আলাপ:বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট

সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য, যিনি সবকিছুর খালেক, মালেক এবং নিয়ন্ত্রক। তিনি একক, অদ্বিতীয়, অমুখাপেক্ষী। তারই ইবাদত করার জন্য আমরা আদিষ্ট। অসংখ্য সালাত ও সালামের হাদিয়া পেশ করছি মহানবী সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নূরানী পাক দরবারে, যিনি সমস্ত বিশ্বের জন্য রহমত হয়ে দুনিয়ার তাশরীফ এনেছেন। স্মরণ করছি আম্বিয়া-ই কেরাম আলায়হিমুস সালাম, সাহাবা-ই কেরাম, আহলে বায়তে রসূল, তাবে’ঈন, তাব’ই তাবে’ঈন, শোহাদা-ই কেরাম, আউলিয়া-ই ‘ইযাম, ওলামা-ই কেরাম, পীর-মাশাইখ এবং ইসলামের ওই বীর-মুজাহিদদের, যাঁদের সংগ্রামী ত্যাগের বিনিময়ে ইসলামের বিস্তৃতি ঘটেছে বিশ্বব্যাপী।

মহান আল্লাহ মানবজাতিকে আশরাফুল মাখলুক্বাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে সুপথে পরিচালনার জন্য প্রতিটি যুগে পাঠিয়েছেন অসাধারণ নির্ভুল জ্ঞান সম্পন্ন নিষ্কলুষ নবী ও রসূলগণ আলায়হিমুস সালামকে। অবতীর্ণ করেছেন মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের সর্ব বিষয়ের পূর্ণ বিবরণ সম্বলিত আসমানী কিতাব ও ঐশী বিধানাবালী। ঘোষণা করেছেন- ‘তাঁদের প্রতি প্রকৃত ভালবাসা ও বিধানাবলী অনুসরণের মধ্যেই নিহত রয়েছে উভয় জগতের সাফল্য ও চিরন্তন শান্তি। পক্ষান্তরে, তাঁদের প্রতি অবাধ্যতা ও অবজ্ঞাই ইহকাল ও পরকালে চরম লাঞ্ছনা ও ভয়াবহ শাস্তি ভোগের কারণ।

নবীগণের আগমনের ধারা সমাপ্ত হয়েছে শেষ নবী হুযুর মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা’আল আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমনের মাধ্যমে। আর তাঁরই উপর অবতীর্ণ হয়েছে পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান- পবিত্র ক্বোরআন মজীদ। আমাদের নবীর পর যেমন আর কোন নবী ও রসূল প্রেরিত হবে না, তেমনি অন্য কোন আসামানী কিতাব অবতীর্ণ হবে না। ক্বিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। আমাদের নবী করীমের পবিত্র জীবনে রয়েছে সুন্দরতম আদর্শ। এ আদর্শই সবার জন্য একমাত্র অনুকরণীয়।

ইসলাম শান্তির ধর্ম ও সাম্যের প্রতীক, প্রকৃত অর্থে স্রষ্টার নিকট সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের দলীল। আল্লাহর পাক কালাম বিশ্ববাসীর সকল সমস্যার চিরস্থায়ী, নিশ্চিত ও নির্ভুল সমাধানের মূল উৎস। সুন্নাত-ই রসূল, ইজমা, ও ক্বিয়াস হচ্ছে ইসলামের আরো তিনটি অনুকরণীয় দলীল। আল্লাহর মনোনীত পরিপূর্ণ ধর্ম হল ইসলাম। ইসলাম জগতের বুকে মানবতা ও ভ্রাতৃত্বের উদার ভাবধারাকে করেছে প্রতিষ্ঠিত। তা সত্ত্বেও ইসলামী দুনিয়া পারস্পরিক বিভক্তি এড়িয়ে যেতে পারে নি; কারণ, মুসলমানদের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটেছে বিভিন্ন ভ্রান্ত মতবাদের। সেগুলো সর্বদা ইসলামী ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে। এর অবসান ঘটিয়ে ইসলামের প্রকৃত আদর্শকে আঁকড়ে ধরলেই এ বিভক্তির পরিসমাপ্তি ঘটতে পারে। তাদের এ অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বযুগে আইম্মা-ই মুজতাহেদীন, আউলিয়া-ই ‘ইযাম ও প্রকৃত ওলামা-ই কেরাম তাঁদের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও দক্ষ নেতৃত্ব, বাগ্মিতা ও ক্ষুরধার লেখনী ইত্যাদির মাধ্যমে রূখে দাঁড়িয়েছেন। উক্ত ভ্রান্ত মতবাদীরা এদেশেও ইসলামের নামে বিভিন্ন সরলপ্রাণ জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। যার ফলে মুসলমানরা আজ ঈমান এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক স্বকীয়তা রক্ষায় ইতিহাসের যে কোন সময়ের চেয়ে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীর প্রথম সংবিধান হিসেবে তাঁর রচিত ‘মদীনা সনদ’র মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে পারস্পরিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মোচন করেছিলেন এবং বিশ্বের সর্বাধিক কল্যাণরাষ্ট্র কায়েম করেছিলেন। সেই মদীনা সনদকে উপেক্ষা করে মানুষের সীমাবদ্ধ চিন্তা-চেতনা প্রসূত ধ্যান-ধারণা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পৃথিবীতে মানুষে মানুষে ব্যাপক বৈরীতা ও সংঘাতের জন্ম নিয়েছে। আর যারা ইসলামের প্রকৃত আদর্শকে বাদ দিয়ে নিছক ইসলামের নাম সর্বস্ব রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে এগিয়ে গেছে তারাও পরবর্তীতে ইসলামী রাষ্ট্রের অনিবার্য সুফল প্রদর্শন করতে পারেনি।

