সোনো আর্সেনিক ফিল্টার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পানি থেকে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক দূর করার কাজে সোনো আর্সেনিক ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। সোনো ফিল্টার অত্যন্ত সাফল্যের সাথে পানিতে থাকা আর্সেনিকের মাত্রা কমিয়ে মানবদেহের জন্য গ্রহণযোগ্য মাত্রায় নামিয়ে আনতে পারে। ২০০৬ সালে অধ্যাপক আবুল হুসসাম সোনো ফিল্টার আবিষ্কার করেন। অধ্যাপক হুসসাম একজন বাংলাদেশী ও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াস্থ জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিদ্যার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।[১]

অধ্যাপক হুসসাম তাঁর নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশের বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তারঞ্চলে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে এই ফিল্টারটি তৈরি করেন। এ লক্ষ্যে তিনি এমন একটি সস্তা ও সহজলভ্য সমাধান খুঁজে বের করেন যা প্রচলিত আর্সেনিক মুক্ত করার ব্যয়বহুল ও দুষ্প্রাপ্য পদ্ধতির ধারণাকে আমূল পাল্টে দেয়। সোনো ফিল্টার মূলত ভূগর্ভস্থ মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকযুক্ত পানিকে আর্সেনিক মুক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হলেও এই ফিলটার পানি থেকে মাত্রাতিরিক্ত লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ ও বিভিন্ন ধরনের ট্রানজিশন মেটাল আয়নও দূর করে।

আবিষ্কার[সম্পাদনা]

অধ্যাপক আবুল হুসসাম পানিকে আর্সেনিক মুক্ত করার কাজে বেশ কয়েক বছর গবেষণার পর ও প্রায় ১০০ এরও বেশি প্রোটোটাইপ তৈরি করার পর সোনো ফিল্টার তৈরি করতে সক্ষম হন।

গঠন প্রণালী[সম্পাদনা]

সোনো ফিল্টারের প্রধান অংশ হল পানি থেকে আর্সেনিক পৃথকীকরণে সক্ষম একটি আয়রন ছাঁকনি। এই ছাঁকনিটি অনেকটা চুম্বকের মত কাজ করে পানির আর্সেনিকের সাথে ছাঁকনিতে থাকা লোহার সাথে রাসায়নিক বন্ড গঠন করে। এই ছাঁকনিটির ভর প্রায় ২০ পাউন্ড। এছাড়াও সোনো ফিল্টারে কাঠকয়লা, বালি ও ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়।

স্বীকৃতি ও পুরস্কার[সম্পাদনা]

অধ্যাপক হুসসাম তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ২০০৭ সালে গ্রেইঙ্গার চ্যালেঞ্জ পুরস্কার পান।[২] এই পুরস্কারের আর্থিক মুল্যমান প্রায় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। হুসসাম তাঁর পুরস্কারের প্রায় ৭০ শতাংশ দরিদ্র ও অভাবী জনগোষ্ঠীর মাঝে সোনো বিতরণের কাজে ব্যয় করার পরিকল্পনা করেন। সোনো ফিল্টার আবিষ্কারের জন্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং পুরস্কার ছাড়াও আবুল হুসসাম আরও যেসব পুরস্কার লাভ করেন সেগুলো হল[৩]

  • ২০০৭ সালে বাংলাদেশ আমেরিকান সোসাইটি ফর হিউম্যানিটি এ্যাওয়ার্ড।
  • টাইম ম্যাগাজিনের, গ্লোবাল হিরোস অফ দি এনভায়রনমেন্ট ২০০৭ পুরস্কার।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  2. http://www8.nationalacademies.org/onpinews/newsitem.aspx?RecordID=02012007
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