খামার মঠ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
খামার মঠ
খামার মঠ
মঠের তথ্য
অবস্থানখাতানবুলগ জেলা, ডোরনোগোভি প্রদেশ, মঙ্গোলিয়া
প্রতিষ্ঠাতাদুলডুইটিন দানজানরাভজা
স্থাপিত১৮২০
ধরনতিব্বতি বৌদ্ধধর্ম
ধর্মীয় গোষ্ঠীলাল টুপি ধর্মসম্প্রদায়
স্থাপত্যশিল্পচীনা, মঙ্গোল এবং তিব্বতি প্রভাব

খামার মঠ ( মঙ্গোলীয়: Хамарын хийд , খামার খিদ ) হলো মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত একটি বৌদ্ধ মঠ। ১৮২০ সালে এই মঠের প্রতিষ্ঠিা হয়েছিল। ১৯৩৭ সালে ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি অঞ্চলে এটাই ছিল বৌদ্ধ লাল টুপি ধর্মসম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মঠ, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষা কেন্দ্র।[১] এই বৌদ্ধ মঠটি ১৯৯০ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এটি খাতানবুলগ জেলার ডরনোগোভি প্রদেশে অবস্থিত। প্রাদেশিক রাজধানী সাইনশন্দ থেকে এর অবস্থান প্রায় ৪৭ কিমি দক্ষিণে। এই মঠে ৮০টিরও বেশি মন্দির রয়েছে। এখানে প্রায় ৫০০ জন সন্ন্যাসীর থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৮২০ সালে দুলডুইটিন দানজানরাভজা নামে নাইংমা লাল টুপি স্কুলের ১৭ বছর বয়সী বৌদ্ধ ধর্মের একজন লামাবাদী সন্ন্যাসী এই খামার মঠটি প্রতিষ্ঠিা করেন। দুলডুইটিন দানজানরাভজা মঠের স্থানটি বেছে নিয়েছিলেন এই বিশ্বাসের উপর ভর করে যে, আশেপাশের গোবি মরুভূমির এলাকাটি আধ্যাত্মিক শক্তি বিকিরণে করে। মঠের উত্তরে অনেকগুলি গুহা রয়েছে যেখানে বৌদ্ধভিক্ষুরা টানা ১০৮ দিন (১০৮ বৌদ্ধধর্মে একটি পবিত্র সংখ্যা) ধরে উচ্চ স্তরের ধ্যানের অনুশীলন করতে পারেন।

দানজানরাভজার মূর্তি

দানজানরাভজা ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, কবি এবং মঙ্গোলিয়ান সমাজের কঠোর সমালোচক। তিনি জনশিক্ষা এবং মহিলাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ধারণাকে সমর্থন করেছিলেন। এক আলোকিত সমাজের মডেল হিসাবে গোবি মরুভূমির বুকে এই মঠটি প্রতিষ্ঠা করেন। মঠটি আশেপাশের সম্প্রদায়ের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিল। এই মঠে একটি পাবলিক লাইব্রেরি, একটি জাদুঘর এবং কবিতা আবৃত্তি জন্য একটি হল ঘর রয়েছে। এটি মঙ্গোলিয়ার প্রথম পেশাদার পাবলিক থিয়েটার যা নামতার দুলাখ দাতসান ("গল্প গানের কলেজ") নামে বিশেষ ভাবে পরিচিত। এই শিল্পীগোষ্ঠী গোবি অঞ্চল জুড়ে প্রায় ৩০০ জন শিল্পীর একটি ভ্রাম্যমান কোম্পানিকে স্পনসর করে। ১৮৩০ সালের মধ্যে খামার মঠ শিশুদের জন্য একটি স্কুলও অন্তর্ভুক্ত করে। যাখুউখদিন দাতসান নামে পরিচিত। এটি মঙ্গোলি, তিব্বতি সাহিত্য, গণিত, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, ইতিহাস বিষয়ে একটি অ-ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করে।

১৯৩৭ সালে মঠের লামাদের মাঠ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে খোরলোগিন চোইবালসানের স্তালিনবাদীর অংশ হিসাবে মঠটিকে সম্পূর্ণরূপে ভস্মীভূত করে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়। অনেক লামাকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল। অন্যদের জোরপূর্বক লামা করা হয়েছিল।

বর্তমান মঠটি মঙ্গোলিয়ায় ১৯৯০ সালের গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পরে নির্মিত হয়েছিল। মঠের পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

গ্যালারি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "The Center of the World's Spiritual Energy"Atlas Obscura (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৪ 
  2. Brooks, Jessica (২০২০-০৬-২২)। "Khamariin Khiid Monastery"Eternal Landscapes Mongolia (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৪