অরফিল্ড ল্যাবরেটরিজ
অরফিল্ড ল্যাবরেটরিজ | |
---|---|
সাধারণ তথ্যাবলী | |
ধরন | গবেষণা |
অবস্থান | মিনিয়াপোলিস |
স্থানাঙ্ক | ৪৪°৫৭′২৫″ উত্তর ৯৩°১৩′৫৮″ পশ্চিম / ৪৪.৯৫৭০° উত্তর ৯৩.২৩২৭° পশ্চিম |
নির্মাণ শুরু | ১৯৭০ |
অরফিল্ড ল্যাবরেটরিজ মিনিয়াপোলিসে অবস্থিত একটি মাল্টি-সেন্সরি ডিজাইন রিসার্চ ল্যাবরেটরি। স্থাপত্য এবং পণ্য উন্নয়ন এবং গবেষণা সম্পর্কিত কাজে এটি জড়িত। ১৯৭১ সালে স্টিভেন জে অরফিল্ড কর্তৃক এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।[১][২] ভবনটির ভিতরে একটি অ্যানিকোইক চেম্বার রয়েছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শান্ত স্থানগুলির মধ্যে একটি। এখানে ৯৯.৯৯% শব্দ শোষিত হয়।[৩] কক্ষটিতে নীরবে সময় কাটানোর মানসিক প্রভাব সম্পর্কে গুজব এবং অনুমান গণমাধ্যম উল্লেখযোগ্যভাবে প্রচার করে।[৪]
ভবন
[সম্পাদনা]মিনিয়াপোলিসের সেওয়ার্ড পাড়ায় অবস্থিত এই ভবনটি মূলত সাউন্ড ৮০ নামে একটি রেকর্ডিং স্টুডিও হিসেবে সেবা প্রদানে নিয়োজিত ছিল। এখানে বব ডিলান এবং রজার্স নেলসনের মতো সঙ্গীতশিল্পীদের উন্মেষ হয়েছিল।[৫] এছাড়া এই স্থানকে ১৯৮০ একক ফাঙ্কিটাউন হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছিল। এখানে সেন্ট পল চেম্বার অর্কেস্ট্রা অ্যাপালাচিয়ান স্প্রিংস গান পরিবেশন করেছিলেন। এই অ্যাপালাচিয়ান স্প্রিংসের জন্য তিনি প্রথম ক্লাসিক্যাল ডিজিটাল গ্র্যামি পুরস্কার জিতেছিলেন। ১৯৭৫ থেকে শুরুতে সাউন্ড ৮০ অরফিল্ড ল্যাবসের সহযোগী হয়ে ওঠে। ১৯৯০ সালে স্টিভেন জে অরফিল্ড তার কোম্পানির ডিজাইন গবেষণা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই ভবনটি কিনেছিলেন। ১৯৯৪ সালে, তিনি তার ধ্বনিতাত্ত্বিক পরীক্ষাগারের জন্য একটি ভবন সংযোজন সম্পন্ন করেন এবং তিনি তার অ্যানিকোইক চেম্বারকে সংরক্ষণাগার থেকে সরিয়ে ভবনে স্থাপন করেন।[৬] ভবনটি জানালাবিহীন, অফিসহীন, হলওয়ে এবং বিভিন্ন আকারের বিচ্ছিন্ন কক্ষসহ একটি স্থান।[৭]
অ্যানিকোইক চেম্বার
[সম্পাদনা]অরফিল্ড ১৯৮০ এর দশকে অ্যানিকোইক চেম্বারটি কিনেছিলেন। সেই সময় সানবিম তার শিকাগো সুবিধাগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। সেজন্য অরফিল্ড চেম্বারটিকে বিচ্ছিন্ন এবং তিনটি সেমি-ট্রাকে এটিকে লোড করার জন্য শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল দলের সদস্যদের অর্থ প্রদান করেছিলেন।[৮] ১৯৯৪ সালে অরফিল্ড ল্যাবরেটরিজ ভবনে স্থানান্তর করার আগে তিনি এটি একটি সংরক্ষণাগার গুদামে রেখেছিলেন। অরফিল্ড দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন যে পণ্য ডিজাইন কর্মীরা চেম্বারটি ব্যবহার করেছেন স্লিপ নম্বর ম্যাট্রেস এবং ওয়ার্লপুল ডিশওয়াশারসহ ভোক্তা পণ্যগুলির শব্দ উন্নত করতে।[৭]
চেম্বারটি একটি ছয়-পার্শ্বযুক্ত ইস্পাতের তৈরি দ্বি-প্রাচীর বাক্স। এটি একটি পাঁচ-পার্শ্বযুক্ত ইস্পাত-ওভার চেম্বারের ভিতরে স্প্রিংস দ্বারা নিলম্বিত করা হয়। এই দুইটি ধ্বনিতাত্ত্বিক ল্যাবরেটরির ভিতরে বিদ্যমান। এই স্থানে ১২ ইঞ্চি পুরু কংক্রিটের দেয়াল রয়েছে। অ্যানিকোইক চেম্বারের দরজাটি ফাইবারগ্লাসের ধ্বনিতাত্ত্বিক শঙ্কু আবৃত ইস্পাত প্যানেল দিয়ে তৈরি।[৭][৯]
ঘরের ভিতরে বিদ্যমান যেকেউ তাদের নিজের রক্ত সঞ্চালনের শব্দ এবং অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপের শব্দ শুনতে পায়। এসকল শব্দ স্বাভাবিক পরিবেশে কেউ শুনতে পারে না।[১০][৭] স্টার ট্রিবিউন লিখেছে যে দর্শকদের মনে হয়েছে যেন চেম্বারটি "তাদের মস্তিষ্ক পুনঃস্থাপন করেছে।"[১১]
প্রচার
[সম্পাদনা]২০২২ সালে, টিকটক এবং ইউটিউবে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে রুমে দীর্ঘ সময় কাটানোর জন্য একটি নগদ পুরস্কার রয়েছে। যদিও এর অস্তিত্ব ছিল না। অরফিল্ড কোম্পানির ওয়েবসাইট "দ্য অরফিল্ড চ্যালেঞ্জ" বর্ণনা করে এই চেম্বারে থাকার জন্য প্রতি ঘণ্টায় $৬০০ দিতে হবে।[৭][৩]
পৃথিবীর সবচেয়ে শান্ত জায়গা
