কাসপার হুসার
কাসপার হুসার | |
---|---|
জন্ম | অজানা | ৩০ এপ্রিল ১৮১২ (?)
মৃত্যু | ১৭ ডিসেম্বর ১৮৩৩ (বয়স ২১?) এন্সবিস, বাবারিয়া, জার্মান কনফেডারেসন |
মৃত্যুর কারণ | ছুরিকাঘাত |
পরিচিতির কারণ | রহস্যময় ব্যক্তি |
কাসপার হুসার (জন্মঃ ৩০ এপ্রিল, ১৮১২? ; মৃত্যুঃ ১৭ ডিসেম্বর, ১৮৩৩) একজন জার্মান রহস্যময় বালক যিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় একটি ছোট কুঠরিতে বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছেন। গ্র্যান্ড ডিউক অক বাডেনের সঙ্গে কাসপারের চেহারার আশ্চর্য রকম মিল থাকায় অনেকেই কাসপারকে রাজবংশের উত্তারিধারী হিসেবে মনে করতেন। কিন্তু পরর্বীতে পেশাদার ইতিহাসবিদরা এ মতবাদ নাকচ করে দেন।[১] ১৮৩৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৮২৮ সালের মে সাসের এক ছুটির দিনে মুচি জর্জ ওয়াইকমান নুরেমবার্গের টাউন স্কোয়ারে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখতে পান, ছেঁড়াকাটা পোশাক পরা শক্ত সামর্থ্য একজন যুবক অদ্ভুত ভঙ্গিতে হেঁটে যাচ্ছে। যুবকটির হাঁটার ভঙ্গিটি ছিল, যেন সে প্রথমবার হাঁটতে বের হয়েছে। মুচি জর্জ কাজ ফেলে ছেলেটির কাছে যান কিন্তু ছেলেটি “আমি জানি না” ছাড়া কোন কথাই বলতে পারছিলনা। ছেলেটির সারা শরীর ছিল ফ্যাকাসে এবং তার পা দিয়ে রক্ত পরছিল। জর্জ ছেলেটির কাছে দুটি চিঠি দেখতে পান। চিঠি দু’টো সামরিক বাহিনীর চতুর্থ স্কোয়াড্রনের ক্যাপ্টেন ওয়েসেনিগকে উদ্দেশ্য করে লেখা। দুটু চিঠির বক্তব্য প্রায় একই ধরনের। যার একটিতে লেখা ছিল, “এই বালকের নাম ‘কাসপার হুসার’। ৩০ এপ্রিল, ১৮১২ সালে জন্ম। বয়স-১৭, সে রাজার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী, যেমনটি তার বাবাও ছিলেন। তার বাবা নেই। আমি হত দরিদ্র। ছেলেটির দেখভাল করতে পারছি না।”
আরেকটি চিঠিতে একজন অজানা লেখক লিখেছেন, “ছেলেটিকে ৭ অক্টোবর, ১৮১২ সালে আমার জিম্মায় গ্রহণ করি। এরপর তাকে সোমান্য পড়তে ও লিখতে শিখাই। সে খ্রিস্টান এবং ছেলেটি একদিনও আমার বাড়ির বাইরে যায়নি।”[২] কিন্তু চিঠি দুটির হাতের লেখা একই ছিল। এরপর মুচি জর্জ তাকে ক্যাপ্টেন ওয়েসেনিগের কাছে নিয়ে যায় এবং সেখানে ছেলেটি শুধু বলে, আমি আমার বাবার মত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই ও ঘোড়া! ঘোড়া! বলে চিৎকার করে। এবং আগের মতই "আমি কিছু জানি" বলতে থাকে। এরপর তাকে পুলিস স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যুবকটি তার নাম রেখে কাসপার হুপার। সেখানে দেখা যায় সে টাকা চিনতে পারে, সামান্য পড়তে পারে এবং কিছু প্রার্থনা করতে পারে।[৩]
এরপর কাসপার আন্ডেইয়াস হিলটেল নামে এক জেলারের তত্তাবধানে ২ মাস অবস্থান করে। সে শারীরীকভাবে যথেষ্ট সুস্থ ছিল।[৪] সেখানে থাকার সময় দেখা যায় কাসপার খুব দ্রুত সবকিছু শিখে ফেলছে। তার স্মৃতি শক্তিও ভাল ছিল। কিন্তু সে পানি ও রুটি ছাড়া কিছু খেত না।
রহস্যময় ঘটনা
[সম্পাদনা]কাসপর একপর্যায়ে কথা বলা শিখে ফেলে। তাছাড়া তার শ্রবণ শক্তি ছিল প্রখর। সে অনেক দূরের ফিসফিস কথাও শুনতে পেত এবং অন্ধকারে দেখতে পেত। কথা বলা শেখার পর সে তার ঘটনা বর্নানা করে। তার বর্ণনা মতে, মুচির সাথে দেখা হওয়ার আগে সে ৯ ফুট/৪ ফুট একটি কুঠরিতে কাটিয়েছে। এবং সেখানে একটি খরের গাদা ছিল যেখানে সে সব সময় ঘুমিয়ে কাটাত। তার কুঠুরিতে সূর্যের আলো প্রবেশ করেনি। সে এর আগে কোনদিন মানুষও দেখে নি। একদিন হঠাৎ করে এক লোক তাকে ঘোড়ায় উঠিয়ে দুটি চিঠি দিয়ে নুরেমবার্গের গেটে রেখে যায়।
