অধোমৃত্তিকা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অধোমৃত্তিকা স্তর

অধোমৃত্তিকা বলতে ভূপৃষ্ঠস্থিত মাটির উপরিমৃত্তিকা স্তরের নিচে অবস্থিত স্তরটিকে বোঝায়। উপরিমৃত্তিকা স্তরের মতো এই স্তরটিও বালু, পলিকর্দমের ক্ষুদ্র কণার বৈচিত্র্যময় মিশ্রণ, তবে এটিতে জৈব পদার্থ  ও জীবাবশিষ্ট (হিউমাস) এবং অল্ল পরিমাণে ক্ষুদ্রাকৃতির শিলাও মিশ্রিত থাকে। অধোমৃত্তিকাকে বি দিগন্ত বলা হয়। অধোমৃত্তিকার নিচের স্তরটিকে মৃত্তিকাভিত্তি বা সি দিগন্ত বলে।

উপরিমৃত্তিকা (যাকে এ দিগন্ত বলাও হয়) সাধারণত সবচেয়ে বেশি ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব কর্মকাণ্ডের অধিষ্ঠানস্থল। এর বিপরীতে অধোমৃত্তিকা বা বি দিগন্ত মৃত্তিকার সেই অঞ্চল যেখানে লোহার অক্সাইড, এঁটেল কণা, উপরিমৃত্তিকা থেকে পৌঁছানো সামান্য জৈব উপাদান থাকে। এছাড়া এটি উপরিমৃত্তিকা থেকে রোদ-বৃষ্টি-ঝড় থেকে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে থাকে। মানব কর্মকাণ্ডের কারণে বহু পরিবেশে উপরিমৃত্তিকা ও অধোমৃত্তিকা স্তরগুলি মিশ্রিত হয়ে গিয়ছে।

কর্দম বা এঁটেলমাটি ভিত্তিক অধোমৃত্তিকা বহু হাজার বছর ধরে রোদেপোড়া ইটের বাড়ি, খড়কাদা, ঠাসা মাটি, মাটি লেপা বাতার কাঠামো ও অন্যান্য মৃত্তিকাভিত্তিক নির্মাণপদ্ধতির মূল উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঐসব পদ্ধতিতে অন্য যে উপাদানটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়,  সেই মোটা বালুও এই অধোমৃত্তিকা স্তরেই পাওয়া যায়।

অধোমৃত্তিকা সম্পূর্ণ নিস্ফলা বা বন্ধ্যা না হলেও মৃত্তিকাবাসী জীবসমূহের উপস্থিতি বিবেচনা করলে পচা জীবাবশিষ্ট তথা হিউমাস-সমৃদ্ধ উপরিমৃত্তিকা স্তরের তুলনায়  এটি আপেক্ষিকভাবে অনুর্বর।