১৯১১ বিপ্লব
১৯১১ বিপ্লব, যা চীন বিপ্লব বা সিনহাই বিপ্লব নামেও পরিচিত চীনের সাম্রাজ্যিক বংশের পরিসমাপ্তি ঘটায় ও ১৯১২ সালের ১ জানুয়ারি চীন প্রজাতন্ত্র গঠন করে। এই বিপ্লবের নাম সিনহাই (Xinhai/ Hsin-Hai)দেওয়া হয় কারন বিপ্পবটি হয় ১৯১১ সালে যখন চীনের ক্যালেন্ডারের সেক্সাজেনারি চক্র শেষ হয়ে শুরু হয়। উক্ত বিপ্লব ২১৩২ বছরের সাম্রাজ্যিক শাসন, ২৭৬ বছরের ম্যাঞ্চু শাসনের সমাপ্তিরেখা টানে এবং প্রজাতান্ত্রিক যুগের সূচনা করে। [১]
এই বিপ্লব দীর্ঘদিনের আন্দোলন, বিদ্রোহের চূড়ান্ত পরিস্থিতি আনে। কিং রাজবংশ সরকার গঠন ও বিদেশী শক্তির আক্রমণের প্রতিরক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম চালিয়ে যায়। ১৯০০ সালের দিকে সংস্কৃতিবিষয়ক কিছু নতুন নীতি নির্ধারণ করা হয় যার বিপক্ষ নেয় সংখ্যালঘু উপজাতিগোষ্ঠী মঞ্চু। এরপরে বিপ্লবী, মঞ্চু উৎখাত দল ও দেশ পুনর্গঠনকারীগণ যারা দেশকে আধুনিকায়ন করতে ইচ্ছুক তারা ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মঞ্চুদের উৎখাত করা যায়। অতঃপর ১৯১১ সালের ১০ অক্টোবর নিউ আর্মি নামে নতুন যোদ্ধাদের দল গঠিত হয় এবং মঞ্চুদের বিপক্ষে সশস্ত্র যুদ্ধ আরম্ভ হয়ে পড়ে। উক্ত যুদ্ধটি উচাং বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এরপরেই দেশের আনাচে কানাচে অনুরূপ আরো কয়েকটি খন্ডযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চীনের সর্বশেষ সম্রাট ছয় বছর বয়সী পুয়ি পদত্যাগের জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
যা হোক, নানজিং এ বিপ্লবী সেনারা অস্থায়ী জোট সরকার গঠন করে। চীনের জাতীয় সম্মেলন(পরবর্তীতে চীন প্রজাতন্ত্র) চীন প্রজাতন্ত্র ঘোষিত করে। এরপর সান য়াট-সেনকে টংমেনঘুই (ইউনাইটেড লিগের) নেতা ঘোষণা করে। উত্তর ও দক্ষিণদিকের দেশের গৃহযুদ্ধ সমঝোতায় শেষ হয়। সান, উয়ান শিকাইয়ের পক্ষে পদত্যাগ করেন, যিনি বেইজিং-এ নতুন জাতীয় সরকারের রাষ্ট্রপতি হন। উয়ান তার মৃত্যুর পূর্বে অর্থাৎ ১৯১৬ সালে বৈধ কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হন যার ফলে কয়েক দশক রাজনৈতিক বিভাজন এবং যুদ্ধবাজের উত্থান হয়। এমনকি পুনরায় সাম্রাজ্যিক রাষ্ট্র গঠনের প্রয়াসও ছিল।
তাইওয়ানের দ্বীপে চীন প্রজাতন্ত্র ও গণ প্রজাতন্ত্র চীন মূলভূমিতে উভয়েই নিজেদেরকে উক্ত বিপ্লবের বৈধভাবে সফল ভাবে এবং বিপ্লবটির আদর্শ যেমনঃ জাতীয়তাবাদ, প্রজাতন্ত্রবাদ, আধুনিকায়ন এবং জাতীয় ঐক্যকে সম্মান জানায়। তাইওয়ানে ১০ অক্টোবর "ডাবল টেন্থ দিবস" পালন করা হয় যা তাইওয়ানের একটি জাতীয় দিবস। মূলভূমি চীনে উক্ত দিনটিকে ১৯১১ বিপ্লবের বার্ষিকী হিসেবে উদযাপন করা হয়৷
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Li, Xiaobing. [2007] (2007). A History of the Modern Chinese Army. University Press of Kentucky. আইএসবিএন ০-৮১৩১-২৪৩৮-৭, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮১৩১-২৪৩৮-৪. pp. 13, 26–27.