কাকৈজনা সংরক্ষিত বনাঞ্চল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কাকৈজনা সংরক্ষিত বনাঞ্চল
কাকৈজানা সংরক্ষিত বনাঞ্চল
স্থাপিত১৯৬৬

কাকৈজানা সংরক্ষিত বনাঞ্চল আসামের বঙাইগাঁও জেলার অভয়াপুরীর কাছে অবস্থিত একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এই বনাঞ্চল লুপ্তপ্রায় সোনালী বাঁদর-এর জন্য বিখ্যাত।[১] বনাঞ্চলটির ক্ষেত্রফল ১৭.২৪ বর্গ কি.মি.।[২]

বিবরণ[সম্পাদনা]

কাকৈজানা সংরক্ষিত বনাঞ্চল প্রায় ১৫,০০০ বিঘা জমি জুড়ে আছে। এর ক্ষেত্রফল ১৭.২৪ বর্গ কি.মি.। আই নদীর পাড়ে অবস্থিত বনাঞ্চলটিকে ১৯৬৬ সালের ২৯ এপ্রিল তারিখে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। [৩] এটি আই উপত্যকা বন সংমণ্ডলের অন্তর্গত। ১৯৯৯ সালের ১ এপ্রিল তারিখে বনাঞ্চলটিকে অভয়ারণ্যে উন্নীত করতে সরকারিভাবে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। বনাঞ্চলটির মধ্য দিয়ে কালিকাপাত নামে একটি পাহাড় জুড়ে বয়ে গেছে। এর একটি পাহাড়ে একটি প্রাচীন শিব মন্দির আছে। এই স্থানের মাটির ওপর ইটা পড়ে থাকার প্রমাণ থাকা একটা শিবলিঙ্গ এবং যোনিপীঠ থাকা কাকৈজানা পূরাতাত্ত্বিক স্থান।

সম্প্রতি একে অভয়ারণ্যে উন্নীত করতে গুয়াহাটি উচ্চ ন্যায়ালয়-এ একটি জনহিত যাচিকা দাখিল করা হয়েছে।[১]

অবস্থান[সম্পাদনা]

আসামের বঙাইগাঁও জেলায় অবস্থিত কাকৈজানা সংরক্ষিত বনাঞ্চল বঙাইগাঁও শহর থেকে ১৫ কি.মি. পূর্বে অবস্থিত। এটি অভয়াপুরী শহরের নিচে কাছে অবস্থিত। এটি স্থল পথে বঙাইগাঁওর সঙ্গে সংযোজিত। বনাঞ্চলটি আই নদীর পাড়ে অবস্থিত।

জৈব বৈচিত্র[সম্পাদনা]

কাকৈজানা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে লুপ্তপ্রায় আইইউসিএন রেড ডাটা বুকের প্রথম অনুসূচীতে উল্লিখিত ৬০ টা সোনালি বাঁদর আছে।[১] আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংঘের রেড ডাটা বুকে সোনালি বাঁদরকে বিলুপ্তপ্রায় শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[৪] সোনালি বাঁদর ছাড়াও এখানে অন্যান্য লুপ্তপ্রায় এবং বিপন্নগ্রস্ত প্রাণী পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: বিন্তুরং, বন্য কুকুর, বনেরৌ, ধনেশ পক্ষী, নাহরফুটুকী বাঘ, কেটেলা পহু, হাড়গিলা, উরণীয়া কের্কেটুয়া, নেউল, জহামাল, বন্য মেকুরী ইত্যাদি। তদুপরি এখানে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ আছে। এর প্রাইমেট সমূহের ওপর বিভিন্ন গবেষণা চালানো হচ্ছে।[৫]

স্থানীয় বাসিন্দা এবং বেসরকারি সংগঠনসমূহ কাকৈজানা সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে অভয়ারণ্যে উন্নীত করতে দাবী জানিয়ে আসছে।[১][৬]

সরকারি পদক্ষেপ[সম্পাদনা]

কাকৈজানা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রাণীসমূহ বিশেষত সোনালি বাঁদরের জন্য খাদ্য সহজলভ্য করতে সরকার কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। এর জন্য জেলা প্রশাসন, আসাম সরকারের বন বিভাগ এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ মহাত্মা গান্ধী জাতীয় নিয়োগ নিশ্চিতকরণ যোজনার অধীনে ১০,৫৭৫ টা ফল গাছের পুলি রোপণের কার্যসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে। খাদ্য এবং সুরক্ষার জন্য এই গাছপুলি রোপণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে বনাঞ্চলটির জীবকুলের গণনার কাজও জেলা প্রশাসন চিন্তা করেছে। এর সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা এবং ছাত্র-ছাত্রীসমূহকে পরিবেশ এবং পরিস্থিতি তন্ত্রের সংরক্ষণ বিশেষত সোনালি বাঁদর সংরক্ষণের জন্য সজাগতা সৃষ্টি করতে বিভিন্ন কার্যপন্থা গ্রহণ করা হয়েছে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "14 years on, Kakoijana forest continues fight for sanctuary status - Indian Express"archive.indianexpress.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৫ 
  2. "Kakoijana – Home Of The Golden Langurs"www.sanctuaryasia.com। ২০১৬-০৪-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৫ 
  3. "Winter birds of Kakoijana (Proposed) Wildlife Sanctuary, Assam, India" (পিডিএফ)Indian Birds 
  4. "The Telegraph - Calcutta : Northeast"www.telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৫ 
  5. "WNPRC | Horwich Earns First WNPRC Jacobsen Conservation Award"www.primate.wisc.edu। ২০০৭-১১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-২৯ 
  6. "tribuneindia... Nation"www.tribuneindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৫ 
  7. Zaman, Rokibuz। "Mission to save golden langurs in Guwahati"। telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-২৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]