অতিথিশালা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এস্তোনিয়াতে গেস্ট হাউস ,আলতোমইসা, তুরু গ্রাম

অতিথিশালা এক ধরনের হোটেল-সদৃশ অস্থায়ী আবাসভবন। এটিতে সাধারণত একটি ব্যক্তিগত বাসভবনকে রূপান্তরিত করে কেবল অতিথিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অতিথিশালার মালিক একই এলাকাতেই আরেকটি বাসভবনে থাকেন ও সেটির দেখাশোনা করেন। অতিথিশালার সুবিধাগুলি হল ব্যক্তিগত সেবার উচ্চমান, খাবারের ভাল মান, কোলাহলমুক্ত পরিবেশ, সস্তা দাম, ইত্যাদি।

সরকারি অতিথিশালা[সম্পাদনা]

সার্কিট হাউজ[সম্পাদনা]

সার্কিট হাউস, নেত্রকোণা

বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় আগত রাষ্ট্রীয় অতিথি, ভিভিআইপি, ভিআইপি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের অবস্থানের জন্য একটি করে সার্কিট হাউজ আছে। অবিভক্ত ভারতবর্ষে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের শাসনামলে বিভাগীয় কমিশনারগণ সার্কিটকোর্ট করার জন্য জেলায় যে ভবনে অবস্থান করতেন-সেটি সার্কিট হাউজ নামে পরিচিত।

১৭৭২ সালে কালেক্টর পদ সৃষ্টি হওয়ার পর লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস রাজস্ব কার্যাবলি সমন্বয়ের জন্য রাজস্ব কমিটি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন। ১৭৮৫ সালে রাজস্ব কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। ১৭৮৬ সালে রাজস্ব কমিটিকে রাজস্ব বোর্ড নাম দেওয়া হয়। সাধারণভাবে কর্নওয়ালিস কোড নামে পরিচিত ১৭৯৩ সালের বিধিমালা অনুযায়ী রাজস্ব বোর্ডের গঠনতন্ত্র আরও সংশোধন করা হয়।

লর্ড কর্নওয়ালিশ কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে ইংরেজ সরকার রাজস্ব আদায় বিষয়ক চিন্তাভাবনা থেকে মোটামুটি মুক্ত হয়ে রাজ্যসীমা বিস্তার ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে মনোযোগী হওয়ার সুযোগ পায়। ১৭৯৩ থেকে ১৮২৮ সাল পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ডের একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা জেলা কালেক্টরের নিযুক্তি, বদলি ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করতেন। কিন্তু লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্কের প্রশাসন লক্ষ্য করেন যে, রাজস্ব বোর্ড বিচারবিভাগীয় ও প্রশাসনিক কাজে অধিক ভারাক্রান্ত। জেলায় কাজের সমন্বয় সাধন এবং তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অভাব পরিলক্ষিত হয়। এর ফলশ্রুতিতে ১৮২৯ সালে পাশ হয় 'বেঙ্গল রেভিনিউ কমিশনারস্ রেগুলেশন'। রাজস্ব বোর্ড এবং জেলা কালেক্টরদের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের একটি নতুন স্তর তৈরি করা হয়। সৃষ্টি হয় 'রেভিনিউ কমিশনার' এর পদ, কালক্রমে যাঁর এখনকার পদবী 'বিভাগীয় কমিশনার'।

আইনে বিভাগীয় কমিশনারকে জেলা কালেক্টরেটের আদেশের বিরুদ্ধে রাজস্ব এবং ফৌজদারী বিষয়ক আপিল শুনানীর ক্ষমতা প্রদান করা হয়। তার জন্য প্রতিটি জেলায় তৈরি করা হয় একটি করে 'সার্কিট কোর্ট' যা বর্তমানে 'সার্কিট হাউজ' নামে বহুল পরিচিত। জেলা পরিদর্শনকালে বিভাগীয় কমিশনারগণ কয়েকদিন যাবৎ সার্কিট হাউজে অবস্থান করে রাজস্ব ও ফৌজদারী আপিল শ্রবণ এবং রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত বিষয়াদি দেখভাল করতেন। সেই সময় থেকে সার্কিট হাউজকে বিভাগীয় কমিশনারের ‘Extended Home’ বা বর্ধিত বাসভবন বলা হয়ে থাকে। এ কারণে একমাত্র বিভাগীয় কমিশনারকে সার্কিট হাউজে অবস্থানের জন্য ভাড়া পরিশোধ করতে হয় না।

সার্কিট হাউজ বর্তমানে জেলা সফরে আগত রাষ্ট্রীয় অতিথি, ভিভিআইপি, ভিআইপি ও সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণের সরফকালীন আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সার্কিট হাউজ ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্ব 'জেলা প্রশাসক' এর উপর ন্যাস্ত। জেলা প্রশাসকের পক্ষে 'নেজারত ডেপুটি কালেক্টর' এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

সরকারি ডাকবাংলো একটি সরকারি আবাসিক সংক্রান্ত ব্যবস্থা, যা সরকার পরিচালনা করে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন প্রদানের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। সরকারি ডাকবাংলা বিভিন্ন স্তরের সরকারী কর্মকর্তাদের বাস ও অন্যান্য উপযোগী সুবিধা সরবরাহ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]