তিসীখালী মাজার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

তিসিখালি মাজার

নাটোরের সিংড়া উপজেলা শহর থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরে চলনবিলের মাঝখানে অবস্থিত হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.)-এর মাজার শরিফ, লোকে যাকে ‘তিসিখালি মাজার’ বলে চিনে থাকেন।

ঐতিহ্যবাহী তিসিখালি মেলার প্রচলন বহু বছর আগে থেকে। মাজার তৈরি ও মেলা শুরুর সঠিক ইতিহাস কোথাও তেমন লিপিবদ্ধ নেই। লোকমুখে এই মাজার ও মেলাকে নিয়ে অনেক কিংবদন্তি শুনতে পাওয়া যায়। জনশ্রুতি আছে, বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর নির্দেশে হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.) সুদূর আরব থেকে নাটোর জেলায় আসেন। তার আসল নাম কেউ না জানলেও হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.) বা ‘ঘাসি বাবা’ নামটি লোকমুখে প্রচলিত। হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.)-এর জীবনাচরণ ও নামকরণের বিষয়টি সম্পর্কে আরো জোরালো কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। তা হলো, চলনবিলের ফসলি জমিতে একসময় প্রচুর তিসি বা তিল ফলের চাষ হতো। মাঠে বেড়ানোর সময় একদিন দেওয়ান সাহেব মালিকের অনুমতি ছাড়া একটি তিল মুখে দেন। হঠাৎ দৈববাণীতে তিনি তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত বোধ করেন এবং মালিকের কাছে নিজের ক্ষমা লাভের আশায় তাকে খুঁজতে থাকেন। স্থানীয় ডাহিয়া গ্রামে এক ঘোষ পরিবার ছিলেন সেই জমির মালিক। তার কাছে বারো বছর বিনা বেতনে চাকরের কাজের জন্য আবেদন করেন। উল্লেখ্য, জমির মালিক ছিলেন হিন্দু ধর্মের লোক। দয়াবশত তিনি দেওয়ানকে রাখালের কাজ দেন। তার কাজ ছিল গবাদিপশুর দেখভাল করা এবং তাদের  জন্য চলনবিলের মাঠ থেকে ঘাসের জোগান দেওয়া।

কিন্তু ক্রমেই তার কিছু অলৌকিক ঘটনা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং সবাইকে অবাক করে দেয়। এসব অলৌকিক ঘটনা হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.)-কে করে তোলে অনন্য। অবশেষে বারো বছর বিনা বেতনে শ্রমের পর তিনি মুক্ত হন এবং তার আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাস করে সেই মালিকের পরিবার হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.)-এর কাছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। দেখতে দেখতে তার অগণিত অনুসারী জুটে যায় এবং তিনি এ অঞ্চলে নির্বিঘ্নে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে শুরু করেন ও জনসেবায় ব্রতী হন। পরবর্তী সময়ে তার মৃত্যুর পর সবাই কবরটিকে হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.)-এর মাজার হিসেবে বিবেচনা করে আস্তানা গড়ে তোলেন। [১][২][৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "চলনবিলের ঐতিহ্যবাহী তিসিখালি মেলা"Bangladesher Khabor | Latest News, Breaking News, Sports, Entertainment, Politics, Business, Videos & Photos। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  2. "ঐতিহ্য হারাচ্ছে ৪০০শত বছরের পুরনো তিশিখালী মেলা"সময়ের সংবাদ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৩-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৮ 
  3. "ঐতিহ্য হারাচ্ছে ৪০০ বছরের পুরনো তিশিখালী মেলা | সংস্কৃতি | The Daily Ittefaq"archive1.ittefaq.com.bd। ২০২০-০৬-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৮