আলাচাতি
আলাচাতি | |
---|---|
শহর | |
তুরস্কের মানচিত্রে আলাচাতির অবস্থান | |
দেশ | তুরস্ক |
অঞ্চল | এজিয়ান |
প্রদেশ | ইজমির |
উচ্চতা | ১৬ মিটার (৫২ ফুট) |
সময় অঞ্চল | EET (ইউটিসি+2) |
• গ্রীষ্মকালীন (দিসস) | ইইএসটি (ইউটিসি+3) |
পোস্টাল কোড | ৩৫xxx |
এলাকা কোড | (+৯০) ২৩২ |
গাড়ি লাইসেন্স প্লেট | ৩৫ |
ওয়েবসাইট | www.alacati.bel.tr |
আলাচাতি (তুর্কী ভাষায়:Alaçatı; গ্রিক শব্দ "Αλάτσατα" থেকে উদ্ভূত 'আলাতসাতা' অথবা গ্রিক শব্দ "Αγριλιά" থেকে উদ্ভূত 'এগ্রিলিয়া' নামেও পরিচিত) তুরস্কের ইজমির প্রদেশে অবস্থিত একটি শহর। এজিয়ান সাগরের তীরে অবস্থিত এই শহরটি তার স্থাপত্য, বায়ুকল এবং প্রায় ১৫০ বছরের ঐতিহ্যের জন্য সুবিখ্যাত। উইন্ডসার্ফিং এবং ঘুড়ি উড়ানোর জন্যও আলাচাতি বিখ্যাত। এছাড়া পরিষ্কার নীল সাগরের পানি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও স্থানীয় মানুষের আতিথেয়তার জন্যে এটি তুরস্কের অন্যতম পর্যটক গন্তব্য। এই তুরস্কের প্রাচীন শহরগুলির মধ্যে অন্যতম। এখানে পাথরের বাড়ি, সরু ফুটপাথ, বুটিক হোটেল, রেস্তোরা ইত্যাদি স্থাপনাগুলো প্রাচীনকালের সাক্ষ্য বহন করে। আলাচাতির বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক এবং রাত্রিকালীন জীবন পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয়।[১]
নামের উদ্ভব
[সম্পাদনা]আলাচাতির নামের উদ্ভব সম্পর্কে বিভিন্ন গল্প প্রচলিত রয়েছে। অনেকের মতে শহরের কেন্দ্র থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বন্দর এলাকাটিই প্রকৃতপক্ষে আলাচাতি। অনেকের দাবি শহরটির নাম আসলে এগ্রিলিয়া। আবার অনেকেই বলে এর নাম আলাকা আত (লাল বাড়ি)। মানুষের এসব ধারণা একটি ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে রচিত। আলাচাতির শাসকের একটি লাল ঘোড়া ছিল, তিনি যখন ঐ ঘোড়ায় চড়ে শহরে বের হতেন তখন মানুষ বলতো আলাজাতি (লাল ঘোড়া চড়া মানুষ)। এই নামটির পরবর্তিতে আলাচাতি হয়। গ্রিক সূত্রমতে আলাতসাতা নামটি গ্রিক শব্দ আলাস থেকে উদ্ভূত যার অর্থ লবণ। এলাকাটির এমন নামের কারণ তার পার্শ্ববর্তি লবণাক্ত লেকগুলো।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৪শ শতাব্দীতে আলাচাতি উসমানীয় সাম্রাজ্যের একটি শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে অনেকের মতে এই সময়কাল ১৫শ শতাব্দী। এই মত পার্থক্য থাকলেও এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য যে আলাচাতি একসময় গ্রিক শহর ছিল। ১৮৯৫ সালে এখানে মুসলমান জনসংখ্যা ছিল ১৩,৮৪৫। উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পরে এখানকার মুসলিম জনগোষ্ঠী আনাতোলিয়ার পশ্চিম উপকূলে স্থানান্তরিত হয়। ১৯১৪ সালে আলাচাতির গ্রিক জনগোষ্ঠী ১৯১৪ সালে শহর ত্যাগ করে, ফলে স্থানটি জনশূণ্য হয়ে যায়। গ্রিক-তুরস্ক যুদ্ধে গ্রিসের পরাজয়ের পরে গ্রিক সেনাদের সাথে অধিকাংশ আলাচাতি অধিবাসী শহর ত্যাগ করেছিল, আর বাকিরা স্মিমা তীরবর্তি এলাকা থেকে শহর ত্যাগ করে।[২][৩] ১৯১৯ সালে অধিকাংশ গ্রিক আবার ফিরে আসে, যখন হেলেনিক সেনারা ইজমির অঞ্চল দখন করেছিল।
১৯২৩ সালের লাওসান চুক্তির অধীনে এবং বাধ্যতামূলক জনগোষ্ঠী বিনিময় নীতি অনুসারে যেসব মুসলিম ক্রিট, থ্রেস, মেসিডোনিয়া এবং ডডিকেনেসে বাস করতো, তারা আলাতসাতা শহরে স্থানান্তরিত হয়ে গ্রীকদের ফেলে যাওয়া বসতবাড়িতে বাস করতে শুরু করে। এসব বাড়ির অধিকাংশই এখনও আলাচাতিতে বিদ্যমান। এগুলো পর্যটকদের জন্যে অক্ষত অবস্থায় রেখে দেয়া হয়েছে যাতে এসব থেকে তৎকালীন সময়ের জীবন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]আলাচাতির অনেক বাড়ি পাথরে নির্মিত। এগুলোর বেশিরভাগই প্রাচীন আমলের। শহরের অনেক রাস্তা সরু এবং এগুলোড় দু’ধারে ফুটপাথ রয়েছে। শহরের কেন্দ্রে ১০০ বছরের পুরনো গ্রিক আমলের বাড়ি-ঘর রয়েছে। ২০০৫ সালে আলাচাতিকে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে ঘোষণা করে তুরস্ক সরকার। তাই শহরের ভবন ও স্থাপনাসমূহ সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। তবে বর্তমানকালে আলাচাতিতে যেসব বাড়ি-ঘর নির্মিত হচ্ছে, সেগুলোও শহরের পুরনো স্থাপত্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই নকশা করা হচ্ছে।[৪]
আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]- Constantinos J. Garmatis & Marianna N. Mastrostamati (২০০৭)। After Alatsata. The Alatsateans worldwide। অ্যাসোসিয়েশন অফ দ্য অ্যালাটসেটিয়ান্স। আইএসবিএন 978-960-87159-1-2।
- Fanis N. Kleanthis (২০০৩)। Alatsata my lost homeland। অ্যাসোসিয়েশন অফ দ্য অ্যালাটসেটিয়ান্স। আইএসবিএন 978-960-87159-1-2।
- The Revd. Oeconomos, Constantinos A.Vlamos (১৯৪৬)। Alatsata of the Ionic or Erythrean Peninsula। প্রথম সংস্করণ - মিখ, ট্রায়ান্টাফিলো, ১৯৪৬। আইএসবিএন 978-960-87159-1-2।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Cesme Alacati Guide"। ১৭ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Sofos, Spyros A.; Özkırımlı, Umut (২০০৮)। Tormented by History: Nationalism in Greece and Turkey। C Hurst & Co Publishers Ltd। পৃষ্ঠা 116–117। আইএসবিএন 1-85065-899-4।
- ↑ Hershlag, Zvi Yehuda (১৯৯৭)। Introduction to the Modern Economic History of the Middle East। Brill Academic Pub। পৃষ্ঠা 177। আইএসবিএন 90-04-06061-8।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১৪।