এরপর থেকে সবাই তার সেই কুঠুরি খুঁজতে থাকে। তখন এর জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কেউ কোনদিন কুঠরির সন্ধান দিতে পারে নি। লোকমুখে এটাও রটে যায় যে সে রাজবংশের ছেলে। কেউ তাকে উত্তারিধার থেকে বঞ্চিত করতে কুঠরিতে বন্দি করে রেখেছিল। পরে কাসপারের দেখাশোনার দায়িত্ব নেন জর্জ ফ্রিডরিশ দ্যুমার নামে এক বিজ্ঞানী। গ্র্যান্ড ডিউক অক বাডেনের সঙ্গে কাসপারের চেহারার আশ্চর্য রকম মিল ছিল। এই মিলের কারণেই অনেকে ধারণা করতে শুরু করে যে, কাসপার আসলে রাজবংশের ছেলে এবং সিংহাসনের অধিকারী। কারণ তার জন্মের কাছাকাছি সময়ে রাজবংশের দুটি শিশু মারা যান। অনেকেই মনে করেছিল তাদেরই একজন কাসপার। বিজ্ঞানী জর্জ দ্যুমারের পর জর্জকে রাখা হয় নুরেমবার্গের কাছের আনসবাখ গ্রামের বাসিন্দা ডাক্তার মেয়ারের কাছে।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]কাসপারের কথা যখন চারদিকে ছড়িয়ে পরে এবং অনেকেই তাকে রাজার ছেলে বলে মনে করেন। তখন এই মতে বিশ্বাসী আনসেল্ম বিটার নামে নুরেমবার্গের এক বিচারক তার কাছে প্রমাণ আছে কাসপার রাজপরিবারের সন্তান এই ঘোষণা দেওয়ার পর তিনি খুন হন। তখন এই ধারণা আরো পাকাপোক্ত হয়। কাসপার অভিযোগ করে ১৮৩৩ সালের অক্টোবরে তার উপর দুই লোক আক্রমণ করে। এজন্য তার জন্য দুজন দেহরক্ষী নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর, ১৮৩৩ সালে তাকে ছুড়িকাঘাতে মারাত্বক আহত অবস্থায় পাওয়া যায় মেয়ারের লিভিং রোমে। এরপর ১৭ ডিসেম্বর, ১৮৩৩ সালে এই রহস্য মানব মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Reinhard Heydenreuter: König Ludwig I. und der Fall Kaspar Hauser, in: Staat und Verwaltung in Bayern. Festschrift für Wilhelm Volkert zum 75. Geburtstag. Ed. by Konrad Ackermann and Alois Schmid, Munich 2003, pp. 465–476, here p. 465.
- ↑ Ivo Striedinger: Neues Schrifttum über Kaspar Hauser, in: Zeitschrift für bayerische Landesgeschichte, 6. Vol., 1933, pp. 415–484, here p. 452
- ↑ Ivo Striedinger: Hauser Kaspar, der „rätselhafte Findling“, in: Lebensläufe aus Franken, III. Vol., 1927, pp. 199–215; here pp. 199–200
- ↑ police description, dated 7 July 1828; see e.g. Jochen Hörisch (ed.): Ich möchte ein solcher werden wie...: Materialien zur Sprachlosigkeit des Kaspar Hauser, Suhrkamp 1979, pp. 33–34
আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]- Paul Johann Anselm Ritter von Feuerbach: Caspar Hauser, Boston 1832
- Philip Henry Stanhope, 4th Earl Stanhope: Tracts Relating to Caspar Hauser, Hodson 1836
- M. G. Valbert (Victor Cherbuliez): The History of a Delusion, Popular Science Monthly, Volume 30, April 1887, pp. 733–743
- Catherine Lucy Wilhelmina (Stanhope) Powlett, Duchess of Cleveland: The True Story of Kaspar Hauser from Official Documents, Macmillan, London, 1893
- Andrew Lang: The Mystery of Kaspar Hauser (in: Historical Mysteries, 1905)
- (জার্মান) Ivo Striedinger: Hauser Kaspar, der „rätselhafte Findling“, in: Lebensläufe aus Franken, III. vol., 1927, pp. 199–215
- (জার্মান) Ivo Striedinger: Neues Schrifttum über Kaspar Hauser, in: Zeitschrift für bayerische Landesgeschichte, 6. Vol. 1933, pp. 415–484
- (ফরাসি) Jean Mistler: Gaspard Hauser, un drame de la personnalité, Fayard 1971 আইএসবিএন ৯৭৮-২-২১৩-৫৯৩৬১-৬
- (জার্মান) Fritz Trautz: Zum Problem der Persönlichkeitsdeutung: Anläßlich das Kaspar-Hauser-Buches von Jean Mistler, in: Francia 2, 1974, pp. 715–731
- Martin Kitchen: Kaspar Hauser: Europe's Child, Palgrave MacMillan 2001 আইএসবিএন ০-৩৩৩-৯৬২১৪-১