উত্তর সাইপ্রাসের নারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিয়ানেট শেলী। উত্তর সাইপ্রাসের একজন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী।

উত্তর সাইপ্রাসের নারী দ্বারা মূলত উত্তর সাইপ্রাসের তার্কিশ রিপাবলিকে বসবাসকারী নারীদের বিজ্ঞান, আইন ও বিচারব্যবস্থায় অংশগ্রহণকে বোঝায়। উল্লেখ্য, উত্তর সাইপ্রাসের তুর্কি রিপাবলিক এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পায় নি।[১] অবশ্য বিভিন্ন সমীক্ষা অনুসারে, এই অঞ্চলের নারীদের মাঝে রাজনীতিতে অংশ নেয়ার হার তুলনামুলকভাবে কম এবং সংসদে মাত্র আট শতাংশ নারী সদস্য রয়েছে। ২০১৩ সালে উত্তর সাইপ্রাসের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সিবেল সিবার নির্বাচিত হন।

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি[সম্পাদনা]

২০১০ সালে উত্তর সাইপ্রাসের ৬০০ নারীর মাঝে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী একান্ন শতাংশ নারী স্বীকার করেন যে, দেশটির নারীদের মধ্যে পূর্ব-নির্ধারিত লিঙ্গভিত্তিক কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বপালনের প্রবণতা রয়েছে। অন্তত ৮৮% নারী সবকিছুর ঊর্ধ্বে একজন নারীকে ভালো মা ও পরিবারের সবার দেখাশোনার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করা উচিত বলে মনে করেন। ৫৮ শতাংশ নারী ঘরে পুরুষের পূর্বেই ফেরার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন এবং অন্তত আশি শতাংশ নারী মেয়েদের "নারী"র মতো করে বেড়ে ওঠায় সমর্থন করেন। এই সমীক্ষায় প্রকাশ পায়, এই অঞ্চলের নারীরা বিবাহ বিচ্ছেদ বা অর্ধাঙ্গের মৃত্যুর পর নারীদের একা থাকাকে অনুচিত বলে মনে করেন। যদিও ৫৫% শতাংশ নারী অর্থনৈতিক প্রয়োজন না থাকলেও নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করাকে সমর্থন করেন।[২]

রাজনীতি[সম্পাদনা]

উত্তর সাইপ্রাসের রাজনীতিতে অংশ নেয়া নারীদের বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে মাতৃত্ব, পরিবারের সাথে তাল মিলিয়ে রাজনীতির জন্য সময় বের করা এই অঞ্চলের নারীদের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ। এই অঞ্চলের কফিহাউজগুলো হলো রাজনীতির প্রধান চারণভূমি। এমনকি কিছু রাজনৈতিক দলের আঞ্চলিক অফিস কর্তৃক আয়ীজিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ড কফি হাউজেই আয়োজিত হয়। কিন্তু ঐতিহ্যগতভাবে এই সকল কফি হাউজ এবং মেহেইন (ঐতিহ্যবাহী পানশালা) পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত এবং নারীদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানায় না।[৩][৪][৫][৬]

নারী রাজনীতিবিদ[সম্পাদনা]

২০১০ সাল অব্দি উত্তর সাইপ্রাসের রাজনীতি অঙ্গনে মাত্র ৭জন নারী রাজনীতিবিদ উত্তর সাইপ্রাসের জাতীয় সংসদে উচ্চপদে বহাল ছিলেন। এই সকল পদের মাঝে আছে, সংসদীয় এবং মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কাজ, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভদের মুখপাত্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের পদ। ফাতমা একেনোগ্লু হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অনুর বরমান অর্থ মন্ত্রণআলয়ের মন্ত্রীর দায়ত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ সালে দায়িত্ব পালনকারী গুলসেন বোযকুর্ত এবং গুলিন সেনার উত্তর সাইপ্রাসের প্রথম নির্বাচিত নারী সংসদ সদস্য। এসকল নারীরা তাদের মেডিকেল ব্যাকগ্রাউন্ডের জন্য উত্তর সাইপ্রাসের ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছিলেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৪৭ জন নারী নির্বাচনে অংশ নিলেও মাত্র ৪ জন নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৭] ২০১৩ সালে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রি সিবেল সিবার ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচনে অংশ নেন।[৮] 

নারী বিরুদ্ধে সহিংসতা[সম্পাদনা]

২০১৪ সালে ২০৪ জন নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে পুলিশের কাছে মামলা করে। শ্রম ও সামাজিন নিরাপত্তা মন্ত্রণআলয়ের মন্ত্রী আজিজ গুরপিনার এই সংখ্যাকে "ভয়াবহ" বলে মন্তব্য করেন। [৯] একটি বেসরকারী নারীবাদী সংগঠনের সমীক্ষা অনুসারে অন্ত্ত তেত্রিশ শতাংশ বিবাহিত নারী নির্যাতনের শিকার হন। ১৪ শতাংশ নারী ম্যারিটআল রেইপের শিকার হয়েছেন বলেও এই সমীক্ষায় প্রকাশ পায়। [১০]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Turkish-Cypriot Women: Dr Gülin Sayiner"www.cypnet.co.uk। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৮ 
  2. "Kıbrıs'ın Kuzey Kesimindeki Kadınların Profili" (পিডিএফ)। KAYAD। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৬ 
  3. Yirmibeolu, Gözde. Constraints on Women Politicians in Northern Cyprus - Research Essay[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], January 10, 2010
  4. Yirmibeolu, Gözde. Constraints on Women Politicians in Northern Cyprus ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ জুলাই ২০১১ তারিখে
  5. "Özdenefe: "Örneğimiz Siber"" (Turkish ভাষায়)। Kıbrıs Postası। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
  6. Dürüst, Çiğdem। "Kadınları bıyık da paklamayacak (sakal şart)" (Turkish ভাষায়)। Kıbrıs Postası। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
  7. "Kadın milletvekilleri yine azınlıkta!" (Turkish ভাষায়)। Kıbrıs Postası। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
  8. "CTP'NİN CUMHURBAŞKANI ADAYI SİBER" (Turkish ভাষায়)। Yeni Düzen। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
  9. "Kadınlar şiddet kurbanı"। Kıbrıs। ২৩ আগস্ট ২০১৫। ২০ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৬ 
  10. "Kıbrıs'ın Kuzeyinde Aile İçi Şiddet"। Yeni Düzen। ১ ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৬ 

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]