গরান রাংচিতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গরান রাংচিতি
Centaur oakblue
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Lycaenidae
গণ: Arhopala
প্রজাতি: A. centaurus
দ্বিপদী নাম
Arhopala centaurus
(Fabricius, 1775)
প্রতিশব্দ
  • Amblypodia centaurus (Fabricius, 1775)
  • Nilasera centaurus (Fabricius, 1775)
  • Papilio centaurus Fabricius, 1775

গরান রাংচিতি (বৈজ্ঞানিক নাম: Arhopala centaurus (Fabricius))[১] এক প্রজাতির মাঝারী আকারের খয়েরি রঙের প্রজাপতি। এরা ‘লাইসিনিডি[২] গোত্রের এবং ‘থেকলিনি’ উপগোত্রের সদস্য। সম্ভবত এই প্রজাতির প্রজাপতি ভারতের সব থেকে বড় ওকব্লু (oakblues)।[৩]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত গরান রাংচিতি এর উপপ্রজাতি হল- [৪]

  • Arhopala centaurus pirama Moore, 1881 –তামিল গরান রাংচিতি (Tamil Centaur Oakblue)
  • Arhopala centaurus pirithous Moore, 1883 –বেংগল গরান রাংচিতি (Bengal Centaur Oakblue)
  • Arhopala centaurus coruscans Wood-Mason and de Nicéville, 1880 –আন্দামান গরান রাংচিতি (Andaman Centaur Oakblue)

আকার[সম্পাদনা]

গরান রাংচিতি এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৫৩-৬২মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়। [৫]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

পুরুষ[সম্পাদনা]

ডানার উপরিতল ঘন কালচে নীল এবং বেগুনী আভাযুক্ত। ডানার প্বার্শ প্রান্তসীমা অথবা টার্মেন সরু কালো ও প্রান্তরোয়া (cilia) কালো বর্নের। পিছনের ডানায় ২নং শিরার প্রান্তে সামান্য চওড়া একটি ছোট কালো লেজ বর্তমান। ১ নং শিরার শেষপ্রান্তে সামান্য কৌনিক একটি কালো অভিক্ষিপ্ত অংশ চোখে পড়ে। পিছনের ডানার ১ক,১খ এবং ১গ শিরামধ্য অংশের নিম্নভাগ ফ্যাকাশে।[৬]

ডানার নিম্নতল এ সামনের ডানার গোড়ার অর্ধ (basal half) ৪নং শিরার (median vein) উপর পর্যন্ত কালচে বেগুনি এবং বাদামীর মিশ্রন এবং ৪নং শিরার উপরিস্থ বর্হিভাগ খানিক ফ্যাকাশে। ডানার নিম্নভাগ কমলা-হলদে বাদামী (ochreous brown) মেশানো। ডানার গোড়ার দিকে সেল (cell) এর অভ্যন্তরে একটি বড় গোলাকৃতি ছোপ সেল এর মধ্যভাগে অধিকতর বড় আর একটি দাগ বিদ্যমান। বাইরের বার (bar) অথবা দাগটির উপরে কোস্টাতে ছোট একটি ফ্যাকাশে বলয়যুক্ত ছোপ এবং উক্ত দাগ টির ভিতরের দিকে দাগের নিচে একটি তীর্যক কৌনিক ছোপ লক্ষ্য করা যায়। মধ্যবর্তী দাগটির নিচে একটি গোলাকৃতি ছপ বর্তমান। ২নং শিরার পিছনের দিকে কম-বেশী চৌকো এবং বড় সংযুক্ত ছোপের সারি দ্বারা গঠিত একটি ডিসকাল বন্ধনী দেখা যায় এবং উক্ত ছোপগুলি আকারে ক্রমশ বড় হয়েছে। ফ্যাকাশে বাদামী এবং কিছুটা অস্পষ্ট ছোপের একটি সাব-টার্মিনাল সারি লক্ষ্য করা যায়।[৬]

পিছনের ডানা সমভাবে কমলা-হলুদ এবং বাদামীর মিশ্রন এবং তাতে বেগুনির আভাযুক্ত। সমস্ত কালচে বাদামী দাগ ছোপগুলি ফ্যাকাশে সাদা কিনারাযুক্ত। ডানার গোড়ার কাছে ৩টি ছোপের একটি সরলরৈখিক সারি বর্তমান যার পরই ২টি ছোপ দেখা যায়। অ্যাবডোমিনাল মার্জিন এর দিকে ৩টি ছোট ছোপের একটি বাঁকানো সারি এবং কোস্টার মধ্যভাগের নীচে দুটি সংলগ্ন বড় চৌকো ছোপ লক্ষ্য করা যায়। ডানার বাকী অংশ জুড়ে অসংলগ্ন ছোপের ৫টি বন্ধনী অবস্থিত। সাবটার্মিনাল বন্ধনীর ছোপগুলির মধ্যে নিচের দিকের ৩টি ছোপ কালো এবং ধাতব-সবজে আঁঁশে ছাওয়া।[৬]

স্ত্রী[সম্পাদনা]

ডানার উপরিতল পুরুষ অপেক্ষা অধিকতর ফ্যাকাশে এবং নীল অপেক্ষা বেগুনি রঙের প্রভাব বেশী। সামনের ডানায় কোস্টাল সীমা এবং টার্মেন চওড়াভাবে কালচে বাদামী, ডানার নিম্নতল পুরুষ প্রকারেরই অনুরূপ তবে অধিকতর ফ্যাকাশে।[৬][৭]

আচরণ[সম্পাদনা]

এরা ক্ষিপ্র এবং এলোমেলো ভাবে ওড়ে, তবে একটানা বেশীক্ষণ উড়তে পারে না। কিছুক্ষণ ওড়াওড়ির পরেই আবার পাতার উপর বসে পড়ে। ঝোপঝাড়ের মধ্যে দিয়েও উড়ে বেড়াতেও দেখা যায়। ফুলের প্রতি এদের আসক্তি প্রায় নেই। মাঝে মাঝে ভিজে মাটি থেকে রস আহরণ করতে দেখা যায়। ডানা খুলে বসে এরা রৌদ্র পোহায়।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ৭২। 
  2. "Arhopala Boisduval, 1832" at Markku Savela's Lepidoptera and Some Other Life Forms
  3. দাশগুপ্ত, যুধাজিৎ (২০০৬)। পশ্চিমবঙ্গের প্রজাপ্রতি (১ম সংস্করণ সংস্করণ)। কলকাতা: আনন্দ। পৃষ্ঠা 145। আইএসবিএন 81-7756-558-3 
  4. "Arhopala centaurus Fabricius, 1775 – Centaur Oakblue"। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৭ 
  5. বসু রায়, অর্জন; বৈদ্য, সারিকা; রায়, লিপিকা। সুন্দরবনের কিছু পরিচিত প্রজাপতি (মার্চ ২০১৪ সংস্করণ)। সুন্দরবন জীবপরিমণ্ডল,Department of Forest Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ৩৬। 
  6. Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 322। আইএসবিএন 978-8170192329 
  7. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা 212। আইএসবিএন 978 019569620 2