চালুনি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

চালুনি হল বাংলাদেশ[১][২]পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত বাঁশ বা বেতের তৈরি ডালাজাতীয় একপ্রকার সরঞ্জাম[৩]। অঞ্চলভেদে এটি চালুন, চালনি, চালনা বা চাইল্নি নামেও পরিচিত।

ব্যুৎপত্তি ও ইতিহাস[সম্পাদনা]

চালুনি একটি তদ্ভব শব্দ।[১] জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস তাঁর ‘বাঙ্গালা ভাষার অভিধানে’ উল্লেখ করছেন যে চালুনি হলো বহুছিদ্রবিশিষ্ট বাঁশা বা তার নির্মিত একপ্রকার ছাঁকনিপাত্র যা দ্বারা শস‍্যাদি বা তার চূর্ণ চালা বা ঝাড়া হয়। চালুনি নিয়ে বাংলায় এক বা একাধিক প্রবাদ প্রবচন রয়েছে। ‘চালুনি বলে তোর পেছনে কেন ছেঁদা’ হল এমনই একটি একটি বাংলা প্রবাদ।

নরসিংহ বসুর ‘ধর্মমঙ্গল’ কাব‍্যে চালুনির উল্লেখ রয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে অতীতে ডোম সম্প্রদায়ের লোকেরা চালুনি বোনার কাজ করতেন।

বুনন পদ্ধতি[সম্পাদনা]

চালুনির বুনন পদ্ধতি অনকেটাই চাঙারির বুনন পদ্ধতি মতোই। প্রথমে ++ যোগচিহ্নের মতো একটার পর একটা বাঁশের চাঁচাড়ি বা বেত উপর-নিচে রেখে বুনতে হয়। আবার ×× গুণচিহ্নের মতো বোনা হয়। তবে প্রত‍্যেকটি বেতের মাঝে মাঝে কিছুটা ছেড়ে ছেড়ে বা ফাঁক রেখে বুনতে হয়। বোনার একপর্যায়ে যখন কিছুটা গোলকাকার হয়ে যায় তখন তা দেখতে অনেকটা জালিদার নকশার মতো দেখায়। বেতের মাঝে মাঝে কিছুটা ছেড়ে ছেড়ে বা ফাঁক রেখে বোনার ফলে চালুনির গঠন বেশ নরম হয়। তবে এর বেড় খুব শক্ত করে বানানো হয়। সবশেষে শক্ত দড়ি বা তার দিয়ে টান করে বাধা হয়।

ব্যবহার[সম্পাদনা]

গঠনে নরম হওয়ায় সাধারণত ভারি কাজে চালুনি ব‍্যবহৃত হয়না, বরং হালকা কাজে বিশেষত কোনো কিছু (যেমন-মুড়ি, চিড়ে, খই, চালে গুঁড়ো[৪] ইত‍্যাদি) বাছতে বা ঝাড়তে ব‍্যবহৃত হয়। অনেক সময় চালুনির উলটো দিকটিও কাজে লাগে। যেমন উৎসব বা পার্বণে লুচি বেলে চালুনির উপরে রাখা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বাঙালির-বাসনকোশন"draminbd.com/। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "কুলা চালুনি তেরি করে শেরপুরে সচ্ছলতা এসেছে অনেকের | সারাদেশ | The Daily Ittefaq"archive1.ittefaq.com.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. newsbangladesh.com। "বাঁশ-বেত শিল্পে সচ্ছল বরগুনার ঋষি পরিবারগুলো"www.newsbangladesh.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "শীতের স্মৃতি ধুপি পিঠা"www.localguidesconnect.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১১-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০৪