মানিলণ্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০২
মানিলণ্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০২ বাংলাদেশের একটি আইন যা ২০০২ সালের ৭ নং আইন হিসাবে চিহ্নিত এবং ৭ই এপ্রিল, ২০০২ তারিখে আইন হিসাবে প্রচারিত। আইনটি ৩০শে এপ্রিল ২০০২ তারিখ থেকে কার্যকর হয়।[১] এ আইনে পাঁচটি অধ্যায়ে ১৯টি ধারা রয়েছে। পূর্ববর্তী সময়ে দেশে অবৈধ পন্থায় আয় ও সম্পদ উপার্জন এবং বৈধতার প্রয়োজনে বিদেশে পাচারের পরিপ্রেক্ষিতে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এ আইনটি “মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ (সংশোধন) আইন” দ্বারা ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়। পরে, ২০১২ সালে এই আইনটি রহিত করা হয়।[২]
মানিলণ্ডারিং
[সম্পাদনা]মানিলণ্ডারিং (ইং: Money laundering) হলো কালো টাকাকে সাদা করার একটি প্রক্রিয়া। বিভিন্ন হাতবদলের মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে উপার্জিত টাকাকে বৈধ উৎস থেকে উপার্জিত প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টাই মানিলণ্ডারিং। এই উদ্দেশ্যে সাধারণত বিদেশ টাকা পাচার করা হয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে বৈধ পথে দেশে আনয়ন করা হয়।
আইনের প্রথম অধ্যায়
[সম্পাদনা]প্ররম্ভিক অধ্যায়ে আইনের শিরোনাম বিবৃত হয়েছে িএবং বিভিন্ন শব্দের সংজ্ঞার্থ প্রদান করা হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে “মানিলন্ডারিং” অর্থ (অ) অবৈধ পন্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আহরিত বা অর্জিত সম্পদ; এবং (আ) বৈধ বা অবৈধ পন্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আহরিত বা অর্জিত সম্পদের অবৈধ পন্থায় হস্তান্তর, রূপান্তর, অবস্থানের গোপনকরণ বা উক্ত কাজে সহায়তা করা।[৩]
আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়
[সম্পাদনা]মানিলণ্ডারিং প্রতিরোধের লক্ষ্যে এ অধ্যায়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব ও আইনী এখতিয়ারের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।[৩]
আইনের তৃতীয় অধ্যায়
[সম্পাদনা]এ অধ্যায়ে মানিলন্ডারিং আদালত প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। যেমন এ আইনের ৭ ধারায় বলায় হয়েছে “আদালত এই আইনের অধীন অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ড আরোপ এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে তদন্তাদেশ, অবরুদ্ধকরণাদেশ, ক্রোকাদেশ, অর্থদণ্ড এবং ক্ষতিপূরণ আদেশসহ অন্যান্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে৷”।[৩]
আইনের চতুর্থ অধ্যায়
[সম্পাদনা]এ আইন অপরাধ ও শাস্তি সংক্রান্ত। যেমন ১৩(১) ধারায় বিধান রয়েছে যে, কোন ব্যক্তি মানিলন্ডারিং এর সাথে কোনভাবে জড়িত থাকিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন৷ এছাড়া ১৩(২) ধারায় বিধান রয়েছে যে মানিলণ্ডারিং অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট অপরাধী অন্যুন ছয় মাস এবং অনধিক সাত বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে এবং অপরাধের সহিত জড়িত অর্থের অনধিক দ্বিগুণ অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে৷[৩]
আইনের পঞ্চম অধ্যায়
[সম্পাদনা]এই অধ্যায়ে বিভিন্ন বিষয় বিবৃত। যেমন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও সনাক্তকরণে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং আর্থিক কর্মকাণ্ডের সহিত জড়িত অন্যান্য সংস্থার দায়-দায়িত্ব এই অধ্যায়ে বর্ণিত। এ অধ্যায়ের ১৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, “আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কোন বিদেশী রাষ্ট্রের সহিত চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে৷”[৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ [১] বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কৃলার
- ↑ মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ মানিলণ্ডারিং প্রতিরোধ আইন