আলগোজা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলগোজা
তথ্যসমূহ
অন্য নামআলগোজে, জোড়ি, পির জোড়ি, দো নালি, দোনাল, গিরা, সাতারা বা নাগোজে
শ্রেণিবিভাগ কাষ্ঠবায়ু যন্ত্র
সংগীতজ্ঞ
রামনাথ চৌধুরী, ওস্তাদ খামিসু খান, ওস্তাদ মিসরি খান জামালি, আকবর খামিসু খান, গুরমিত বাওয়া

আলগোজা বেলুচ, সিন্ধি, কাচ্চি, রাজস্থানী এবং পাঞ্জাবি লোক সংগীত শিল্পীদের দ্বারা ব্যবহৃত যুগ্ম কাষ্ঠবায়ু যন্ত্র। এটিকে মাট্টিয়ান, জোড়ি, পির জোড়ি, দো নালি, দোনাল, গিরা, সাতারা বা নাগোজেও বলা হয়।[১]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

আলগোজাতে দুটি সংযুক্ত চঞ্চু বাঁশি থাকে, একটি সুরের জন্য, দ্বিতীয়টি গুঞ্জনধ্বনির জন্য। বাঁশিদুটি হয় একসাথে বাঁধা থাকে অথবা হাত দিয়ে আলগাভাবে একসাথে ধরে রাখা থাকে। বাদক যুগপৎ দুটি বাঁশিতে ফুঁ দেয় তাই বাঁশিতে অবিচ্ছিন্ন বায়ু প্রবাহের প্রয়োজন হয়।[২] প্রতিটি স্বরকম্পে দ্রুত শ্বাস নেওয়ার ফলে একটি প্রাণচঞ্চল, দোদুল্যমান ছন্দ তৈরি হয়। কাঠের বাদ্যযন্ত্রটিতে প্রথমদিকে একই দৈর্ঘ্যের দুটি বাঁশি-নালিকা থাকত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, এর মধ্যে একটিকে শব্দের উদ্দেশ্যে ছোট করা হয়েছিল। মোম ব্যবহার করার ফলে, যে কোন পর্দায় যন্ত্রটির সুর বাঁধা যায় যায়।[৩] এটি নির্মাণের বিভিন্ন পন্থা রয়েছে। মাঝেমধ্যে দুটি বাঁশি সংযুক্ত থাকে, কখনও কখনও তারা কেবল সুতো দিয়ে বাঁধা থাকে, আবার কখনও কখনও তারা সম্পূর্ণ পৃথক হয়।[৪]

তারতম্য[সম্পাদনা]

বাঁশিতে ছিদ্রের সংখ্যাও বিভিন্ন রকম হয়। কখনও কখনও একটি বাঁশির মধ্যে ৬-৭টি অঙ্গুলি ছিদ্র থাকে এবং সেটিতে সমস্ত সুর বাজানো যায়। অন্য বাঁশিটিতে এমনভাবে ছিদ্র করা হয় যাতে সেটিতে কেবল গুঞ্জন ধ্বনি ওঠে। তবে অন্য একটি সাধারণ পদ্ধতিতে দুটি বাঁশিতেই অভিন্ন বিন্যাসে অঙ্গুলি ছিদ্র থাকে, এর ফলে উভয় বাঁশিতেই সুর বাজানোর ক্ষমতা থাকে। এই পরবর্তী ক্ষেত্রে, বাদক সাধারণত অষ্টকের একটি অংশই বাজাতে পারেন।[৪]

এটি বালুচি, সিন্ধি, পাঞ্জাবি এবং রাজস্থানী লোক সংগীতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।[৫] গুরমিত বাওয়া একজন উল্লেখযোগ্য পাঞ্জাবি লোক গায়িকা যিনি এই বাদ্যযন্ত্রটি ব্যবহার করেন।[৬][৭]

বিশেষত্ব[সম্পাদনা]

আলগোজা সঙ্গীত বিশ্বে, বাঁশি নালিকা দুটি হল জুড়ি, - দীর্ঘতরটি পুরুষ এবং ছোটটি নারী বাদ্যযন্ত্র। ছোটটি উচ্চ কম্পাঙ্কের স্বর (সোপ্রানোস) উৎপাদন করে যেখানে দ্বিতীয়টি নিম্ন কম্পাঙ্কের স্বর (অল্টোস) উৎপন্ন করে। সাধারণত আলগোজা-নওয়াজ (আলগোজা বাদক) এবং সংগীত বিশেষজ্ঞরা প্রথমটিকে নারী শব্দ এবং দ্বিতীয়টিকে পুরুষ শব্দ বলে থাকেন। পুরুষ শব্দটি ক্রমাগত কোনও ফাঁক ছাড়াই একই সুরে বাজে এবং নারী শব্দের সুরের পর্দা পরিবর্তিত হয়।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Alghoza"। Asian Music Circuit। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  2. Pande, p. 70
  3. Usman, Maryam (২০১৩-০৮-২৬)। "Instrumental Ecstasy concert: A retreat into the rhythms of Sindhi classical tunes"The Express Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-০৭ 
  4. "ALGOZA (ALGHOZA)"। ৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২১ 
  5. Peerzada, Salman (২০১৪-০৯-১৩)। "Cultural heritage and the French connection"Dawn। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-০৭ 
  6. Kaur, Simmypreet (২০১১-১০-০১)। "ਲੰਮੀ ਹੇਕ ਦੀ ਮਲਿਕਾ ਗੁਰਮੀਤ ਬਾਵਾ" [The queen of the long vocal note]। The Punjabi Tribune (পাঞ্জাবী ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১০-১৭ 
  7. Majari, Surjit (২০১০-১২-২৫)। "ਰਵਾਇਤੀ ਗਾਇਕੀ ਨੂੰ ਸੰਭਾਲਣ ਦੀ ਲੋੜ" [Need to preserve traditional music.]। The Punjabi Tribune (পাঞ্জাবী ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১০ 
  8. "CULTURE: THE DYING BREATHS OF THE ALGHOZA"। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২১ 
Books