বিষয়বস্তুতে চলুন

উদয়পুরি মহল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

উদয়পুরি মহল (মৃত্যু জুলাই ১৭০৭) ছিলেন মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব -এর উপপত্নী।[]

জীবনী

[সম্পাদনা]

আওরঙ্গজেবের বৃদ্ধ বয়সের প্রিয়তমা হিসাবে বর্নিত,[] উদয়পুরি মহল যুবরাজ দারা শিকোর হারেমে একজন দাসী ছিলেন,[] এবং হারেমে প্রবেশের আগে তিনি ছিলেন এক নর্তকী।[]

তিনি সম্ভবত কাশ্মীর অথবা প্রতিবেশি রাজ্য উদয়পুরের বাসিন্দা ছিলেন। এও শোনা যায় যে তিনি একজন খ্রিস্টান ছিলেন এবং হয় জর্জিয়া,[] বা আর্মেনিয়া[] অথবা সির্কাসিয়া তার আদি বাসস্থান। সম্রাট আকবরের শাসনকাল থেকে এই আদেশ দেওয়া হয়েছিল যে রাজকীয় হারেমের মহিলাদের নাম জনসমক্ষে উল্লেখ করা উচিত নয়, তাদের কিছু উপাধি দ্বারা মনোনীত করা উচিত যা তাদের জন্মস্থান বা শহরের নামের সংগে সাদৃশ্যপূর্ণ।[]

তিনি এক সুন্দরী মহিলা ছিলেন এবং তার উজ্বল লালবর্ণের কেশ ছিল। তিনি আওরঙ্গজেবকে মোহিত করেছিলেন এবং তাকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন।[] এতে আওরঙ্গজেবের অন্যান্য স্ত্রীরা তাকে ঈর্ষা করতে শুরু করে। তিনি ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৬৬৭ সালে তার ও আওরঙ্গজেবের পুত্র সাহজাদা মুহাম্মদ কাম বখশের জন্ম দেন।[] তিনি গভীর সুরাসক্ত ছিলেন।[]

১৬৭৮ সালে, চিতোরের রানা এবং মারোয়ারের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি আওরঙ্গজেবের সাথে গমন করেন।[] ১৬৮৬ সালে, তিনি ঔরঙ্গাবাদ বা আহমেদনগরে আওরঙ্গজেবের সাথে তার শিবিরে ছিলেন।[১০]

উদয়পুরি মহল একজন প্রভাবশালী মহিলা ছিলেন।[১১] আওরঙ্গজেবকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত উদয়পুরি মহল তাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং সেইকারনেই তিনি তার পুত্র কাম বখশের অনেক দোষ ক্ষমা করেন।[১২] তার প্রভাব অক্ষুন্ন রাখতে তিনি আওরঙ্গজেবের ছেলে ও নাতিদের রাজ্যত্যাগের পর, খিদমতগার খান, তার উত্তরসূরি খাজা আম্বর (যাকে ১৭০৪ সালের পরে খিদমতগার খান নামেও ডাকা হয়েছিল) এবং হারেমের অন্যান্য রাজকীয় নপুংসক চাকরদের সাথে সন্ধি করেন।[১৩]

১৭০৭ সালে আওরঙ্গজেবের মৃত্যু শয্যায় কাম বখশকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি উদয়পুরি মহলের উল্লেখ করেছিলেন।[১৪] আওরঙ্গজেব মারা গেলে তিনি গভীরভাবে শোকাহত হন এবং চার মাসের মধ্যে[] ১৭০৭ সালের জুলাই মাসে গোয়ালিয়রে[] শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Mehta, Jl (১৯৮৬)। Advanced Study in the History of Medieval India। Sterling Publishers Pvt. Ltd। পৃষ্ঠা 480। আইএসবিএন 9788120710153 
  2. Muhammad Tariq Awan (১৯৯৪)। History of India and Pakistan: pt. 1. Great Mughals। Ferozsons। পৃষ্ঠা 461। 
  3. Satish Chandra (২০০৫)। Medieval India: From Sultanat to the Mughals Part - II। Har-Anand Publications। পৃষ্ঠা 274। আইএসবিএন 9788124110669 
  4. William Irvine (১৯৭১)। Later Mughal। Atlantic Publishers & Distri। পৃষ্ঠা 54, 58। 
  5. Bilkees I. Latif (২০১০)। Forgotten। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 34। আইএসবিএন 978-0-14-306454-1 
  6. Annie Krieger-Krynicki (২০০৫)। Captive Princess: Zebunissa, Daughter of Emperor Aurangzeb। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 103, 175। আইএসবিএন 978-0-19-579837-1 
  7. Eraly, Abraham (জানুয়ারি ১, ২০০৭)। The Mughal World: Life in India's Last Golden Age। Penguin Book India। পৃষ্ঠা 126। আইএসবিএন 978-0-143-10262-5 
  8. Sir Jadunath Sarkar (১৯১২)। Sir Jadunath Sarkar, সম্পাদক। Anecdotes of Aurangzib: Translated Into English with Notes and Historical Essays। M.C. Sarkar & Sons। পৃষ্ঠা 79 
  9. Zinat Kausar (১৯৯২)। Muslim Women in Medieval India। Janaki Prakashan। পৃষ্ঠা 201। আইএসবিএন 9788185078748 
  10. C. M. Agrawal, সম্পাদক (২০০১)। Indian Woman, Volume 1। Indian Publishers Distributors। পৃষ্ঠা 244। আইএসবিএন 9788173412127 
  11. Journal of Historical Research, Volume 39, Issue 1। Department of History, Ranchi University.। ২০০১। পৃষ্ঠা 63। 
  12. M. P. Srivastava (১৯৭৮)। Social Life Under the Great Mughals, 1526-1700 A.D.। Chugh Publications। পৃষ্ঠা 101। 
  13. Munis D. Faruqui (২৭ আগস্ট ২০১২)। The Princes of the Mughal Empire, 1504–1719। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 240আইএসবিএন 978-1-139-53675-2 
  14. Sudha Sharma (মার্চ ২১, ২০১৬)। The Status of Muslim Women in Medieval India। SAGE Publications India। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 9789351505679