ক্ষিপ্রতা
ক্রীড়া বিজ্ঞানে ক্ষিপ্রতা (ইংরেজি: Agility) বলতে কোনও একটি উদ্দীপকের প্রতিক্রিয়ায় দ্রুত ও দক্ষভাবে সমগ্র শরীরের দ্রুতি পরিবর্তন বা দিক পরিবর্তন করার ক্ষমতাকে বোঝায়।[১]
ক্ষিপ্রতা এমন একটি ক্ষমতা যা বারবার মহড়া দিয়ে বা পূর্ব-পরিকল্পনা করে হয় না। যখন চলনের স্থান বা কাল বা উভয়ের ব্যাপারে কোনও অনিশ্চয়তা থাকে, তখনই ক্ষিপ্রতার আলোচনা প্রাসঙ্গিক। ক্ষিপ্রতা কোন বদ্ধ দক্ষতা নয়, বরং উন্মুক্ত দক্ষতা। অন্য ভাষায় ক্ষিপ্রতা চারপাশের সর্বদা পরিবর্তনশীল পরিবেশ থেকে আগত বিভিন্ন উদ্দীপকের অভিযোজনমূলক প্রতিক্রিয়া হিসেবে উদ্ভূত হয়।[১]
ক্ষিপ্রতার দুইটি উপাদান আছে: বুদ্ধিভিত্তিক ও শারীরিক। বুদ্ধিভিত্তিক উপাদানটিতে রয়েছে পারিপার্শ্বিক অবস্থা অনুধাবন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত-গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়গুলি। চোখ দিয়ে দৃষ্টিসীমার ভেতরে তন্ন তন্ন করে মনোনিবেশ সহকারে দেখা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেওয়া, দৃষ্টি-উদ্দীপকদের চলনের মধ্যকার বিন্যাস চিনতে পারা, পূর্ব থেকে পরিবেশের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন অনুমান করা, কম সময়ে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানো, ইত্যাদি ক্ষিপ্রতার প্রথম ও বুদ্ধিভিত্তিক উপাদান।[১]
ক্ষিপ্রতার দ্বিতীয় তথা শারীরিক উপাদানটি হল দ্রুততার সাথে সমগ্র শরীর জড় অবস্থা থেকে নড়ানো, কিংবা দ্রুততার সাথে গতিবেগ বাড়ানো (ত্বরণ) বা কমানো (মন্দন) কিংবা গতির দিক পরিবর্তন করা (ডানে-বামে-সামনে-পেছনে-উপরে-নিচে)। এক্ষেত্রে অনেকগুলি শারীরিক বিষয় ক্ষিপ্রতার সাথে সম্পর্কিত। শরীরের, বিশেষ করে পায়ের পেশীর শক্তি, পেশীর ক্ষমতা (একক সময়ে পেশীর কাজ করার হার), শরীরে মেদের পরিমাণ (যেগুলিকে জড় অবস্থা থেকে নড়ানোর জন্য পেশীর বেশি কাজ করতে হয়), দৌড়ানোর, নড়ার বা শারীরিক ভঙ্গি পরিবর্তনের কৌশল (অভিকর্ষ ও শরীরের ভারকেন্দ্রকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে নড়া), শরীরের ভারসাম্য রক্ষার কৌশল, ইত্যাদি।[১]