গাজী বেজি এবং জাবেউর মেজরির বিচার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ঘাজি বেজি[১][২] এবং জাবেউর মেজরি হলেন দুই তিউনিসিয় নাগরিক। ফেসবুকে নবী মুহাম্মদের নগ্ন কার্টুন প্রকাশ করার অভিযোগে "নৈতিকতা লঙ্ঘন, মানহানি এবং জনসাধারণের শৃঙ্খলা ব্যাহত করার" দায়ে ২০১২ সালের ২৮শে মার্চ তাদেরকে সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।[৩][৪] মেজরির বিচার আদালতে হয়। তাঁর বন্ধু বেজি অভিযোগ এড়াতে ইউরোপে পালিয়ে যান এবং অনুপস্থিত অবস্থায় দোষী সাব্যস্ত হন। মেজরির আইনজীবী তাঁর মক্কেলের চিকিৎসা মূল্যায়ন প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে তাঁকে "মানসিকভাবে অস্থিতিশীল" এবং গত ছয় বছর ধরে বেকার বলে বর্ণনা করেন।[৫]

শুরুতে মাত্র কয়েকটি সংগঠন এই ঘটনার সমালোচনা করে। এর মধ্যে ছিলো লিগ অফ তিউনিসিয়ান হিউম্যানিস্টস, রিপোর্টার্স উইদাউট ফ্রন্টিয়ার্স এবং অন্যান্য স্বাধীন জঙ্গি সংগঠন। মরোক্কোর মানবাধিকার কর্মী কাসেম এল ঘাজ্জালিও তাঁর ব্লগে এই ঘটনাটি প্রচার করেছিলেন, পরে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে জাবেউর মেজরির গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করেছিলেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই দুই ব্যক্তিকে "শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত" উল্লেখ করে বিবেকের বন্দী হিসেবে অভিহিত করে এবং এই মামলাটিকে তিউনিসিয়ান সরকারের "অভিব্যক্তির স্বাধীনতার উপর ক্রমবর্ধমান আক্রমণ" হিসেবে বর্ণনা করে। সংস্থাটি তিউনিসিয়াকে অবিলম্বে উভয়ের বিরুদ্ধে রায় বাতিল করার আহ্বান জানায়। ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন এক্সচেঞ্জ এই রায়কে "একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা" হিসেবে বর্ণনা করে এবং এটিকে "মুক্তভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করার 'অপরাধে' সাংবাদিক, শিল্পী ও নারীদের বিরুদ্ধে বারবার আক্রমণের" অংশ বলে উল্লেখ করে।[৬]

রয়টার্স এই ঘটনাকে তিউনিসিয়ার ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী নেতৃবৃন্দ, যারা ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিউনিসিয়ার বিপ্লবের পর ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন, বাকস্বাধীনতা দমন করছে এমন অভিযোগকে প্রশ্রয় দেওয়ার উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসও এই মামলাটিকে "অনেক তিউনিসিয়ানকে হতবাক" এবং "তিউনিসিয়ায় ইসলামের নতুন গুরুত্বের লক্ষণ" হিসেবে বর্ণনা করে। ডয়চে ভেলে একে তিউনিসিয়ান ব্লগারদের বিপ্লব-পরবর্তী হতাশার উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করে লেখে, "তাদের বিপ্লব ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।" এক ব্লগার এই মামলাটিকে সরকারি উকিলরা কতটা "নির্বাচনী" হয়ে উঠেছেন তার একটি উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, এবং উল্লেখ করেছেন যে ফেসবুকে সহিংসতা বা বোমা হামলার আহ্বান কখনও একইভাবে বিচারের আওতায় আনা হয়নি।

প্রায় দুই বছর কারাবাসের পর ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে জাবেউর মেজরিকে মুক্তি দেওয়া হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Kacem El Ghazzali (১ এপ্রিল ২০১২)। "Tunisian Atheists sentenced to seven and a half years of prison"। Atheistica। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১২ 
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; R64 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; R642 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. Jihen Laghmari (৬ এপ্রিল ২০১২)। "Tunisia Jails Two Men Over Prophet Caricatures on Facebook"। Bloomberg। জানুয়ারি ১৮, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১২ 
  5. "Jailed Tunisian loses appeal over Facebook Prophet Mohammad cartoons"। Al Arabiya News। Agence France-Presse। ২৫ জুন ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১২ 
  6. "Un événement extrêmement inquiétant ... des attaques répétées contre les journalistes, les artistes et les femmes qui commettent le « crime » d'exprimer librement leur opinion". "Le TMG de l'IFEX s'inquiète des attaques répétées qui ciblent les manifestants, les médias, les acteurs et les universitaires" (French ভাষায়)। International Freedom of Expression Exchange। ১০ এপ্রিল ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১২