জুলিয়াস ওয়েলহাউসেন
জুলিয়াস ভেলহাউজেন | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ৭ জানুয়ারি ১৯১৮ | (বয়স ৭৩)
শিক্ষা | গ্যোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয় |
গির্জা | লুথারান |
দায়িত্ব | পুরাতন নিয়মের অধ্যাপক, গ্যোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রাইফসভাল্ড বিশ্ববিদ্যালয়, হালে-ভিটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মারবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় |
পদবি | ডক্টর |
জুলিয়াস ভেলহাউজেন (১৭ মে ১৮৪৪ – ৭ জানুয়ারি ১৯১৮) ছিলেন একজন জার্মান বাইবেল পণ্ডিত ও প্রাচ্যতত্ত্ববিদ। তাঁর গবেষণা কর্মজীবনের শুরু হয় পুরাতন নিয়ম নিয়ে, এরপর তা বিস্তৃত হয় ইসলামীয় অধ্যয়ন এবং পরবর্তীতে নতুন নিয়ম সম্পর্কিত গবেষণায়। তিনি পঞ্চপুস্তক বা তোরার রচনাতাত্ত্বিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন এবং ইসলাম ধর্মের প্রাথমিক সময়কাল নিয়ে গবেষণা করেন। পঞ্চপুস্তকের ব্যুৎপত্তি নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ দলিল তত্ত্ব নামে পরিচিত, যা এই ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান মতবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়।[১][২][৩]
জীবনী
[সম্পাদনা]ভেলহাউজেন হ্যামেলিন শহরে জন্মগ্রহণ করেন, যা তখন হ্যানোভার রাজ্যর অন্তর্গত ছিল। তিনি একজন প্রটেস্ট্যান্ট যাজকের পুত্র ছিলেন।[৪] গ্যোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি জর্জ এভাল্ডের অধীনে ধর্মতত্ত্ব পড়াশোনা করেন এবং ১৮৭০ সালে তিনি পুরাতন নিয়ম বিষয়ে প্রাইভাটডোজেন্ট পদে নিযুক্ত হন। ১৮৭২ সালে তিনি গ্রাইফসভাল্ড বিশ্ববিদ্যালয়তে ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। কিন্তু ১৮৮২ সালে বিবেকগত কারণে তিনি পদত্যাগ করেন।[৫]
তিনি পদত্যাগপত্রে লেখেন:
“আমি ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়নের প্রতি আগ্রহের কারণে এই বিষয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করি। কিন্তু ধীরে ধীরে উপলব্ধি করি, ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হিসেবে আমার দায়িত্ব কেবল একাডেমিক নয়, বরং শিক্ষার্থীদের প্রটেস্ট্যান্ট গির্জায় সেবা প্রদানের জন্য প্রস্তুত করাও এর অংশ। আমি এই ব্যবহারিক দায়িত্ব পালনে অযোগ্য বোধ করি এবং নিজের সব সতর্কতার পরও শিক্ষার্থীদের সেই কাজে অনুপযুক্ত করে তুলি। এই বিষয়টি আমার বিবেকে ভারী হয়ে উঠেছে।”[৬][৭]
এরপর তিনি হালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচ্য ভাষার অধ্যাপক হন, এবং ১৮৮৫ সালে মারবুর্গ এবং ১৮৯২ সালে গ্যোটিনগেনে অধ্যাপক নিযুক্ত হন, যেখানে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।[৫]
তিনি বিশেষভাবে পরিচিত হন তাঁর গ্রন্থ Prolegomena zur Geschichte Israels-এর মাধ্যমে। এছাড়াও তাঁর আরবি গবেষণাগুলোর মধ্যে The Arab Kingdom and its Fall উল্লেখযোগ্য। এই গ্রন্থে তিনি তোরাহর ব্যুৎপত্তি নিয়ে প্রচলিত মতবাদগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত ও বিশ্লেষণমূলক আলোচনা উপস্থাপন করেন এবং এই ধর্মগ্রন্থগুলোর সমাজ ও ইতিহাস-সংশ্লিষ্ট বিকাশ ব্যাখ্যা করেন।[৮][৯][১০]
অ্যালান লেভেনসনের মতে, ভেলহাউজেন ধর্মীয় ইহুদি-বিরোধিতাকে স্বাভাবিক বলে মনে করতেন এবং ইহুদি-বিদ্বেষ ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন।[১১]
Prolegomena zur Geschichte Israels এবং দলিল তত্ত্ব
[সম্পাদনা]টেমপ্লেট:More citations needed section
ভেলহাউজেন পুরাতন নিয়ম ও হেক্সাটিউকর গঠনতত্ত্ব নিয়ে তাঁর সমালোচনামূলক গবেষণার জন্য বিখ্যাত। তাঁর গ্রন্থ Prolegomena zur Geschichte Israels (১৮৭৮ সালে প্রথম প্রকাশিত Geschichte Israels নামে) তে তিনি দলিল তত্ত্বের একটি সুসংহত ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন। এর মতে, তোরাহ মূলত চারটি স্বতন্ত্র উৎস থেকে উদ্ভূত, যেগুলো মূসার সময়ের বহু পরে রচিত হয়েছিল এবং পরে একত্রে সংকলিত হয়।
