিফলক স্নায়ু গবেষণা উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্করণ প্রকাশ করে।

সচেতন স্নায়ুবিজ্ঞান এবং সচেতন মনবিদ্যার কিছু গবেষকেরা ধারণা করেন যে, এই পদ্ধতিটি মনস্তত্বিক কার্যপ্রণালীতে উপলব্ধি/কাজের সাদৃশ্যতা অনুভূতি যোগায়। তারা যুক্তি দেখান, প্রতিফলক স্নায়ু হয়তবা অন্য মানুষের কার্যকলাপ বোঝার জন্য এবং অনুকরণের মাধ্যমে নতুন দক্ষতা অর্জনে প্রয়োজনীয়।

কিছু গবেষকের ধারণা প্রতিফলন প্রকৃয়া হয়ত অবলোককনকৃত কার্যকলাপের অনুকারে সহায়তা করার মাধ্যমে মনস্তাত্ত্বিক দক্ষতা লাভে অবদান রাখে। যদিও অন্যরা প্রতিফলন স্নায়ুকে ভাষাগত দক্ষতার সাথে সংযুক্ত করে। মার্কোলাকোবানির মতো স্নায়ুবিশারদগণ যুক্তি দেখিয়েছেন যে, মানুষের মধ্যকার প্রতিফলন স্নায়ু প্রণালী অন্যান্য মানুষের কাজ এবং উদ্দেশ্য বুঝতে আমাদের সাহায্য করে। ২০০৫ সালের মার্চে প্রকাশিত এক গবেষণপত্রে লাকোবানি এবং তার সহকর্মীরা বিবৃতি দিয়েছিলেন, প্রতিফলন স্নায়ু উপলব্ধি করতে পারে যে, একটা চায়ের কাপ তুলতে যাওয়া মানুষটি চা পান করতে চায় নাকি টেবিল থেকে সেটি সড়াতে চাই। লাকোবানি আরও বলে, প্রতিফলন স্নায়ু হলো সহমর্মিতার মত অনুভবের সক্ষতা লাভের স্নায়ুবিক ভিত্তি।


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]