পাট্টা ও কবুলিয়াত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কাবুলিয়াত:- শেরশাহ রাজস্ব সংস্কার এর মধ্য কাবুলিয়াট অন্যতম একটি পদ্ধতি। তিনি প্রথমে ভূমি জরিপের ব্যবস্থা করেন। এবং জমির উৎপাদনের উপর নির্ভর করে রাজস্ব নির্ধারণ করেন। জমি কর্ষণনীতির অবস্থা অনুযায়ী উৎপাদন ফসলের এক-তৃতীয়াংশ রাজস্ব নির্ধারণ করেন। শেরশাহ এ প্রথা অনুযায়ী কৃষকদের কাছ থেকে লিখিত চুক্তিপত্র আদায় করতেন । এবং কৃষকরা তাদের দাবি ও দায়িত্ব বর্ণনা করে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে দিত। আর এটাই শেরশাহের কাবুলিয়াট প্রথা নামে পরিচিত। পাট্টা:- শেরশাহের পাট্টা প্রথা ছিল প্রজাদের সত্ত স্কীকার মূলত সরকারের কাছ থেকে জমির উপর কৃষক দের সত্ব স্বীকার ও দেয় খাজনা নির্দিষ্ট করে যে প্রাপ্তি পত্র দেয়া হতো তাকে পাট্টা বলা হতো।

পাট্টা ও কবুলিয়াত অমিতের আমোলে আমলে প্রচলন শুরু হয় । এটি একটি অতি পুরানো ভূমি বন্দোবস্তের চুক্তিপত্র। । পাট্টা ও কবুলিয়তের ভিত্তিতে কৃষকরা জমির মালিকানা ও দখল প্রমাণের সুযোগ পায়। কৃষকগণ তাদের অধিকার ও দায়িত্ব বর্ণনা করে সরকারকে কবুলিয়ত নামে দলিল সম্পাদন করে দিত আর সরকারপক্ষ থেকে জমির উপর জনগনের স্বত্ব স্বীকার করে নিয়ে পাট্টা দেওয়া হত।

জমিতে কৃষকের স্বতঃ স্বীকার করে কৃষককে যে দলিল দেয়া হত তাকে পাট্টা বলেন এবং কৃষক নির্দিষ্ট রাজস্ব দেওয়ার কথা কবুল করে যে দলিল দিত তাকে কবুলিয়ত বলে

সোর্স=https://bn.wikipedia.org/wiki/শের_শাহ_সুরি
আফগান[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] শাসক

ইতিহাস[সম্পাদনা]

শেরশাহের সর্বাপেক্ষা গৌরবময় কৃতিত্ব ছিল ভূমি রাজস্বব্যবস্থার সংস্কার সাধন। মধ্যযুগের কোনো শাসকই শেরশাহের মতো প্রজার জন্য নিরাপত্তা বিধানের জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করেননি। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের প্রতি শেরশাহের কড়া আদেশ ছিল যে তারা যেন প্রজাদের সঙ্গে সর্বোচ্চ সদয় আচরণ করে। কোনো সৈনিক বা রাজ কর্মকর্তা কখনো কোনো প্রজাপীড়ন করলে ওই সৈনিক বা কর্মকর্তাদের জন্য ছিল কঠোর শাস্তির বিধান

বাংলাদেশে শের শাহের আমলে জরিপপ্রথা অঞ্চল বিশেষে প্রবর্তিত হয়েছিল বলে জানা যায়। ১৫৪০ সালে শেরশাহ বাংলার শাসনকার্য শুরু করেন। সম্রাট শেরশাহের শাসনামলে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা সংস্কার ও যুগোপযোগী করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ সময় যারা বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে বনভূমিকে চাষের উপযোগী করে গড়ে তুলতেন তাদের প্রজা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার লক্ষ্যে পাট্টা ও কবুলিয়াত পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়।

পাট্টা হলো কোনো ব্যক্তির জমি ভোগ দখলের অধিকার পত্র। পাট্টার শর্তগুলো মেনে নিয়ে প্রজা যেই সম্মতিপত্র দিতেন তাই কবুলিয়াত। চাষিরা জমির মালিকানা ও দখল প্রমাণের সুযোগ পায়। এই আমলে জমি জরিপের জন্য কানুনগো নিয়োগ দেয়া হয়।

শেরশাহ উৎপাদিত ফসলের এক-চতুর্থাংশ খাজনা নির্ধারণ করেছিলেন। তবে মনে করা হয় এই খাজনার হার উৎপাদিত ফসলের এক-তৃতীয়াংশ থেকে এক-চতুর্থাংশের মধ্যে ছিল। প্রত্যেক কৃষক তার প্রদানকৃত মূল রাজস্বের ২.৫ শতাংশ শস্য সঞ্চয় আকারে রাষ্ট্রের ধর্মগোলায় জমা দিত। ওই খাদ্যশস্য দুর্ভিক্ষ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জন সাধারণের মধ্যে সস্তা দরে বিতরণ করা হতো।

শেরশাহের সর্বাপেক্ষা গৌরবময় কৃতিত্ব ছিল ভূমি রাজস্বব্যবস্থার সংস্কার সাধন। মধ্যযুগের কোনো শাসকই শেরশাহের মতো প্রজার জন্য নিরাপত্তা বিধানের জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করেননি। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের প্রতি শেরশাহের কড়া আদেশ ছিল যে তারা যেন প্রজাদের সঙ্গে সর্বোচ্চ সদয় আচরণ করে। কোনো সৈনিক বা রাজ কর্মকর্তা কখনো কোনো প্রজাপীড়ন করলে ওই সৈনিক বা কর্মকর্তাদের জন্য ছিল কঠোর শাস্তির বিধান। সৈন্য পরিচালনার সময় বা অন্য কোনো কারণে প্রজার ক্ষেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতেন। যার দৃষ্টান্ত আমরা হযরত ওমর ফারুকের (রা.) শাসনামলেও পাই।