[সম্পাদনা]অরফিল্ড ল্যাবরেটরিজ ২০০৫ এবং ২০১৩ গিনেস বিশ্ব রেকর্ডে পৃথিবীর সবচেয়ে শান্ত/নিরিবিলি জায়গা হিসেবে স্থান দখল করেছে।[১২] ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে মাইক্রোসফটের অ্যানিকোইক চেম্বার অরফিল্ডের রেকর্ডকে অতিক্রম করে নতুন রেকর্ড গড়েছিল। তবে অরফিল্ড ২০২১ সালের নভেম্বরে (-)২৪.৯ dbA এর শব্দসীমা সহিত রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেছিল।[১৩][১৪][১৫][১৬] অরফিল্ডে কে সবচেয়ে বেশি সময় অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছেন তার সম্পর্কে স্পষ্ট কোন তথ্য বা রেকর্ড নেই। অরফিল্ড ল্যাবরেটরিজের প্রতিষ্ঠাতা অরফিল্ড এখানে ৪৫ মিনিট অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছিলেন।[১৭] মাইক্রোসফটের গোপাল নিশ্চিত করেছেন এখানে একজন ৫৫ মিনিট অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছিলেন।[১৮] এখানে সাধারণত বেশিরভাগ লোক ৩০ মিনিটের মধ্যেই এখান হতে প্রস্থান করতে বাধ্য হন।[১৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Magazine, Smithsonian; Eveleth, Rose। "Earth's Quietest Place Will Drive You Crazy in 45 Minutes"। Smithsonian Magazine (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ Weaver, Caity (২০২২-১১-২৩)। "Could I Survive the 'Quietest Place on Earth'?"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ ক খ "The quietest place on Earth"। www.bbc.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ Foy, George Michelson (২০১২-০৫-১৮)। "Experience: I've been to the quietest place on Earth"। The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ "In Minneapolis, the world's quietest room"। MPR News (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ এপ্রিল ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ Lauritsen, John (২০২৪-০২-০৭)। "Orfield Laboratories is home to the quietest room on earth — but that's not all - CBS Minnesota"। www.cbsnews.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Weaver, Caity (২০২২-১১-২৩)। "Could I Survive the 'Quietest Place on Earth'?"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ Weaver, Caity (২০২২-১১-২৩)। "Could I Survive the 'Quietest Place on Earth'?"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ Darnell, Casey (২০২৪-০৩-২১)। "I spent an hour with four strangers in the quietest room in Minneapolis (and the world)"। www.startribune.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ "The quietest place on earth will drive you insane"। The Jerusalem Post | JPost.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০২-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ Tribune, Jenna Ross Star। "'Quietest place on Earth' finds purpose in healing humans"। Star Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ "Quietest Places in the World"। American Scientist (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০২-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ Niepow, Dan (২০২২-০২-০৭)। "Reflections from One of the Quietest Places on Earth"। Mpls.St.Paul Magazine (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ Magazine, Smithsonian; magazine, Rose Eveleth,Smithsonian। "In the Earth's Quietest Room, You Can Hear Yourself Blink"। Smithsonian Magazine (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ গিনেস বিশ্ব রেকর্ড। "Quietest Place"। গিনেস বিশ্ব রেকর্ড।
- ↑ "THIS is the quietest place on Earth, where no one can stay more than an hour"। The Times of India। ২০২৩-০৯-২৮। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ "Where is the quietest place on Earth? | indy100"। www.indy100.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ Prisco, Jacopo (২০১৮-০৩-২৮)। "Inside the world's quietest room"। CNN (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।
- ↑ "Orfield Labs Quiet Chamber"। Atlas Obscura (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৭।