কালু গঙ্গা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কালু গঙ্গা
রত্নাপুরায় কালু গঙ্গা
কালু গঙ্গা শ্রীলঙ্কা-এ অবস্থিত
কালু গঙ্গা
কালু গঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)
স্থানীয় নামකළු ගඟ (সিংহলি)
অবস্থান
দেশশ্রীলঙ্কা
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
উৎসআদম চূড়া
 • উচ্চতা২,৪০০ মি (৭,৮৭৪ ফু)
মোহনাভারত মহাসাগর
 • অবস্থান
কালুতারা
 • উচ্চতা
১ মিটার
দৈর্ঘ্য১২৯ কিমি (৮০ মা)
অববাহিকার আকার২,৭৬৬ কিমি (১,০৬৮ মা)
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য
উপনদী 
 • বামেকুকুলে নদী

কালু গঙ্গা (সিংহলি: කළු ගඟ; আক্ষরিক অনুবাদ: কালো নদী) হলো শ্রীলঙ্কার একটি বৃহৎ নদী। দৈর্ঘ্য পরিমাপের ফলে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১২৯ কিমি (৮০ মা) দীর্ঘ এই নদীটির উৎপত্তি আদম চূড়া হতে এবং কালুতারার নিকটে এসে এটি সমুদ্রে পতিত হয়েছে। কালু গঙ্গা রত্নাপুরা এবং কালুতারা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এবং রত্নাপুরা নগরের পাশ দিয়ে গিয়েছে। মধ্য প্রদেশের পার্বত্য বনভূমি এবং সিনহারাজা সংরক্ষিত বনভূমি নদীটির জলের প্রধান উৎস।[১] কালুতারার নিকটবর্তী স্থানে নদীর তীরে রয়েছে এডওয়ার্ডিয়ান ম্যানর, রিচমন্ড প্রসাদ[২]

কালু গঙ্গা অববাহিকা শ্রীলঙ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী অববাহিকা যেখানে খুব বেশি বৃষ্টিপাত সংগঠিত হয় এবং প্রচুর নিষ্কাষন ঘটে। জলবিজ্ঞানগত এবং ভূসংস্থানগত কারণে নিম্ন প্লাবনভূমি নিয়মিত বন্যাক্রান্ত হয় এবং আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব রাখে। বিগত কয়েক বছর ধরে, অনেক গবেষক দেশের প্রধান নদী অববাহিকায় জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেছেন, কিন্তু কালু গঙ্গা অববাহিকায় জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কোনো গবেষণা করা হয়নি; কিন্তু এখানকার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।

বিবরণ[সম্পাদনা]

কালু গঙ্গা অববাহিকা শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী অববাহিকা যা ২,৭৬৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং এর জলাবদ্ধতার বেশিরভাগ অংশই দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের এলাকায় অবস্থিত, যা বার্ষিক উচ্চ বৃষ্টিপাতকে প্রতিফলিত করে। এই অববাহিকায় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৪,০০০ মিমি এবং বার্ষিক প্রবাহ ৪,০০০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার বৃদ্ধি পায়। কালু গঙ্গা ২,২৫০ মিটার উচ্চতার পশ্চিম ঢালে প্রবল বৃষ্টিপাত যুক্ত আর্দ্র অঞ্চলের কেন্দ্রীয় পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয় প্রায় ১২৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কালুতারায় সমুদ্রে পতিত হয়।[৩] অববাহিকার উপরের অংশে খাড়া গ্রেডিয়েন্ট এবং নীচের অংশে হালকা গ্রেডিয়েন্ট রয়েছে। নদী অববাহিকার এই জলতাত্ত্বিক এবং ভূ্থাইক বৈশিষ্ট্যের কারণে, এর নিম্ন প্লাবন সমভূমি দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রবাহের ফলে ঘন ঘন বন্যাক্রান্ত হয়।[৩]

কালু গঙ্গা উন্নয়ন প্রকল্প[সম্পাদনা]

শ্রীলঙ্কার অন্যতম দীর্ঘ নদী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম অববাহিকা হওয়া সত্ত্বেও বন্যার প্রকোপের কারণে কালু গঙ্গা এলাকা দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পশ্চাদপদ। এখানে ধান ও অন্যান্য ফসল উত্পন্ন হলেও তা বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শ্রীলঙ্কা সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে মিলে ২০১৬ সালে ৯৬.২৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে; যার মূল লক্ষ্য গৃহস্থালির ব্যবহার এবং সেচের জন্য উপলব্ধ জল সরবরাহ সম্প্রসারণ করার জন্য একটি জলাধার নির্মাণ করা, যেটির ফলস্বরূপ কৃষি ফলন বৃদ্ধি করবে এবং স্বাস্থ্য সূচকগুলিকে উন্নত করবে৷[৪] জলাধারটি অভ্যন্তরীণ মৎস্য চাষের জন্যও ব্যবহার করা হবে, যার ফলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে এবং এই অঞ্চলে দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করবে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. [১] Development of a Flood Forecasting Model For Kalu River and Kelani River Basins in Sri Lanka using Radial Basis Function Neural Networks
  2. "Richmond Castle: A Tale Of Grandeur And Romance"। ৪ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০২৩ 
  3. Ampitiyawatta, A.D.; Guo, Shenglian (মার্চ ২০১০)। "Precipitation trends in the Kalu Ganga basin in Sri Lanka" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। Journal of Agricultural Sciences – Sri Lanka। পৃষ্ঠা ১০-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০২৩ 
  4. "Kalu Ganga Development Project" (ইংরেজি ভাষায়)। the OPEC Fund। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০২৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]