ইল সরপাসসো
ইল সোরপাসসো | |
---|---|
![]() Italian film poster | |
পরিচালক | দিনি রিসি |
প্রযোজক | মারিও সেচ্চি গোরি |
রচয়িতা | রদোলফো সোনেগো |
চিত্রনাট্যকার | দিনো রিসি এত্তোরে স্কোলা রাগারো মাচ্চারি |
শ্রেষ্ঠাংশে | ভিত্তোরিও গাসম্যান জঁ লুইস ত্রিঁতিগনাত ক্যাথরিন স্পাক |
সুরকার | রিজ ওরতোলানি |
চিত্রগ্রাহক | আলফিও কোন্তিনি |
সম্পাদক | মরিজিও লুচিদি |
মুক্তি | ৬ ডিসেম্বর ১৯৬২ (ইতালি) ২২ ডিসেম্বর ১৯৬৩ (যুক্তরাষ্ট্র) |
স্থিতিকাল | ১০৫ মিনিট |
দেশ | ইতালি |
ভাষা | ইতালীয় |
ইল সোরপাসসো (দ্য টেকওভার,কখনো কখনো সহজ জীবন নামেও আখ্যায়িত করা হয়) একটি ইতালীয় ভাষার চলচ্চিত্র। এটি একটি হাস্যরসাত্মক কাল্ট চলচ্চিত্র। দিনো রিসি ছবিটির পরিচালক ও সহ-চিত্রনাট্যকার। এর শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন ভিত্তোরিও গাসম্যান, জঁ লুই ত্রিতিঁগনাঁত এবং ক্যাথরিন স্পাক। এটি রিসির মাস্টারপিস বা মহত্ত্বপূর্ণ কর্ম বিবেচিত হয় এবং ইতালীয় হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবেও পরিগণিত হয়।
কাহিনীসংক্ষেপ
[সম্পাদনা]রৌদ্রকরোজ্জ্বল ও আপাত-মানবশূন্য রোমে আগস্টের এক সকাল। সেদিন ফেরাগোস্তো জাতীয় দিবসও বটে। ভীতু প্রকৃতির তরুণ ও আইনের ছাত্র রবার্তো জানালার দিকে তাকিয়ে দেখে, চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি তাকে টেলিফোনে একজনের সাথে যোগাযােগের জন্য অনুরোধ করছে। লানচিয়া অরেলিয়া কনভার্টিবল গাড়ির হুইল আঁকড়ে ব্রুনো বসে আছে।
যুবকটি তাকে উপরে উঠে নিজেই ফোন করার অনুরোধ করে। ব্রুনো তার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের নিষ্ফল চেষ্টা করে। ব্রুনোর মনে সন্দেহ জাগে,তার বন্ধুরা তাকে পরিত্যাগ করেছে। রবার্তোকে পানীয় খাইয়ে ব্রুনো তার ভদ্রতার দাম দেওয়ার চেষ্টা করে। সারাদিন পড়াশোনা করে ক্লান্ত হয়ে ও ব্রুনোর আগ্রহ দেখে সে সম্মতি দেয়।
ভায়া অরেলিয়া থেকে তাদের যাত্রা শুরু হয়। রবার্তোর গাড়ির নামও এ সড়কের নামানুসারে হয়েছে। ব্রুনোর সাথে চরিত্রগত কোনো সাদৃশ্য না থাকা সত্ত্বেও রবার্তো তার সঙ্গ ছাড়তে অনিচ্ছুক। ব্রুনো জোরে কথা বলে, ঝুঁকি নিতে ভালোবাসে। সে উদ্ধত ও অহংকারীও বটে। সে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। তার গাড়ির গতিও অনেক বেশি। সবসময়ই সে গাড়ি ওভারটেক করার চেষ্টা করে -যেটি "ইল সোরপাসসো" নামেও পরিচিত। হর্ন বাজানো, পিছু নেওয়া - এমন কোনো কৌশল নেই, যা সে অবলম্বন করে না। কিন্তু সে একজন মনোরম ও পছন্দনীয় ব্যক্তি। রবার্তো এর সম্পূর্ণ বিপরীত প্রকৃতির মানুুষ হলেও ব্রুনোর প্রতি সে এক অব্যক্ত আকর্ষণ অনুভব করে।
