অ্যান্থনি বেবিংটন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

অ্যান্থনি বেবিংটন (জন্ম ১৯৬২) একজন ব্রিটিশ-মার্কিন ভূতত্ত্ববিদ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের গ্রাজুয়েট স্কুলের পরিবেশ ও সমাজ বিষয়ের হিগিনস অধ্যাপক। তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেছেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

অ্যান্থনি বেবিংটন ইংল্যান্ডের স্ট্যাফোর্ডশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমি অর্থনীতি ও ভূগোল বিষয়ে তিনি বিশেষ সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৯০ সালে ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট স্কুল অব জিওগ্রাফি থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ভূতত্ত্ববিদ বিলি লি টার্নার তাঁর পিএইচডি থিসিস তত্ত্বাবধান করেছিলেন। তাঁর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশেরই নাগরিকত্ব রয়েছে।

তিনি কেমব্রিজে লাতিন-আমেরিকান অধ্যয়ন বিষয়ে পোস্টডক্টরাল হিসেবে নিযুক্তি পান (১৯৮৯-১৯৯২)। তিনি পরবর্তীতে লন্ডনভিত্তিক সংস্থা বৈদেশিক উন্নয়ন ইনস্টিটিউট(১৯৯২-১৯৯৪) ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে (১৯৯৪-১৯৯৫) কাজ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ফেরত যান। সেখানে তিনি বিশ্বব্যাংকে দুই মেয়াদে (১৯৯৫-১৯৯৬,১৯৯৯-২০০০) কাজ করেন। কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ১৯৯৬-২০০৩ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। তারপর তিনি ম্যানচেস্টারে চলে যান।

অবদান[সম্পাদনা]

বেবিংটন শুরুর দিকে ইকুয়েডরপেরু-র পার্বত্য এলাকার কৃষকদের চাষপদ্ধতি, জীবিকা ও কৃষিবিষয়ক জ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতেন। তিনি মানবভূগোল ও আন্দিজ এলাকার গ্রামীণ উন্নয়ন অধ্যয়নের ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রেখেছেন। সেখানকার কৃষকদের সঙ্গে তিনি প্রচুর সময় অতিবাহিত করেছেন এবং উক্ত অভিজ্ঞতা তিনি সফলভাবে গবেষণায় ব্যবহার করেছেন, এতে তাদের জীবনাচার সম্পর্কে জ্ঞানের ক্ষেত্র আরো বিস্তৃত হয়েছে। তিনি তাত্ত্বিক আলোচনা ও ব্যবহারিক উন্নয়ন বিষয়েও আগ্রহী।

গ্রামীণ সংগঠন ও আন্দোলনের বিষয়ে তাঁর এ আগ্রহের ফলশ্রুতিতে লাতিন আমেরিকার বেসরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা হয়। বেসরকারি সংগঠন ও এদের উন্নয়নমুখী কার্যক্রম নিয়ে রচিত একাধিক বইয়ে ধারণা স্থান পেয়েছে। বিশ্বব্যাংকে সামাজিক নীতি নিয়ে কাজ করার পর তিনি বিশ্বব্যাংক ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এক্ষেত্রে সামাজিক মূলধনের ধারণা তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তিনি খননকার্য, উন্নয়ন, খননকার্য নিয়ে উত্থাপিত সাম্প্রতিক প্রস্তাবগুলোর বিরোধিতা, ইকুয়েডর ও পেরুর পরিস্থিতি - এগুলো নিয়েও গবেষণা করেছেন।

তিনি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আন্দিজ অঞ্চল, নেপালইন্দোনেশিয়ায় কাজ করেছেন।

বেবিংটন জাতিসংঘের সামাজিক উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউটের "দারিদ্র্য ও অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই(২০১০)" শীর্ষক প্রতিবেদন প্রণয়নে ভূমিকা রাখেন। তিনি সামাজিক নীতিতে অর্থায়ন(২০০৬-২০১০) প্রকল্পেও সহযোগিতা করেন।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

বেবিংটন তাঁর কর্মজীবনে অনেকগুলো সম্মাননায় ভূষিত হন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • অস্ট্রেলীয় গবেষণা কাউন্সিলের ফেলোশিপ ২০১৭-২০২২।[১] পদত্যাগ ২০১৯।
  • জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো, ২০০৯।
  • আমেরিকান শিল্প ও বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো, ২০১৪।
  • গুগেনহাইম ফেলোশিপ, ২০১৪।
  • লাতিন আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ সংস্থার কাছ থেকে কার্ল ও সাওয়ার বিশেষ সম্মাননা, ২০১৪।
  • সামগ্রিক কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ রবার্ট নেটিং পুরস্কার, ২০১০।
  • আচরণগত বিজ্ঞান অধ্যয়ন কেন্দ্র, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলোশিপ
  • লাতিন আমেরিকায় গবেষণাকার্য পরিচালনার জন্য ইএসআরসি বৃত্তি, ২০০৭-২০০৯।

প্রকাশনা[সম্পাদনা]

  • জে.বারডেগ,এ.বেবিংটন ও জে.এসকোবাল। জাতীয় উন্নয়নে বৃদ্ধি, দারিদ্র্য ও অসমতা।
  • বেবিংটন এ.জে., এস হিকি ও ডি মিলটিন। (২০০৮) এনজিওগুলো কী ভিন্নতা সৃষ্টি করতে পারে? উন্নয়নের বিকল্প মাধ্যমগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
  • বেবিংটন.এ, এ.দানি, এ ডি হান ও এম ওয়াল্টন: সমতার প্রাতিষ্ঠানিক পথ: অসমতার ফাঁদগুলোর সাথে পরিচয়।
  • বেবিংটন এ.জে. ও ভি.এইচ তোরেস: আন্দিজে সামাজিক মূলধন।
  • বেবিংটন এ.জে., এম উলকক, এস.গুগেনহাইম ও এম.ওলসন। ক্ষমতায়নের অনুসন্ধান : বিশ্বব্যাংকে সামাজিক মূলধনের ধারণা।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]