সম্বাদ কৌমুদী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সংবাদ কৌমুদী
ধরনসাপ্তাহিক সংবাদপত্র
মালিকরাজা রামমোহন রায়
প্রকাশকভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোবিন্দ চন্দ্র কোঙ্গার
সম্পাদকভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, হরিহর দত্ত, গোবিন্দ চন্দ্র কোঙ্গার, আনন্দ গোপাল মুখোপাধ্যায়
প্রতিষ্ঠাকাল১৮১৯
ভাষাবাংলা
প্রকাশনা স্থগিত১৮৩৬
সদর দপ্তরকলকাতা, বঙ্গ

সংবাদ কৌমুদী ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা। পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৮২১ সালের ৪ ডিসেম্বর।[১] সংবাদ কৌমুদীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন রাজা রামমোহন রায় এবং প্রকাশক ছিলেন তারাচাদ দত্ত। ১৮৩৪ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়েছিল।

মুলত সামাজিক ও হিন্দুধর্মীয় রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে উদার মনোভাব নিয়ে পত্রিকাটি লেখনী ধারণ করেছিল। তদানীন্তন হিন্দু সমাজের কুসংস্কারগুলো দূর করার জন্য সংস্কারের পক্ষে জনমত গড়ে তোলায় ‘সংবাদ কৌমুদী’ বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। সম্পাদক ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তীতে রাজা রামমোহনের সাথে মত-পার্থক্যে জড়িয়ে পত্রিকাটির সম্পাদনা থেকে চলে যান এবং পরবর্তীতে ১৮২২ সালের ৫ই মে সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও ব্রিটিশ সরকার সেসময়কার সংবাদপত্রগুলোর উপর সেন্সরশিফ আরোপ করার পর রামমোহন রায় পত্রিকাটি বন্ধ করে দেন।

কলকাতার দুর্গাপুজোর ইতিহাস নিয়ে সংবাদ কৌমুদীতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের অংশবিশেষ:

…রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় প্রথমত এই উৎসবে বড় জাঁকজমক করেন এবং তাঁহার ঐ ব্যাপার দেখিয়া ক্রমে ক্রমে ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের আমলে যাঁহারা ধনশালী হইলেন তাঁহারা…এই সকল ব্যাপারে অধিক টাকা ব্যয় করিতেন।”[২]

সতীদাহের বিরুদ্ধে অভিযান[সম্পাদনা]

সংবাদ কৌমুদি সতীদাহের বিরুদ্ধে নিয়মিত সম্পাদকীয় লিখত, এটিকে বর্বর এবং অ-হিন্দু বলে নিন্দা করে।[৩] এটি ছিল রামমোহন রায়ের সতীদাহের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রধান বাহন।[৪] 14 ফেব্রুয়ারি, 1823-এর কলকাতা জার্নালে সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, "যে কাগজটি এতটাই বিপদে পরিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল এবং বারুদের ব্যারেলে নিক্ষিপ্ত স্ফুলিঙ্গের মতো সারা ভারতে বিস্ফোরিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেই কাগজটি দীর্ঘদিন ধরে মাটিতে পড়ে গেছে। সমর্থন; প্রধানত আমরা বুঝতে পারি কারণ এটি তিনটি প্রথার বিরোধিতা করে এবং বিশেষ করে হিন্দু বিধবাদের পুড়িয়ে মারা ইত্যাদির দ্বারা স্থানীয় সম্প্রদায়কে বিরক্ত করেছিল।"[৫] গভর্নর-জেনারেল বেন্টিঙ্ক, মূলত (যদিও একচেটিয়াভাবে নয়) রাম মোহন রায় দ্বারা প্ররোচিত, 1829 সালে সতীদাহকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ক্রমবর্ধমান জনরোষের প্রতিক্রিয়া জানান।

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ড. সৌমিত্র শেখর, আইএসবিএন:৯৮৪-৩২-৩২১৭-৮, পৃষ্ঠা:৫১৫
  2. http://www.banglabazar.co.in/puja/puja_history?page=5[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. Arvind Krishna Mehrotra। A history of Indian literature in English। C. Hurst & Co. Publishers। পৃষ্ঠা 35। আইএসবিএন 1-85065-680-0 
  4. Kitchlu, T. N.। Widows in India। APH Publishing। পৃষ্ঠা 2। আইএসবিএন 81-7024-529-X 
  5. Om Prakash। Encyclopaedic History of Indian Freedom Movement। Anmol Publications। পৃষ্ঠা 52। আইএসবিএন 81-261-0938-6 [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]