দুইদিন ধরে রবার্তো ও ব্রুনো লাজিও ও তাসকানি শহরে ভ্রমণ করে। তারা নানারকম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা যেমন লাভ করে ; তেমনি একে অপরকে ভালো করে চিনতেও সক্ষম হয়। ব্রুনো পথিমধ্যে তার আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে থামলে রবার্তো অনুধাবন করে, তার শৈশব প্রকৃতপক্ষে "স্বর্ণালি" অভিজ্ঞতায় মোড়ানো ছিল না। ব্রুনোর ব্যর্থ বিবাহ এবং তরুণী কন্যা সম্পর্কে পরিজ্ঞাত হয়ে রবার্তো উপলব্ধি করে, ব্রুনোর জীবন যেরকম খাপছাড়া সে ভেবেছিল, প্রকৃতপক্ষে তার জীবন সেরকম খাপছাড়া নয়।
ছবির অন্তে, রবার্তোর চারিত্রিক রূপান্তর ব্রুনোকে উদ্দীপ্ত করে। উদ্দীপ্ত ব্রুনো পাহাড়ি খাঁড়ি রাস্তায় একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে ব্লাইন্ড কার্ভ বা অন্ধ বক্রতায় গাড়ি চালিয়ে নেয়। যার ফলে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় এবং রবার্তো মারা যায়। ব্রুনোর সারা দেহ রক্তে স্নাত হয়ে যায়। পুলিশ কর্মকর্তা ব্রুনোকে রবার্তো সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সে সহসা অনুধাবন করে, রবার্তোর পারিবারিক উপাধি পর্যন্ত তার জানা নেই।
চরিত্রায়ণে
[সম্পাদনা]- ভিত্তোরিও গাসম্যান - ব্রুনো কর্তোনা
- জঁ লুই ত্রিতিঁগনাতঁ-রবার্তো মারিয়ানি
- ক্যাথরিন স্পাক-লিলি কর্তোনা
- ক্লদিও গোরা-বিবি
- লুইগি জার্বিনাতি-কমেন্দাতোরে
- লুচিয়ানা অ্যানজিওলিল্লো-ব্রুনোর স্ত্রী
- লিন্দা সিনি-লিদিয়া চাচি
- নান্দো অ্যাঞ্জেলিনি-আমিদিও।
মূল্যায়ন
[সম্পাদনা]ইল সোরপাসসো "কমেদিয়া অল ইতালিয়ানা" ধারার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি বিবেচিত হয়।
১৯৬০ এর দশকের ইতালির এক মর্মভেদী চিত্র ছবিটিতে পরিস্ফুটিত হয়েছে। ঐ দশকে অর্থনৈতিক বিস্ময় সংঘটনের ফলে কৃষিভিত্তিক, পরিবারকেন্দ্রিক ইতালীয় সমাজ শিল্পভিত্তিক ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমাজেে পরিণত হতে শুরু করে।
এমপোরিও ইলাবোরাজিওনি মেকানিচ্চে ছবিটির নামে একটি বাইকের নামকরণ করে । তারা মটোগুজ্জি ভিইলেভেন ক্যাফে রেসারের নাম দেয় "ইল সোরপাসসো।"[১]
সংগীত
[সম্পাদনা]রিজ অরতোলান্নি ছবিটির মূল আবহসংগীত রচনা করেন। ১৯৬০ এর দশকের জনপ্রিয় গান পেপিনো দা কাপরির "সেন্ট ট্রোপেজ টুইস্ট",এমিলিও পেরিকোল্লির "কুয়ান্দো, কুয়ান্দো, কুয়ান্দো" , এদোয়ার্দো ভায়ানেল্লোর "গার্দা কাম দন্দোলো" এবং "পিনে ফুচিলে এদ ওচেল্লি" ও ডোমেনিকো মদুগনোর "ভেচ্চিও ফ্র্যাক" ছবিটিতে পরিবেশিত হয়েছে।
পুরস্কার
[সম্পাদনা]ইতালীয় চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি কর্তৃক ভিত্তোরিও গাসম্যানকে সেরা অভিনেতা ও মার দে প্লাটা চলচ্চিত্র উৎসবে দিনো রিসিকে সেরা পরিচালকের সম্মানে ভূষিত করা হয়।