ইন্দোনেশীয় ব্রোঞ্জ কুঠার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইন্দোনেশিয়ার সুলাবেসি দ্বীপে পাওয়া ব্রোঞ্জ কুঠার

ইন্দোনেশীয় ব্রোঞ্জ কুঠার হচ্ছে ব্রোঞ্জ যুগের বস্তু যা ইন্দোনেশীয় আর্কিপেলাগোতে ১ম থেকে ২য় শতকের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিলো। জাভা, বালি, সুলাবেসি, পুর্বাঞ্চলের দ্বীপসমূহে এবং পাপুয়ার লেক সেনতানির আশপাশের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের ব্রোঞ্জ উৎপাদন কেন্দ্র কিংবা সমাধিস্থানের ব্রোঞ্জের কুঠার পাওয়া গেছে। ব্রোঞ্জ কুঠারের উপস্থিতি ১ম শতকে এই দ্বীপাঞ্চলে মাত্রাতীত ব্যবসায়ী নেটওয়ার্কসের উপস্থিতি প্রমাণ করে এবং ডং সং সংস্কৃতির সংগে যোগসূত্র ভাবা হয়।

প্রত্নতত্ত্ব[সম্পাদনা]

কৃষিকাজের অনুপযোগী পাতলা পাতের ব্রোঞ্জের উৎসব কুঠার

পাত আকৃতির ব্রোঞ্জ কুড়ালে বিভিন্ন বিন্যাস থেকে এবং এটা এত অস্ত্র কিংবা কৃষিকাজের উপকরণ হিসেবে ব্যবহারের জন্যে খুব দুর্বল যা কুড়ালের উৎসবে ব্যবহার নির্দেশ করে।

ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জের প্রথম নথিবদ্ধ ধাতবকর্মের সন্ধান পাওয়া যায় ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের। প্রথমদিককার সকল ব্রোঞ্জনির্মিত বস্তু যেমন উচ্চশৈলীর কুড়াল, কেটলি ইত্যাদি উৎসবাদিতে ব্যবহৃত হতো। এই পর্বে ইন্দোনেশিয়ায় ব্রোঞ্জের নির্মিত বিভিন্ন বস্তু খুঁজে পাওয়া যায়। এমনকি ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব অংশের লোকেরা যারা ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দুবাদের সংস্পর্শে আসেনি, তারাও স্বতন্ত্র ধাতবকর্মের প্রযুক্তি গড়ে তোলেছিলো। এই দ্বীপসমূহে অবশ্যই বাইরে থেকে ব্রোঞ্জ আনা হয় কারণ বালি বা রটে দ্বীপের মতো ক্ষুদ্র দ্বীপসমূহে কোন তামা অথবা টিনের খনি ছিলো না। তারপরও এসব দ্বীপে ব্রোঞ্জ তৈরীর কাঁচামাল এবং ব্রোঞ্জনির্মিত বস্তু পাওয়া যায়[১]

১ম থেকে ২য় শতক থেকে প্রিক্লাসিক যুগ পর্যন্ত উৎসবের কুঠার নির্মাণ অব্যাহত ছিলো। এই যুগে ব্রোঞ্জ ধাতুর শিল্পকারখানা বিস্তার লাভ করে বিশেষ করে জাভা এবং বালি দ্বীপে। এইসকল কারখানা উৎসবের ব্রোঞ্জ কুড়ালসহ ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন ব্রোঞ্জ সামগ্রী প্রস্তুত করতো। জাভায় বেশকিছু সোয়ালো লেজযুক্ত ব্রোঞ্জ কুঠার পাওয়া গেছে। এনথ্রোমরফিক নকশা করা বৃহৎ আকারের কুঠার পাওয়া গেছে রটে দ্বীপে এবং মাকাসসারে। বিভিন্ন স্থানে উৎসব কুঠার প্রাপ্তি ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জে ১ম শতাব্দীতে আন্তঃদ্বীপীয় বাণিজ্যের সন্ধান দেয়।[২]

ধরণ[সম্পাদনা]

ব্রোঞ্জের কুড়ালের ফলা
নকশাকার ফলা

ইন্দোনেশিয়ায় বিভিন্ন ধরনের উৎসব ব্রোঞ্জ কুঠার পাওয়া গেছে। এসব ব্রোঞ্জ কুঠারের মধ্যকার সাদৃশ্য হচ্ছে তাদের শৈল্পিক বিন্যাস এবং ভঙ্গুর নকশা যা এদের উৎসবে ব্যবহার নির্দেশ করে। ১৮৭৫ সালে উত্তর রটের লান্ডুতে একটি ব্রোঞ্জ উৎসব কুঠার পাওয়া গেছে যাতে এনথ্রোপোমর্ফিক নকশা জ্যামিতিক বিন্যাস যেমন ঘনাকারযুক্ত বৃত্ত, মাছের কাটার বিন্যাস এবং সর্পিলাকৃতি বিন্যাসে সাজানো যা দক্ষিণ পশ্চিম প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রাক শিল্পকর্মের সংগে সাদৃশ্যপূর্ণ। মূলভূমি এশিয়া থেকে আসা নকশাও দেখা গেছে।[৩] এটা সুলাবেসিতে প্রাপ্ত কুঠারের সদৃশ যা ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।[২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

চিত্র[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Miksic 2001, পৃ. 33।
  2. Bellwood 2001, পৃ. 38।
  3. Heekeren 2013, পৃ. 11।

উদ্ধৃত কর্ম[সম্পাদনা]

  • Bellwood, Peter (২০০১)। "Ceremonial Bronzes of the Pre-Classic Era"। Miksic, John। Ancient History। Indonesian Heritage। Archipelago Press। আইএসবিএন 9813018267 
  • I Wayan Ardika (২০০১)। "Social Complexity in Late Prehistoric Java"। Miksic, John। Ancient History। Indonesian Heritage। Archipelago Press। আইএসবিএন 9813018267 
  • Heekeren, H.R. (২০১৩)। The Bronze-Iron Age of Indonesia। Verhandelingen van het Koninklijk Instituut voor Taal-, Land- en Volkenkunde। 22। Springer Science & Business Media। আইএসবিএন 9789401509091 
  • Miksic, John (২০০১)। "The Hunting and Gathering Stage in Eastern Indonesia"। Miksic, John। Ancient History। Indonesian Heritage। Archipelago Press। আইএসবিএন 9813018267