চাণক অন্নপূর্ণা মন্দির

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চাণক অন্নপূর্ণা মন্দির
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
অবস্থান
অবস্থানটিটাগড়, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা, পশ্চিমবঙ্গ
স্থাপত্য
ধরনবঙ্গীয় স্থাপত্যশৈলী, নবরত্ন মন্দির
সৃষ্টিকারীজগদম্বা দেবী

চাণক অন্নপূর্ণা মন্দির পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর-টিটাগড় অঞ্চলের একটি সুপ্রসিদ্ধ অন্নপূর্ণা মন্দির। ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরটির স্থাপত্য দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ির অনুরূপ হওয়ার লোকমুখে এটি দ্বিতীয় দক্ষিণেশ্বর নামে পরিচিত। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জগদম্বা দেবী। মন্দিরটি বঙ্গীয় স্থাপত্যশৈলীর নবরত্ন মন্দির ধারায় নির্মিত। ব্যারাকপুর-টিটাগড় অঞ্চলের প্রাচীন নাম চাণক; সেই সূত্রে এই মন্দিরটি চাণক মন্দির নামে পরিচিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা জগদম্বা দেবী ছিলেন দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা রাণী রাসমণির কণিষ্ঠা কন্যা। মন্দিরের নিকটবর্তী প্রাচীন ঘাটটিতে জগদম্বা দেবী প্রথম এসেছিলেন ১৮৭১-৭২ সালে। জগদম্বা দেবীর স্বামী মথুরানাথ বিশ্বাস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৎকালীন চিফ ইঞ্জিনিয়ার সি বি স্লেওয়ার্টের এস্টেটের জমি থেকে বর্তমান মন্দিরের ভূখণ্ডটি তার চার পুত্রের নামে ক্রয় করেন। মথুরবাবুর মৃত্যুর পর জগদম্বা দেবী পুত্রদের কাছ থেকে দানপত্রের মাধ্যমে সেবাইতরূপে এই জমির উত্তরাধিকারিণী হন। এই জমিতে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে রামকৃষ্ণ পরমহংস তার ইচ্ছায় সম্মতি জ্ঞাপন করেন। তারপর অক্লান্ত পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও অর্থব্যয়ে নির্মিত এই মন্দিরে দেবীপ্রতিষ্ঠা হয় ১৮৭৫ সালের ১২ এপ্রিল চৈত্রসংক্রান্তির দিন। জমি নির্বাচন, ভিত্তিস্থাপন, মন্দির প্রতিষ্ঠা ও পরে ১৮৮২ সালে উল্টোরথ উপলক্ষে মোট চারবার শ্রীরামকৃষ্ণ এই মন্দিরে আসেন।

জানা যায়, মন্দিরের সিংহদ্বারের উপর একটি সিংহমূর্তির স্থাপনা নিয়ে ব্রিটিশ সরকার মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইনি দ্বন্দ্ব্বে জড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রতীক সিংহ তারা নেটিভদের নিজস্ব মন্দিরে সংযোজন মেনে নিতে পারেনি। কিন্তু দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আদালত রায় দিয়েছিলেন, সিংহ বিক্রমের প্রতীকরূপে যে কেউ গ্রহণ করতে পারে।

স্থাপত্য[সম্পাদনা]

চাণকের মন্দিরটি বঙ্গীয় স্থাপত্যশৈলীর নবরত্ন মন্দির ধারায় নির্মিত। মূলমন্দিরটি দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে নির্মিত বলে এটি দ্বিতীয় দক্ষিণেশ্বর নামে পরিচিত। দক্ষ শিল্পী না পাওয়ায় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের মতো এখানেও টেরোকোটার অলংকরণ ব্যবহার করা যায়নি। যদিও এই মন্দিরে সুবিন্যস্ত কার্ণিসগুলিতে পঙ্খের কাজ অত্যন্ত সুনিপূণ।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • চাণকে দ্বিতীয় দক্ষিণেশ্বর, ইন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, সাপ্তাহিক বর্তমান, ২৯ নভেম্বর, ২০০৮ সংখ্যা।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]