গিনি (অঞ্চল)
গিনি (ইংরেজি: Guinea) আফ্রিকার পশ্চিম অংশে গিনি উপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলের ঐতিহাসিক নাম। এটি উত্তরে সহিল পর্যন্ত বিস্তৃত।
ঐতিহাসিকভাবে সাহারা-নিম্ন আফ্রিকার এই অঞ্চলটিই ইউরোপীয়দের সাথে প্রথম বাণিজ্য শুরু করে। হাতির দাঁত, সোনা এবং ক্রীতদাস বেচে অঞ্চলটি ধনী হয়ে ওঠে, এবং ১৮শ ও ১৯শ শতকে এখানে অনেকগুলি রাজ্য গড়ে ওঠে। এই রাজ্যগুলি সহিলের বিশাল রাজ্যগুলির চেয়ে আকারে ছোট হলেও এগুলিতে জনবসতির ঘনত্ব ছিল অনেক বেশি এবং অনেক বেশি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত ও প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ছিল। এই রাজ্যগুলির উপস্থিতির কারণে আফ্রিকার অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এখানে উপনিবেশবাদী ইউরোপীয়রা বেশি বাধার সম্মুখীন হয়। এ কারণে ১৯শ শতকের একেবারে শেষে এসে অঞ্চলটি ইউরোপীয়দের করায়ত্ত হয়।
গিনি নামটি বার্বার ভাষার "aginaw" শব্দটি থেকে পর্তুগিজ হয়ে বিভিন্ন ইউরোপীয় ভাষায় প্রবেশ করেছে। এটির আদি অর্থ ছিল "কালো", অর্থাৎ "কৃষ্ণাঙ্গদের দেশ"।
গিনি অঞ্চলকে অনেক সময় নিম্ন গিনি এবং ঊর্ধ্ব গিনি --- এই দুই অঞ্চলে ভাগ করা হয়। নিম্ন গিনি অঞ্চলটি আফ্রিকার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ব একটি অঞ্চল। এটি দক্ষিণ নাইজেরিয়া, বেনিন, টোগো এবং ঘানা নিয়ে গঠিত। অন্যদিকে ঊর্ধ্ব গিনি অঞ্চলটি অনেক কম জনঅধ্যুষিত; এটি কোত দিভোয়ার থেকে গিনি বিসাউ পর্যন্ত বিস্তৃত।
অতীত শতকের ইউরোপীয় বণিকেরা গিনি অঞ্চলটিকে রপ্তানিকৃত দ্রব্যের উপর ভিত্তি করে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছিল। বেনিন ও নাইজেরিয়ার পূর্ব অংশটির নাম দেয়া হয়েছিল ক্রীতদাস উপকূল (Slave Coast), বর্তমান ঘানা অঞ্চলটির নাম দেওয়া হয়েছিল স্বর্ণ উপকূল (Gold Coast), আর এর পশ্চিমে ছিল হাতির দাঁতের উপকূল (Ivory Coast)। এরও পশ্চিমে বর্তমান লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওন অঞ্চলটি পরিচিত ছিল মরিচ উপকূল (Pepper Coast) বা শস্য উপকূল (Grain Coast) নামে।
গিনি অঞ্চলের রাষ্ট্রসমূহ
[সম্পাদনা]- বেনিন
- কোত দিভোয়ার
- বিষুবীয় গিনি
- ঘানা
- গিনি
- গিনি-বিসাউ
- লাইবেরিয়া
- সিয়েরা লিওন
- টোগো
- দক্ষিণ নাইজেরিয়া
- পশ্চিম ক্যামেরুন