জিনা এবং ইতিবেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিনা এবং ইতিবেন
লোককাহিনী
নামজিনা এবং ইতিবেন
অঞ্চলআও নাগা

"জিনা এবং ইতিবেন " হল মোপুংচুকেটের দুই প্রেমিকের সম্পর্কে একটি আও নাগা লোককথা। তাদের সামাজিক অবস্থানে পার্থক্য ছিল। তাই দুঃখজনকভাবে তাদের বিচ্ছিন্ন হতে হয়েছিল।[১][২]

পটভূমি[সম্পাদনা]

ইতিবেন এবং জিনা দ্বাদশ শতাব্দীতে মোপুংচুকেট গ্রামের বাসিন্দা ছিল। জিনা দরিদ্র ঘরের একজন অপরিশীলিত ছেলে ছিল। বিপরীতক্রমে ইতিবেন ছিল বুদ্ধিমান এবং সুন্দরী। সে এক ধনী পরিবারের কন্যা ছিল। ইতিবেনের সৌন্দর্য সমগ্র অঞ্চল জুড়ে পরিচিত ছিল এবং অনেক ধনী ও সুদর্শন পুরুষ তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইতিবেন জিনার ভালবাসা এবং আকর্ষণে মোহিত হয়ে গিয়েছিল এবং তারা একে অপরের সাথে অবিচ্ছেদ্য হয়ে ওঠে। সময়ের সাথে সাথে জিনা এবং ইতিবেনের প্রেমের ব্যাপারটি গ্রামবাসীদের কাছে জানা হয়ে যায়। ইতিবেনের বাবা-মায়ের কাছেও বিষয়টি হয়। কিন্তু তারা তাদের সম্পর্কের ঘোর বিরোধী ছিল। তারা জিনার কাছে শর্ত রেখেছিল যে, সে যদি ইতিবেনকে তার স্ত্রী হিসেবে পেতে চায় তাহলে তাকে যৌতুক হিসেবে অর্থ দিতে হবে। জিনা যৌতুকের জন্য অর্থের ব্যবস্থা করা শুরু করে। কিন্তু অর্থ যোগাড় হবার আগেই, টেনিউর নামে আরেকজন ধনী এবং সুদর্শন ব্যক্তি যৌতুক নিয়ে আসে এবং ইতিবেনকে তার সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরেও জিনার প্রতি ইতিবেনের আকর্ষণ কমেনি এবং জিনা গোপনে মাঠে ইতিবেনের সঙ্গে দেখা করতে যেত। একদিন, যখন জিনা এবং ইতিবেন মাঠে একসাথে ছিল, তখন টেনিউর তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং ইতিবেনকে প্রচণ্ডভাবে প্রহার করে। প্রহারের ফলে ইতিবেন জ্ঞান হারায়। সে প্রচণ্ড অসুস্থ বোধ করে এবং তার অবস্থা আরও খারাপের দিকে যায়। জিনা রাতের পর রাত গোপনে তার সাথে থাকত এবং তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করত। যাইহোক, অবশেষে ইতিবেন মারা যায়। জিনা এতটাই হতাশ এবং অসহায় হয়ে পড়েছিল যে সেও অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার আর রোগমুক্তি হয়নি এবং অবশেষে এই অসুস্থতার কারণে তারও মৃত্যু ঘটে। তাদের মৃত্যুর আগে, প্রেমিকরা একে অপরকে অধোভূবনে আবার দেখা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।[৩]

মৃত্যুর পরই ইতিবেন ও জিনার প্রেম মিলিত হয়।

সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

মঞ্চ এবং সাঙ্গীতিক থিয়েটার[সম্পাদনা]

এই লোককথাটি অনেক মঞ্চ নাটকে রূপান্তরিত হয়েছে।[৪][৫]

সাহিত্য[সম্পাদনা]

"জিনা-ইতিবেন, এ রোমান্স রিটোল্ড" কবিতাটি রচনা করেছেন নবীনা দাস। এটি এই আও কিংবদন্তিটির ওপর ভিত্তি করে রচিত। এই কবিতায়, কবি দুইজন অবিস্মরণীয় প্রেমিক জিনা-ইতিবেনের গল্প বলেছেন যারা তাদের প্রতিটি পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকা সত্ত্বেও প্রেমে থেকে যায় এবং সত্যিকারের ভালবাসার সর্বোত্তম উদাহরণ হয়ে ওঠে।[৬] এই লোককথাটি নাগাল্যান্ড জুড়ে স্কুলে পড়ানো হয়।[৭][৮]

জিনা এবং ইতিবেন সৌধ[সম্পাদনা]

মোপুংচুকেটের ইকোলজি উদ্যানে এই দুই প্রেমিকের জন্য আলাদা আলাদা স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়েছে এবং এছাড়াও আলাদা ভাস্কর্য দিয়ে তাদের স্মরণ করা হয়েছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

নাগা লোককাহিনি

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "History revisited: The romance of Etiben and Jina, a folk tale of Ao tribes"india360.theindianadventure.com। ১৫ মে ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২০ 
  2. "Famous places in Mopungchuket"www.famousplacesinindia.in। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২০ 
  3. "Folklore from Northeast India – A Love Story from the Ao Tribe"thenortheasttravelblog.com। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২৪ 
  4. "Beyond Headlines : Taste of folklore in Nagamese play Best debut Birthday gift"The Telegraph। ২০ সেপ্টেম্বর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২০ 
  5. "Hill Theatre's Jina and Etiben mesmerizes a packed audience"Nagaland Today (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০১-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-০৩ 
  6. "Summary of the poem Jina and etiben ​"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২৪  zero width space character in |শিরোনাম= at position 37 (সাহায্য)
  7. "Jina and Etiben"onlinefreenotes.com। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২০ 
  8. "17 May 2020 Class X English"YouTube। ১৭ মে ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২০