খোদাপ্রাপ্তিই প্রত্যেক মুসলমানের চূড়ান্ত লক্ষ্য। আর এ লক্ষ্য অর্জনের পূর্বশর্ত হচ্ছে রসূল সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেম। আর এ রসূল-প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মানব ও সমাজের কল্যাণ সাধন করা। আজকে মুসলিম জাতি বিভিন্নভাবে বিপর্যস্ত। ইহুদী, খ্রিস্টান ও ব্রাহ্মণ্যবাদী অপশক্তি মুসলিম জাতিকে তাদের ক্রীড়ানকে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। মহান আল্লাহ ও তার প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি প্রকৃত ভালবাসা, আক্বীদার বিশুদ্ধতা ও আদর্শিক দৃঢ়তা ক্রমশ হারিয়ে ফেলায় মুসলিম মিল্লাত তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে বারংবার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। আল্লাহ ও রসূলের প্রতি যে বিশ্বাস মুসলিম জাতিকে বীরের জাতিতে পরিণত করেছিল তা পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে মুসলিম জাতি তার হৃত গৌরব ফিরে পাবে- এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়- ইসলামের একমাত্র সঠিক রূপরেখা হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতাদর্শ। এ দেশে শান্তিপূর্ণ ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের জন্য এ আদর্শ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এ লক্ষেই ‘বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট’র এ রাজনৈতিক অভিযাত্রা ।

স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত এ দেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব-মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যূদয় ঘটে। স্বাধীনতার চার দশকেরও অধিক সময় অতিবাহিত হলেও ভাগ্য বিড়ম্বিত জাতির সার্বিক মুক্তি আসেনি। এ দেশের রাজনীতি চলেছে ধ্বংস ও দুর্বৃত্তায়নের পথে, অবিশ্বাস, মাস্তানী ও সন্ত্রাসের সাথে, ক্ষমতা দীর্ঘদিন যাবৎ দূর্নীতির সহযাত্রী ছিল, ছিল স্বজন-প্রীতি ও দলগত প্রতিযোগিতার হাতিয়ার। আন্দোলনের নামে রাজপথ ছিল প্রতিহিংসার নীরব সাক্ষী। গত প্রায় ৪৫ বছরে ক্ষমতা কখনো জনগণের পূর্ণ পক্ষ হয়ে কথা বলেনি। এদেশের গণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষেই সম্ভবপর হয়নি। এ ধরনের রাজনীতি যেন জনগণের সাথে প্রতারণার এক নির্মম ফাঁদ। যে শান্তি, মুক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা, এ সমস্ত অবস্থার কারণে ওই লক্ষ্য আজও অর্জিত হয়নি। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, কোরআন-সুন্নাহর আলোকে এদেশে সুন্নী মতাদর্শ ভিত্তিক ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই ‘বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট’র একমাত্র লক্ষ্য। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, সাহাব-ই কেরাম, আহলে বায়তে রসূল, শোহাদা-ই কেরাম, আইম্মা-ই মুজতাহেদীন, পীর-মাশাইখ, আল্লাহর ওলীগণ ও সত্যিকার ওলামা-ই কেরামের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হিসেবে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট’র কর্মীদের এই মিশন। আল্লাহ ও তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সন্তুষ্টি অর্জনের মধ্য দিয়ে এ দেশের সর্বস্তরে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের জন্য ২১ ডিসেম্বর, ১৯৯০ প্রতিষ্ঠা লাভ করে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট’। Faridul Islam (আলাপ) ১৯:৪২, ২ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

তথ্য সূত্রঃ www.bangladeshislamifront.com Faridul Islam (আলাপ) ১৯:৪৫, ২ মার্চ ২০১৭ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]