এই মতবাদ ২০ শতকের অধিকাংশ সময়কালজুড়ে পঞ্চপুস্তক গবেষণায় প্রধান দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে প্রচলিত ছিল। পরবর্তী গবেষকরা এতে আরও উৎস চিহ্নিত করেন এবং আরও পরবর্তী সময়ে রচনার প্রস্তাব দেন।
তিনি উইলহেল্ম ডে ভেট্টেকে এই গবেষণার পথপ্রদর্শক হিসেবে চিহ্নিত করেন, যিনি ১৮০৬ সালে পঞ্চপুস্তকের উৎসগুলো (J, E, D, P) প্রথম বিশ্লেষণ করেন, যদিও এর ফলে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে হয়। ভেলহাউজেন মূলত ডে ভেট্টের কাজই আরও সুসংহতভাবে এগিয়ে নিয়ে যান।
অন্যান্য রচনা
[সম্পাদনা]তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু রচনা হলো:
- De gentibus et familiis Judaeis (১৮৭০)
- Der Text der Bücher Samuelis untersucht (১৮৭১)
- Die Phariseer und Sadducäer (১৮৭৪)
- Prolegomena zur Geschichte Israels (প্রথম সংস্করণ ১৮৭৮; ইংরেজি অনুবাদ ১৮৮৩)
- Muhammed in Medina (১৮৮২)
- Die Composition des Hexateuchs (১৮৭৬/৭৭)
- Israelitische und jüdische Geschichte (১৮৯৪)
- Reste arabischen Heidentums (১৮৯৭)
- Das arabische Reich und sein Sturz (১৯০২)
- Skizzen und Vorarbeiten (১৮৮৪–১৮৯৯)
- Medina vor dem Islam (১৮৮৯)
- ফ্রিডরিশ ব্লেক-এর Einleitung in das Alte Testament-এর পরবর্তী সংস্করণ সম্পাদনা (১৮৭৮–১৮৯৩)
- Die kleinen Propheten (১৯০২)
- The Book of Psalms, ইংরেজি অনুবাদ (১৮৯৮)
১৯০৬ সালে তিনি আডলফ হার্নাক এবং অন্যদের সঙ্গে যৌথভাবে Die christliche Religion গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তিনি নতুন নিয়ম নিয়ে কিছু গবেষণাও করেন, যার মধ্যে Das Evangelium Marci (১৯০৩), Das Evangelium Matthäi এবং Das Evangelium Lucae (১৯০৪) এবং Einleitung in die drei ersten Evangelien (১৯০৫) উল্লেখযোগ্য।[৫]
উদ্ধৃতি
[সম্পাদনা]- ↑ Cardozo, Nathan Lopes। "On Bible Criticism and Its Counterarguments"। Torat Emet। ৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২৪।
- ↑ "Did Moses Write the Pentateuch?"।
- ↑ Friedman, Richard Elliott (১৯৮৬)। Who Wrote the Bible?। Harper Collins। পৃষ্ঠা 26।
- ↑ Clements, R.E. A Century of Old Testament Study (Cambridge: Lutterworth Press, 1994), 7.
- ↑ ক খ গ Chisholm 1911।
- ↑ Levenson, Alan। "Was the Documentary Hypothesis Tainted by Wellhausen's Antisemitism? - TheTorah.com"। www.thetorah.com। Project TABS। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ Cited in Robert J. Oden Jr.,The Bible Without Theology: the Theological Tradition and Alternatives to It (Urbana: University of Illinois, 2000), p. 20.
- ↑ Wellhausen, Julius (২০১৬)। The Arab Kingdom and its fall। London: Routledge। আইএসবিএন 978-1-315-41033-3।
- ↑ Wellhausen, Julius (১৮৭৪)। Die Pharisäer und die Sadducäer।
- ↑ Wellhausen, Julius (১৯৯৪)। Prolegomena to the History of Israel।
- ↑ Levenson, Alan। "Was the Documentary Hypothesis Tainted by Wellhausen's Antisemitism?"।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]"Wellhausen, Julius"। New International Encyclopedia। ১৯০৫। [[Category:উইকিপিডিয়া নিবন্ধ যাতে নিউ ইন্টারন্যাশনাল এনসাইক্লোপিডিয়া থেকে একটি উদ্ধৃতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে]]
এই নিবন্ধটি একটি প্রকাশন থেকে অন্তর্ভুক্ত পাঠ্য যা বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনে: চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Wellhausen, Julius"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ। 28 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 507।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]