বিষয়বস্তুতে চলুন

ডল্লু কুনিথা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ডল্লু কুনিথা ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের একটি ঐতিহ্যবাহী নৃত্য। এটি কর্ণাটকের ঢোল নাচ নামেও পরিচিত।[] কর্নাটকের এই জনপ্রিয় লোকনৃত্য শ্রী বিরালিঙ্গেশ্বর -এর উপাসনার সাথে যুক্ত, যাকে ভগবান শিবের একটি রূপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[] এই নাচ মুলতঃ উত্তর কর্ণাটকের কুরুবা গৌড়া সম্প্রদায়ের আচার-অনুষ্ঠানের অংশবিশেষ।[]

উতপত্তি

[সম্পাদনা]

ডল্লু কুনিথা নামটি ঐতিহ্যবাহী যন্ত্র ডল্লু থেকে নেওয়া হয়েছে যা কর্ণাটকের সমস্ত বীরেশ্বর ভগবানের মন্দিরে বিদ্যমান। নৃত্যের মূল বিষয় প্রভু বীরেশ্বর ও ডোল্লা-অসুর -এর লোককথা যা 'হালুমাথা পুরাণ' বা কুরুবা পুরাণ নামেও পরিচিত তার উপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছে।[] কিংবদন্তী অনুসারে রাক্ষস ডোল্লা-অসুর ভক্তিভরে শিবের পূজা করলে শিব তুষ্ট হয়ে তার সামনে উপস্থিত হন এবং তাকে মনোমত বর কামনা করতে বলেন; উত্তরে অসুর কামনা করে যেন তাকে অমরত্ব দান করা হয় অথবা তাকে এই বর দেওয়া হোক যেন তিনি শিবকে গ্রাস করতে সক্ষম হন। কিন্তু ভগবান শিব তাকে অমরত্বের আশীর্বাদ দিতে প্রত্যাখ্যান করেন। রেগে গিয়ে অসুর শিবকে গ্রাস করেন। কিন্তু তার উদরে স্থিত হয়ে শিব নিজের আকার বৃদ্ধি করতে থাকেন। অসুর, যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে শিবকে বেরিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন। শিব অসুরের শরীর চিরে তাকে হত্যা করে বেরিয়ে আসেন এবং সেই রাক্ষসের চামড়া দিয়ে ঢোল বা ঢোলক নামক বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুত করেন এবং আশীর্বাদস্বরূপ তা নিজের ভক্তদের দান করেন।[][] ডল্লু কুনিথা নৃত্যের মাধ্যমে এই কাহিনিকেই বর্ণনা করা হয়।

নৃত্য প্রদর্শন

[সম্পাদনা]

ডল্লু কুনিথা নৃত্য প্রধানত ১০ থেকে ১২ জনের একটি দলে পরিবেশিত হয়। পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই ডল্লু কুনিথা দলের অংশ হতে পারে।[] ঢোল বাদ্যযন্ত্র এই নাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।

ডল্লু কুনিথার নৃত্য প্রদর্শনের জন্য় অনেক সহনশক্তি এবং ধৈর্যের প্রয়োজন হয় কারন কয়েক ঘন্টার জন্য ভারী ঢোলক বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তার সাথে নৃত্য পরিবেশন করতে হয়। সাধারণত একটি বৃত্তাকার বা অর্ধবৃত্তাকার সমূহে সঞ্চালিত হয়ে নর্তকরা নৃত্য পরিবেশন করে ও ঢোলকধারীরা তালে তালে ঢোল পিটিয়ে গান গায়।[] উত্তর কর্ণাটকের কুরুবা গৌড়া সম্প্রদায় প্রাচীনকাল থেকে কিংবদন্তি অনুসরণ করে এই নৃত্যধারা বজায় রেখে চলেছে। উৎসবের মরসুমে কর্ণাটকে এট একটি অতি জনপ্রিয় বা অনুষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]